কৃষিবিদ আমিনুল ইসলাম বাবু: বাসার নীচে ভ্যানে করে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতা জোরে জোরে দাম হাঁকছেন পেঁপে লন দশ টাকা কেজি, দশ টাকা। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছি। বেশ লোকজন জমে গেছে। কাড়াকাড়ি করে কিনছে সবাই। সাধারণত কাচা পেঁপে ২০-২৫ টাকার কমে পাওয়া যায় না। আর আজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ টাকায়? ভাবছি, যে পেঁপে আমার বাসার সামনে ১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে সেই পেঁপে উৎপাদনকারী কৃষক কতো বিক্রি করেছিলো? কৃষক কতো পেলো?
এই পেঁপে নিশ্চয়ই কোন এক গ্রামে চাষ করা হয়েছে। এরপর হারভেষ্ট করে পরিবহন খরচ দিয়ে স্থানীয় হাট-বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে কোন পাইকারের হাত হয়ে চলে গেছে স্থানীয় আড়তে। এরপর সেখান থেকে পরিবহনে চলে গেছে ঢাকার আড়তে। ঢাকার আড়ত থেকে কিনে গাড়ি ভাড়া দিয়ে বিক্রির জন্য এনেছেন এই খুচরা ব্যাবসায়ী বা ভ্যানওয়ালা।
প্রশ্নটা হচ্ছে-এতো ঘাট পেরিয়ে যে পেঁপেটা মাত্র ১০ টাকা কেজিতে আমাদের হাতের নাগালে চলে এলো সেই পেঁপের উৎপাদন খরচ কতো? কৃষক এই পেঁপে চাষ করে কতটুকু লাভবান হতে পারলো? কৃষক যদি লাভবান হতে না পারেন তাহলে তিনি কি চাষবাস কন্টিনিউ করবেন? আসলে কৃষকদের পক্ষে কথা বলার তো কেউ নেই। কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিনের পর দিন পরিশ্রম করে আমাদেরকে যে খাদ্য যোগান দিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি আমাদের কি কোন দায়বদ্ধতা নেই? সম্প্রতি ভারতের কৃষকদের একটি সফল আন্দোলন আমরা দেখলাম।
কৃষকদের দাবির মুখে মোদি সরকার বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের কৃষকরা কি তাদের ন্যায্য দাবী নিয়ে মাঠে নামতে পারবে? পারবে না। কারণ প্রকৃতপক্ষে কৃষকদের পক্ষে, কৃষকদের সাথে থাকার মতো কেউ নেই। আমরা শুধু কৃষিপণ্য গুলো খুব সস্তায় কিনতে চাই। কিন্তু এতে করে কৃষকের যে বারোটা বেজে যাচ্ছে - সে খবর আমরা কতটা রাখি বা রাখতে চাই? Aminul Islam Babu ‘র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।
আপনার মতামত লিখুন :