নিউজ ডেস্ক: গরুর দেখাশোনা করা পুলিশ সদস্য মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘গ্রাম থেকে উঠে এসে পুলিশের চাকরি শুরু করেছি। গত চারদিন ধরে স্যারের নির্দেশে গরুগুলোকে লালন-পালন করছি। পুলিশি সেবার বাইরে গরুগুলো লালন-পালন করতে সত্যি ভালো লাগছে।’
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় উদ্ধার চারটি গরুর যত্ন ও লালন-পালন করছে গোয়ালন্দ থানা পুলিশ। মালিকবিহীন গরুগুলোর প্রকৃত মালিকের খোঁজে বিভিন্ন স্থানে বার্তাও পাঠিয়েছে তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদে বুধবার উপজেলার দৌলতদিয়া চর কর্ণেশনা কলাবাগান এলাকা থেকে চারটি গরুসহ ওই এলাকার জামাল শেখ ও হারুন শেখ নামের দুই জনকে আটক করা হয়। গরু চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুই ভাইকে ওইদিনই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকেই গরুগুলোকে থানায় রাখা হয়।
পুলিশ জানায়, গরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। চোর চক্রের হোতা একই এলাকার গাজি কসাই ও চুন্নু কসাইকে ধরতে অভিযান চলছে।
সরেজমিন শনিবার গোয়ালন্দ ঘাট থানা প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ কনস্টেবল নুরুজ্জামান মিয়া পুলিশের গ্যারেজ থেকে গরুগুলো বাইরে আনছেন। অন্যদিকে গরুর খাবার প্রস্তুত করছেন পুলিশের আরেক সদস্য রকিবুল ইসলাম।
খোলা আকাশের নিচে গরুগুলোর ক্ষতি হবে বলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল তায়েবীরের নির্দেশনায় এগুলোকে গাড়ি রাখার গ্যারেজে রাখা হয়েছে। থানা প্রাঙ্গণে দিনের বেলায় খোলা আকাশের নিচে খড়, ভূষি খাওয়াচ্ছেন পুলিশের সদস্যরা।
থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে আসা মো. মতিয়ার শিকদার বলেন, চারটি গরুর মধ্যে কালো রঙয়ের গুরুটি দুধ দেয়া গাভী। অন্য দুটি আইড়া বাছুর, একটি বকনা বাছুর।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যরা গরুগুলোর জন্য যা করছে সেটা প্রশংসার দাবি রাখে। গরুগুলোকে পরম যত্নে লালন-পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা।
গরুর দেখাশোনা করা পুলিশ সদস্য মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘গ্রাম থেকে উঠে এসে পুলিশের চাকরি শুরু করেছি। গত চারদিন ধরে স্যারের নির্দেশে গরুগুলোকে লালন-পালন করছি। পুলিশি সেবার বাইরে গরুগুলো লালন-পালন করতে সত্যি ভালো লাগছে।’
গোয়ালন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ্ আল তায়াবীর বলেন, ’আমরা গরুগুলোকে প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর করতে চাই। সেই তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। যেহেতু গরুগুলো জব্দ করা রয়েছে, সেক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশনা ছাড়া আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। রোববার আদালতে গরুর বিষয়ে নির্দেশনা চাওয়ার পাশাপাশি গ্রেপ্তারদের সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।’
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান বলেন, ’গরুগুলোকে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরে দেয়ার লক্ষ্যে পুলিশ কাজ করছে।’
আপনার মতামত লিখুন :