ব্রাত্য রাইসু
জিনিসটা আমার পদ্ধতিতে করি। অর্থাৎ কিছু দাবি করি। দাবির কারণে অস্বীকার দেখা দেয়। অস্বীকৃতি থেকে সমালোচনা। সমালোচনা থেকে সন্দেহ। সন্দেহ থেকে সম্মতি। সম্মতি হতে সমর্থন। সমর্থন থেকে সত্য। তবে এতে ঝুঁকি আছে। আমার বুদ্ধিবৃত্তিক কুশলতা সেই ঝুঁকি নিতে পারে। নিজের গুরুত্ব বাড়াইতে বেশি প্রচলিত পন্থার নাম ‘সাধনা পদ্ধতি’। এটাতেও কাজ হয়। যেমন এই পদ্ধতিতে গৌতম গৌতম হয়েছেন। গৌতম বুদ্ধ ক্ষমতাবান উচ্চ পরিবারের সন্তান না হলে গৌতম বুদ্ধ হতেন না। কারণ তখন তার প্রচারযন্ত্র কাজ করতো না। একই কথা রবীন্দ্রনাথের বিষয়েও বলা যায়। জমিদার নন্দন না হলে রবীন্দ্রনাথ স্রেফ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে জোড়াসাঁকোর নিচে বসে থাকতেন। সাধনা ফললাভ করতো না। অনেক সাধনা করার পরেও ক্ষমতা ও প্রাচুর্য নামক আসল সাধনার অনুপস্থিতিতে আরও বহু গৌতম ও রবীন্দ্রনাথ কালের গর্ভে হারিয়ে গেছেন। কারণ তারা রাজনৈতিক ছিলেন না, তাই তাদের অর্থ ছিলো না। তাই তারা প্রচারযন্ত্র তৈরি ও ব্যবহার করতে পারেননি। তাই তাদের সাধনা আর সাধনা হয়ে উঠেনি। তারা কালের গর্ভে একাকার হয়ে গেছেন।
সেকারণে আমি সাধনা না করে (এ স্থলে বই না পড়ে) দাবি করি। বলি যে, এটা আসলে এটা না। বলি যে, বইয়ে কিছু নেই। বা ওইটা আসলে ওইটা। যাদের কাছে কিছু দাবি করবেন, মাল যদি তাদের নাও হয়, আপনার দাবির কারণেই তাদের মধ্যে মালিকানার বোধ তৈরি হবে। তারা তখন স্বভাবতই ‘না’ বলবে। আপনার দাবির ‘হ্যাঁ’ ও তাদের ফলস মালিকানার ‘না’ যখন পাবলিক হবে তখন তাদের ‘না’কে ইগনোর করবেন আপনি। বরং তারা যে তারা না এটা দেখাতে পারলেই হবে। তারা যে তারা না এটা পাবলিক বুঝতে পারলেই আপনার দাবির বিষয়টা সমর্থন লাভ করবে। আপনার নিজের সঠিক হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না এবং আপনি জানেন, যা সমর্থন লাভ করে তা সত্যে পরিণত হয়। এভাবেই আমি অন্যের সাধনাকে স্রেফ আমার নিজের দাবির মাধ্যমে অস্থির করে তুলি, নতুন সত্য নির্মাণ করি ও নিজের গুরুত্ব বাড়াই। মনে রাখতে হবে ‘প্রমাণ’ নয়, ‘দাবি’। যাতে আপনার বিরুদ্ধে জোরেশোরে ‘না; ধ্বনিত হয়। যতো বেশি ‘না’ ততোই আপনার গুরুত্ব। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :