শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৮ নভেম্বর, ২০২১, ১১:৫৮ দুপুর
আপডেট : ২৮ নভেম্বর, ২০২১, ০৩:২১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তিন কিলোমিটার খাল খননে হাজার কোটি টাকা ব্যয় !

ডেস্ক রিপোর্ট: চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ খাল খনন কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। নগরীর বারৈপাড়া থেকে নুরনগর হাউজিং সোসাইটি হয়ে কর্ণফুলী নদী ও খাল খননের কাজে সাত বছর আগে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২৬ কোটি টাকা। চার গুণ বেড়ে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকায়। ঢাকা পোস্ট

শনিবার ( ২৭ নভেম্বর) স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম খাল খনন প্রকল্প কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন। এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেও কাজ এগোয়নি।

এদিকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে নগরীর নাসিরাবাদ, শুলকবহর, বহদ্দারহাট, বারৈপাড়া, চান্দগাঁও, বাকলিয়া ও চাক্তাই এলাকার প্রায় ১০ লাখ মানুষ এ খালের অপেক্ষায় আছে বহু বছর ধরে। চট্টগ্রাম শহরের একটি বড় অংশ পাহাড়ি ভূমি। ভারী বর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি ভূমির একটি অংশের পানি চশমা খাল দিয়ে চাক্তাই খালের একাংশে গিয়ে পড়ে। কিন্তু পানি অপসারিত না হওয়ায় নগরীর বহদ্দারহাট থেকে ষোলশহর পর্যন্ত দ্রুত পানিতে ডুবে যায়। চলতি বছরের ভারী বর্ষণের সময় পানিতে পড়ে এক ব্যবসায়ী ভেসে যান, যার লাশ আর পাওয়া যায়নি। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, নতুন খালটি খনন হলে এই জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই থাকবে না।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ১৯৯৫ সালে করা ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যানে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বহদ্দারহাট বারৈপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে খালটি খননের সুপারিশ করা হয়েছিল। তার প্রায় দুই দশক পর ২০১৪ সালের জুনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বারৈপাড়া খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন পায়।

সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম এই খাল খননের উদ্যোগ নেন। তার সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২৬ কোটি টাকা। এরপর ২০১৭ সালের নভেম্বরে একনেকে প্রকল্পটি পুনর্বিবেচনা করে আবারও অনুমোদন

দেয়। সংশোধনে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। ব্যয় বেড়ে হয় ১ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। সর্বশেষ চলতি বছরের জুনে প্রকল্পটি আবারও সংশোধন করা হয়। তাতে ব্যয় বেড়ে হয় ১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এই খাল খননে প্রায় ২৫ দশমিক ২৩৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে, যাতে খরচ হবে মোট ১ হাজার ১০৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

নিয়ম অনুসারে, পুরো অধিগ্রহণের টাকা জেলা প্রশাসনকে দিতে হয়। আবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতিও নিতে হয়। বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি ভাগ করা হয় পাঁচটি লটে। তবে ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খাল খননের জন্য সাত বছরের চেষ্টায় সবেমাত্র ৭৬০ মিটার জায়গার দখল পেয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।

চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী ও খাল খনন প্রকল্পের পরিচালক মো. ফরহাদুল আলম আমাদের সময়কে বলেন, ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি খননের জন্য আমাদের ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এ জন্য ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনকে ৯১০ কোটি টাকা দিয়েছি। বিপরীতে জেলা প্রশাসন গত মাসে ৬ দশমিক ৯৫ একর জমি বুঝিয়ে দিয়েছে; যার দৈর্ঘ্য ৭৬০ মিটার। এ জন্য ২৫৪ কোটি টাকা সমন্বয় করা হয়েছে।

তিনি বলেন, খাল খনন, দুপাশে রাস্তা নির্মাণ, খালের দুপাশের প্রতিরোধ দেওয়াল নির্মাণ ও নয়টি সেতু নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের বাকি ১ হাজার ১৬০ কোটি টাকাই খরচ হবে ভূমি অধিগ্রহণে। ৬৫ ফুট প্রস্থের খালটির দুপাশে ২০ ফুট প্রশস্থ দুটি সড়ক ও ছয় ফুটের দুটি ফুটপাত থাকবে।

প্রকল্প ব্যয় সাড়ে চার গুণ বৃদ্ধি এবং বারবার মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চট্টগ্রাম জেলার সম্পাদক আইনজীবী আখতার কবীর চৌধুরী বলেন, প্রকল্প একবার উদ্বোধনের পরও কাজ শুরু না হওয়া জনগণের সঙ্গে তামাশা করা। দেখা যাবে হয়তো এবারও নির্ধারিত সময় ও ব্যয়ে এ কাজ শেষ হবে না। এত দীর্ঘ সময় পর এই খাল খননের সুফল আদৌ জনগণ পাবে কি?

গতকাল শনিবার সকালে নগরীর মাইজপাড়ায় চসিকের বহদ্দারহাট বারৈপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন প্রকল্পকাজের দ্বিতীয়বার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, সমন্বয়ের মাধ্যমে নগর উন্নয়নের কাজ সিটি করপোরেশনকে করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাজধানী বলা হয়। এটি দেশের গেটওয়ে। প্রধানমন্ত্রী ও আমি গুরুত্ব অনুধাবন করলে হবে না, করতে হবে রাজনৈতিক নেতা ও জনসাধারণকে। যদি এ গুরুত্ব অনুধাবন না করেন, তবে উন্নয়ন ব্যাহত হবে।

শুধু অর্থ বরাদ্দ দিয়ে উন্নয়ন নয়। সুশাসন কায়েম করতে পারলে সেটা হবে উন্নয়ন। কাউন্সিলররা কতটা এলাকা পরিষ্কার রাখতে পারছেন, জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে পারছেন তার ওপর উন্নয়ন নির্ভর করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়