শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ০৪:০১ সকাল
আপডেট : ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ০৪:০১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফের শুরু হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ভাসানচর যাত্রা

নিউজ ডেস্ক : কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ভাসানচর স্থানান্তর ফের শুরু হচ্ছে। এপ্রিলে বর্ষার বৈরী আবহাওয়ায় সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের কারণে বন্ধ করা যাত্রা আবার শুরু করছে সরকার। বুধবার (২৪ নভেম্বর) এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বাস রওনা হওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এখন থেকে আগামী বর্ষার বৈরী আবহাওয়া না আসা পর্যন্ত প্রতি মাসেই রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভাসানচর যাত্রা চলমান থাকবে। এমনটি জানিয়েছে কক্সবাজার ত্রাণ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় সূত্র। ইত্তেফাক

যাত্রার লক্ষ্যে পূর্বের মতো উখিয়া কলেজ মাঠে ট্রানজিট পয়েন্টে মঙ্গলবার দুপুর থেকে জড়ো হওয়া শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। স্বেচ্ছায় ভাসানচর যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের নিয়ে আগের মতো যাত্রা করবেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় স্বেচ্ছাগামী প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচর পৌঁছে দালানের একেকটি ফ্ল্যাটে আবাসন গড়েছে। ক্যাম্পে আশ্রয়ে থাকাদের মাঝ থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচর স্থানান্তর করার পরিকল্পনায় কাজ করছে সরকার। এমনটি জানিয়েছেন, কক্সবাজার ত্রাণ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) শাহ রেজওয়ান হায়াত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সূত্র জানায়, উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ এলাকা থেকে আগের মতো বাসগুলো চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। রোহিঙ্গা নেওয়ার যানবাহনগুলো ইতোমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কিন্তু, আগের মতো দুদিনের যাত্রা এবার হবে না। পুরো ৩৪ ক্যাম্প থেকেই রোহিঙ্গারা ট্রানজিট পয়েন্টে আসছে। অনেকে মঙ্গলবার বিকেল থেকে আসা শুরু করলেও বুধবার সকালেও আসবে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার। এ যাত্রার জন্য কয়েক ডজন বাস, একাধিক কাভার্ডভ্যান ও প্রয়োজনীয় অন্য যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝিরা বলেন, আগের মতো ভাসানচর যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গারা স্ব-স্ব ক্যাম্প ইনচার্জ কার্যালয়ে নাম জমা দিয়েছে। ভাসানচরের পরিবেশ, থাকা খাওয়ার সুবিধা সম্পর্কে ব্রিফিং করার পর যারা যেতে রাজি হচ্ছে তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে ভাসানচর স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে।

তাদের মতে, আগের মতো তেমন সাড়া মিলছে না। ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা অনেকে বিরূপ প্রচারণা চালিয়েছে। সেখানে বন্দির মতো বসবাস করতে হয় উল্লেখ করে তারা প্রচার করেছে, চাইলেই উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পের মতো সেখানে যখন-তখন কোথাও যাওয়া যায় না। উখিয়া-টেকনাফে থাকা কোন স্বজন মারা গেলেও সহজে দেখতে আসতে পারবে না বলায় এপ্রিলে যাত্রা বন্ধ হবার পর আবার চালু হলে যাবার জন্য মনস্থির করা অনেক পরিবার আবার চুপসে গেছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

আর উখিয়া-টেকনাফে স্থিত আশ্রয়শিবিরগুলো বেশিরভাগ পাহাড়ের ঢালুতে তৈরি। বর্ষার সময় পাহাড়ধসে ঘরবাড়ি বিলীন হয়, হতাহতের ঘটনা ঘটে। আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও বখাটের উৎপাত বেড়েছে। বেড়েছে খুন, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ, ধর্ষণ ও অরাজকতা। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দলের মধ্যে গোলাগুলিতে রোহিঙ্গার মৃত্যু ঘটছে। সাধারণ রোহিঙ্গারা অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাই শান্তিকামী রোহিঙ্গারা ঝুঁকি এড়াতে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছে, এমনটি মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

২০১৭ সালে ২৫ আগস্টে কোরবানি ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়নমূলক অভিযান শুরু করে। এর ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পুরনোসহ উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। পরবর্তীতে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে। ঘর তৈরির পর গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় স্বেচ্ছাগামী প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে পৌঁছে দালানের একেকটি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়া হয়। রোজার পর সেখানে অবস্থানকারীদের জন্য উৎসবমুখর ভাবে ঈদের জামায়াত ও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু যাযাবরের জীবন অতিবাহিত করা রোহিঙ্গাদের অনেকে ভাসানচরের সুখের জীবন ফেলে সেখান থেকেও পালাতে শুরু করে। রাতের আঁধারে ছোট নৌকায় নদী পার হতে গিয়ে ডুবে মরার ঘটনাও আছে। অস্থির অনেক রোহিঙ্গা একে বন্দি জীবন বলে অবহিত করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়