আহসান হাবিব: এখনো ক্ষুধা এই পৃথিবীর প্রাত্যহিক ঘটনা। অথচ কতো খাদ্য ফেলে দেওয়া হয়। কারা ফেলে দেয় খাদ্য, কেন ফেলে দেয়? পুঁজিপতিরা এই কাজটি করে এবং এটি করে পণ্যের মূল্য। পুঁজিবাদের তীর্থস্থান হচ্ছে বাজার এবং লক্ষ্য মুনাফা। এই বাজারে আসে অজস্র বিক্রেতা যারা একে অপরকে চেনে না, জানে না। এক অদৃশ্য সম্পর্কে তারা সম্পর্কিত। সেই সম্পর্কের রূপ হচ্ছে শত্রুতামূলক, কেননা তারা একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। কেউ জানে না কার পণ্য কতোটা বিক্রি হবে।
দেখা গেলো সেই পণ্য বাজারে অঢেল, কিন্তু চাহিদা কম। ফলে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে হলো এবং লোকসান গুনতে হলো। কিন্তু এরপরও দেখা গেলো বড় পুঁজিপতিদের অনেক পণ্য গুদামে রয়ে গেলো। তখন তারা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার জন্য অনেক পণ্য নষ্ট করে ফেললো। এরই মধ্যে যারা ছোট এবং মাঝারি পুঁজিপতি পণ্য বিক্রেতা, তারা এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো যে কেউ কেউ সর্বস্বান্ত হয়ে পড়লো। তখন বাজার বড় পুঁজিপতিদের দখলে চলে এলো এবং এই সুযোগে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে- পণ্য নষ্ট করে- পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিলো। যারা হতদরিদ্র তারা উচ্চদামে পণ্য কিনতে না পেরে ক্ষুধার কবলে পতিত হলো। যখন তারা ক্ষুধায় কাতরায়, দেখা যাবে তখন পুঁজিপতিদের নষ্ট করা খাবার পচছে, কাক এবং জীবাণুরা মহাসমারোহে ভক্ষণ করে চলেছে। মূল্য হচ্ছে এসবের কালপ্রিট এবং মুনাফা তার ক্রীড়নক। লেখক : ঔপন্যাসিক
আপনার মতামত লিখুন :