ডঃ রুমি আহমেদ খান: একটা জাতির মেধাগত উৎকর্ষের মানদন্ড হচ্ছে এই জাতির ইনোভেশন, বৈজ্ঞানিক কর্মকান্ড, টেকনোলজিক্যাল আবিষ্কারের ক্ষমতা - একটা সভ্যতার মেধার সনদপত্র হচ্ছে বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে এই সভ্যতার অবদানের টালিখাতা!
এই জাতি - এই সভ্যতা প্রতিবছর বিজ্ঞান ওয়ারী কি পরিমান সাইন্টিফিক পেপার এর জন্ম দিচ্ছে এটাই এই জাতির উৎকর্ষের সবচেয়ে বড় প্রমাণপত্র!
বাংলাদেশ কেমন করছে এই বিষয়ে? আমাদের বিজ্ঞানীরা কেমন করছেন? দেশের বিজ্ঞনীরা প্রতিবছর কি পরিমান সায়েন্টিফিক পেপার লিখছেন? সবার শীর্ষে আছেন কোন বিজ্ঞানী? কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউট থেকে
প্রতিবছর সবচেয়ে বেশি সায়েবটিফিক পেপার প্রকাশিত হচ্ছে?
দেশে এমন কি কোন ডাটা আছে?
হ্যা আছে! গত বারো বছর ধরে সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ নামে বাংলাদেশ অরিজিন বিজ্ঞানীদের ভলান্টিয়ার একটি সংগঠন এই কাজটি করে আসছে নিরবিচ্ছিন ভাবে!
সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ আরো অনেক কাজ করে - যেমন এটা একটা অনলাইন বিজ্ঞান ম্যাগাজিন - এখানে নুতন বিজ্ঞানীদের জন্য গ্র্যান্ট লিখার ট্রেইনিং, গ্র্যান্টের সুযোগ, বিদেশে পোষ্ট ডক সুযোগ সহ আরো অনেক রিসোর্স আছে!
তবে সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ এর সবচেয়ে বড় বাৎসরিক কাজ হচ্ছে এই লিস্ট প্রকাশনা।
সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ বরাবরের মতো এবার ও প্রকাশ করছে দেশের গতবছরের রিসার্চ রিপোর্ট কার্ড!
আমাদের ইতিহাসে এই প্রথম বাংলাদেশের বিজ্ঞনীদের প্রকাশিত পাবলিকেশনের সংখ্যা দশহাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে! গতবছর দেশের বিজ্ঞনীদের প্রকাশনার সংখ্যা ১১৪৭৭!
এই বছর সবচেয়ে বেশি ৪২ টি পেপার নিয়ে দেশের বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রকাশনা তালিকার শীর্ষে আছেন বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞনী তালহা বিন ইমরান!
ইনস্টিটিউশনের মধ্যে পাবলিকেশন তালিকায় শীর্ষ তিনে আছে যথাক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এন্ড বুয়েট! তবে এই অবস্থান আনফেয়ার যদি আমরা বিবেচনা করি বিশ্ববিদ্যালয় এর ফ্যাকাল্টি সংখ্যা ও আরো রিসোর্স এর ফারাক বিবেচনা করলে! এই বিচারে একটা বেশি এপ্রোপ্রিয়েট রেঙ্কিং হয় যদি আমরা ফ্যাকাল্টি প্রতি পাবলিকেশন হিসাব করি! ফ্যাকাল্টি প্রতি পাবলিকেশন তালিকায় দেশে প্রথম পাঁচটি প্রতিষ্ঠান হলো মাওলানা ভাসানী ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, যশোর ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, বুয়েট, এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়!
দেশের মহিলা বিজ্ঞানীদের মধ্যে শীর্ষে আছেন আইসিডিডিআরবির ফেরদৌসী কাদরী! দেশের শীর্ষ নয় মহিলা রিসার্চার এর মধ্যে ছয়জনই ই আইসিডিআরবির!
এবছরে এই তালিকা প্রকাশনা একটা বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হবে! দেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের রিসার্চ নিয়ে সাবজেক্ট ওয়ারী একটা কনফারেন্স সিরিজ আর আয়োজন করছে সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ। এই কনফারেন্স সিরিজ এর গ্র্যান্ড ওপেনিং কনফারেন্সটা অনুষ্ঠিত হবে আগামী শনিবার জানুয়ারি ১৫ তারিখে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। 50 Years of Research in Bangladesh: Insights from SCOPUS Database শীর্ষক এই ভার্চুয়াল কনফারেন্স এ কীনোট স্পিকার হিসেবে আসবেন ঢাকার বাইরের একটা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিজিক্সের দুজন প্রফেসর - অধ্যাপক রায়হানা শামস ইসলাম এবং অধ্যাপক সালেহ হাসান নকিব! প্রধান অতিথি থাকবেন ডঃ শমসের আলী!
অনুষ্ঠানটি সায়েন্টিফ বাংলাদেশের ফেইসবুক পেইজে লাইভ সম্প্রচারিত হবে!
SCOPUS ডাটাবেজ এর উপর গবেষণা করে - জটিল পদ্ধতি ও এলগোরিদম ইউজ করে প্রতিবছর এই তালিকা প্রণয়নের অত্যন্ত জটিল কাজটা করেন সায়েন্টিফিক বাংলাদেশের ফাউন্ডিঙ এডিটর ও সৌদি আরবের কাসিম ইউনিভার্সিটির মাইক্রোবায়োলোজির অধ্যাপক - ডঃ মুনির উদ্দিন আহমেদ!
- ডঃ রুমি আহমেদ খান
হেলথ সায়েন্স এডিটর
সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ
আপনার মতামত লিখুন :