শিরোনাম
◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক

প্রকাশিত : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ০৩:৫৯ রাত
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ০৩:৫৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের ৬০-৭০ শতাংশ শিক্ষক তাদের পাবলিকেশন লিস্ট দেননি

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: অধ্যাপক হারুন অর রশিদ যখন ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ছিলেন তখন সকল শিক্ষকদের একাডেমিক সিভি এবং বিশেষ করে গবেষণাপত্রের পাবলিকেশন লিস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আপলোড করার জন্য জোর তাগাদা দিয়েছিলেন। এরপরেও কয়েকবার তাগাদা দিয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছিলো। এখন ২০২১ সাল পেরিয়ে আমরা ২০২২ সালে পৌঁছেছি। এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের ৬০-৭০ শতাংশ শিক্ষক তাদের পাবলিকেশন লিস্ট দেননি। কেন দেন না? এতো তাগাদা সত্ত্বেও কেন দেন না? দিলে যে থলের বিড়াল বের হয়ে যাবে। না দিলে মানুষের মধ্যে ধুম্রজাল তৈরি করে চলা যায়। আর দেবেইবা কেন? নেতাকে উদাহরণ দিয়ে নেতৃত্ব দিতে হয়, কিন্তু আমাদের নেতারাই তো উদাহরণ দিয়ে নেতৃত্ব দেন না বা উদাহরণীয় হন না।

ডিসেম্বর মাস আসলেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের নির্বাচনী হওয়া বয়। প্রতিবারের মতো এইবারও হওয়া লেগেছে। আমি ভোটারদের আহ্বান জানাই যে যারা নির্বাচনে দাঁড়াবে তারা যদি তাদের পাবলিকেশন লিস্ট ওয়েবসাইটে না দেন তাদের যেন কেউ ভোট না দেয়। Is it too much to ask?

সহকারী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক সবারই ভালো প্রকাশনা আছে কারণ প্রকাশনা ছাড়াতো প্রমোশন হয় না। যার যা কিছু আছে তা দিন। অনেকেরই অনেক ভালো ভালো পাবলিকেশন আছে। আপনারা সবাই দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা বাড়বে। কারণ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ তো এখন ভার্চুয়াললি ভিজিট করে। কারও প্রোফাইলে পাবলিকেশন লিস্টে ক্লিক করে শূন্য পাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্ষুণ্ন হয়।

[২] আলেক্সান্দ্রা এলবেকেয়ান হলেন প্রকাশনা জগতের দস্যুরানী ফুলনদেবী। তিনি ঝপর-ঐঁন এর জননী। বিশে^র সব বড় বড় প্রকাশকের অসংখ্য মামলাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে এলসিভিএর, উইলি, আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি ভারতে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে সেই মামলায় এলবেকেয়ান লড়ছেন। গবেষকরা গবেষণা করবে, সেই গবেষণার ফলাফল নিয়ে গবেষকরাই আর্টিকেল লিখবেন, সেই আর্টিকেল আবার গবেষকরাই রিভিউ করে সিদ্ধান্ত দেবেন ওটা প্রকাশযোগ্য কিনা, তারপর প্রকাশকরা কেবল ছাপিয়ে দিয়েই সম্পূর্ণ কাজের কপিরাইট নিয়ে নেন। তখন দেখা যায় গবেষকরাই সেই কাজের এক্সেস পায় না। এইটা অনেকটা এমন কৃষকরা জমির মালিক, হাল দিয়ে জমি চাষের জন্য তৈরি করবে, জমি চাষ করবে, নিড়ানি দেবে, সেচ দেবে, জমির ফসল ঘরে এনে বিক্রয়ের জন্য তৈরি করবে। কিন্তু সেই ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবে না। শুধু ন্যায্য মূল্য না অতিরিক্ত মুনাফাটা কে পাবে?

ফসল ব্যবসায়ী বা মধ্যস্বত্বভোগীরা। একই কথা বলা চলে শিক্ষার ক্ষেত্রে। শিক্ষক গবেষকরা জ্ঞান তৈরি করবেন, শিক্ষার্থীদের পড়াবেন কিন্তু টাকা বানাবে কে? টাকা বিনিয়োগ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি যে বানাবে। ঠিক একই কথা বলা চলে কল কারখানার ক্ষেত্রে। আমাদের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির শ্রমিকদের জীবন দেখুন তাহলেই বুঝতে পারবেন। শিক্ষক গবেষকরাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের treated হয়।

আলেক্সান্দ্রা এলবাকিয়ানকে নিয়ে সম্প্রতি বিশ^খ্যাত নেচার পত্রিকায় ভারতীয় কোর্টে মামলা নিয়ে একটি আর্টিকেল ছাপিয়েছে। বিশ্বের একক দেশগুলোর মধ্যে ভারতই হলো ঝপর-ঐঁন এর সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী দেশ। আলেক্সান্দ্রা এলবাকিয়ান বলেছেন, ‘যেকোনো আইন যদি তা জ্ঞানের প্রবাহের বিপরীতে যায় তা মৌলিকভাবেই অন্যায় বা ফান্ডামেন্টাললি আনজাস্ট’। আশা করি আলেক্সান্দ্রা এলবাকিয়ান ভারতের কোর্টে জিতে এবং বিশ্বের গরিব গবেষকদের জিতিয়ে দেবেন
লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়