শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ১৪ জানুয়ারী, ২০২২, ০৫:৫৮ বিকাল
আপডেট : ১৪ জানুয়ারী, ২০২২, ০৫:৫৮ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] করোনা নামে কোনো ভাইরাস রয়েছে মানতে নারাজ মফস্বলের মানুষগুলো

সোহেল মিয়া : [২] বিশেষ করে শ্রমজীবি খেটে-খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর মধ্যে এমনই ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে তাদের। এদের একটাই কথা- কিসের করোনা? করোনা বলতে কোন রোগ-বালাই নেই। এমন ভ্রান্ত ও ভুল ধারণার কারণেই মফস্বলের মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।

[৩] আর গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই করোনার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোয় সফল হচ্ছে না সরকারের নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধিপালনের নিষেধাঙ্গা। গ্রামের কেউই মানছেন না সামাজিক দূরত্ব। এমনকি মাস্ক পড়া তো তারা ভুলেই গেছে। করোনার শুরুর দিকে গ্রামের মানুষের মধ্যে কিছুটা ভয়-ভীতি কাজ করলেও এখন কোন ভয়-ভীতিই নেই তাদের মধ্যে।ওমিক্রনও যেন তাদের মাঝে বিন্দুমাত্র ভয়ের সঞ্চার ঘটায়নি।

[৪] রাজবাড়ীর বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রায় শতাধিক মানুষের সাথে করোনা ও স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে কথা বললে বিচিত্র ধরণের মতামত প্রকাশ করেন এ সকল মানুষগুলো। তারা মনে করছেন- সব কিছুই স্বাভাবিক রয়েছে। এটা সরকারের একটা বাহানা। তবে এদেরকে যখন বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে বোঝানো হয় তখন তারা বুজতে পারে যে আসলেই করোনা একটি ভয়াবহ মরণঘাতী রোগ। সবারই মাস্ক পড়া উচিত এবং সরকারের নির্দেশনা মেনে চলা প্রয়োজন।

[৫] বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে সরকারের ১১ দফা নির্দেশনার প্রথম নির্দেশনা ছিল দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা ও হোটেল, রেস্তোরাসহ সকল জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখিন হতে হবে উল্লেখ্য থাকলেও মফস্বল পর্যায়ে মাস্ক পরিধানের বিষয়ে একদমই উদাসীন জনগণ।

[৬] বিভিন্ন গ্রাম ও বাজারে ঢুকে দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষেরই মাস্ক নেই মুখে। কেউ কেউ পড়লে তাও আবার থুতনিতে ঝুলতে দেখা যায়। কেউবা পরিবারের সদস্যদের চাপেও মাস্ক পড়ে বাজারে এসেছেন। ক্রেতা-বিক্রেতা কারই মাঝে সামাজিক দূরত্বের বালায় নেই।

[৭] সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বারবার। কিন্তু নিয়ম মানছেন না বেশির ভাগ মানুষ। অসচেতনতার কারণে নারী, পুরুষসহ শিশুদের মধ্যেও দিন দিন সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

[৮] তবে অনেক সচেতন মানুষই বলেন, আমাদের নিজেদের সুরক্ষা যদি আমরা না বুঝি সরকার চেষ্টা চালিয়ে কি করবে? আমাদের সাধারণ মানুষের সচেতন হওয়া খুবই দরকার। এক্ষেত্রে প্রশাসনকে কঠোর ভূমিকায় থাকতে হবে। আর সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

[৯] মাস্ক না পরার বিষয়ে পঞ্চাশ উর্ধ্ব আলী হোসেনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ আমাগো করোনা হইবো না। আমরা মাঠে কাজ কইরা খাই। এই শরীরে করোনা ঢুকবো ক্যামনে?

[১০] রহমত মোল্লা নামের এক ব্যক্তি বলেন, মাস্ক ছিলো কিন্তু বাজারে আসার সময় ছিঁড়ে গেছে। বাজারে শেষে বাড়ি যাওয়ার সময় কিনবো। বাজার করার সময় করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখেন করোনা তো হতেই পারে। আমি যেসব খাওয়া দাওয়া করি, তাতে আমার করোনা হবে না।’

[১১] মাস্কবিহীন ঘুরে বেড়ানো এক পথচারীকে বিনা মাস্কে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরতে অস্বস্তি লাগে।’ করোনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার আশপাশে কারো করোনা হয়নি এখন পর্যন্ত। আর করোনা ধরলে, মাস্ক পরলেও ধরবে।’

[১২] রাজবাড়ীর স্বাস্থ্যবিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বে করোনা যেভাবেই অস্থিতিশীলতা প্রয়োগ করছে তাতে করে বর্তমানে বাংলাদেশে এর উর্দ্ধগতি বেশি। আগামী ১ মাসের মাঝে করোনার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশ কাঁপাতে পারে। তাই এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষের মাস্ক পরিধানের কোন বিকল্প নেই। আর দেশের সরকারের একার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করে যেতে হবে। নইতো বাংলাদেশের মানুষের এক ভয়ংকর রুপ দেখতে হবে।

[১৩] এদিকে স্থানীয় প্রশাসন জানান, করোনার বিভিন্ন ধরণ রুখতে মাস্ক ব্যবহারের বিকল্প নেই। বহিঃবিশ্বে করোনার বিভিন্ন ধরণ যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়াচ্ছে তাতে আমাদের উদ্বিগ্নতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা চাই- সাধারণ মানুষ সরকারি নির্দেশনা মেনে সহযোগিতা করুক। তবে সরকারি আইন অমান্য করে যারা মাস্ক পড়বেনা তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় আনবো। মাঠ পর্যায়ে কঠোর থাকবে প্রশাসন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়