শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ◈ মা হিসেবে পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়ে দেশের ইতিহাসে নাম লেখালেন অভিনেত্রী বাঁধন ◈ আরও তিন মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক ◈ সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ ◈ তাপপ্রবাহে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা,  বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ ইউনিসেফের ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ২২ নভেম্বর, ২০২১, ০২:১৪ রাত
আপডেট : ২২ নভেম্বর, ২০২১, ০২:১৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হাতির চলাচলে ১২ করিডোর সংরক্ষন চেয়ে হাইকোর্টে রিট

নিউজ ডেস্ক: হাতির নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে চট্র্রগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে হাতি চলাচলের জন্য চিহ্নিত ১২টি করিডোর সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়েছে। হাতির বাধাহীন চলাচল নিশ্চিত করতে করিডোরগুলো সরকারি প্রজ্ঞাপন দিয়ে গেজেট ভুক্ত করতেও আদেশ চাওয়া হয়েছে ওই রিটে।

রোববার (২১ নভেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্নিষ্ট শাখায় বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা ঢাকার তিন বাসিন্দা আদনান আজাদ, ফারজানা ইয়াসমিন ও খান ফাতিম হাসান জনস্বার্থে এ রিটটি করেন। আদালতে রিটটি দাখিল করেছেন ব্যারিস্টার খান খালিদ আদনান।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার খান খালিদ আদনান বলেন, বন্য হাতি যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে ১২ টি করিডোর সংরক্ষণ করার নির্দেশ চেয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য দাখিল করা হয়েছে। ওই বেঞ্চের কার্যতালিকা অনুসারে চলতি সপ্তাহে এ রিটের শুনানি হতে পারে। রিটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন সচিব, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষকসহ ২০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনকারী আদনান আজাদ বলেন, বাংলাদেশের বুনো হাতি সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। ক্রমেই এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। হাতি চলাচলের করিডোরগুলোর গেজেট করে তার বাস্তবায়ন করতে না পারায় ওইসব করিডোরের অনেক জায়গা অবৈধ দখলে চলে গেছে। জীবন হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। মাঝেমধ্যেই হত্যার শিকার হচ্ছে হাতি। তাই করিডোরগুলোর বিষয়ে গেজেট জারি করে সেগুলো সংরক্ষণ করার দাবিতে আইনের শরনাপন্ন হয়েছি।

রিটে বন অধিদপ্তর চিহ্নিত হাতি চলাচলের জন্য নির্ধারিত ১২টি করিডোরকে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ মোতাবেক সরকারি গেজেট দ্বারা সংরক্ষিত করিডোর হিসেবে ঘোষণা না করা এবং এ কারণে ক্রমাগত হাতি হত্যার ঘটনা ঘটার জন্য বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- সে মর্মে রুল জারিরও আদেশ চাওয়া হয়েছে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত মারা গেছে ৪৩টি হাতি। যার মধ্যে ১৬টি চট্রগ্রামে এবং বাকিগুলো বান্দরবান ও কক্সবাজারে। এসব হাতির মধ্যে ১৯টি অসুস্থতাজনিত, পাঁচটি বার্ধক্যজনিত এবং অন্যগুলোর মৃত্যু হয়েছে মানুষের সৃষ্ট কারণে। এ ছাড়া পানিতে ডুবে কিংবা পাহাড় থেকে পড়েও বেশকিছু হাতির মৃত্যু হয়েছে।

 

বন বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, এ তিন বছরে ৯টি হাতি মারা হয়েছে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদ পেতে। যার মধ্যে চারটি চট্রগ্রামে, একটি বান্দরবানের লামায়, বাকি চারটি হাতি হত্যা করা হয়েছে কক্সবাজারে। এছাড়াও সম্প্রতি শেরপুরের ঝিনাইগাতিতে একটি হাতি মারা গেছে বনের ভেতর অবৈধভাবে সব্জিবাগানে বিদ্যুতায়িত করার কারনে।

আইইউসিএন জরিপ অনুযায়ী, ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে বন্যহাতির সংখ্যা ছিল ২৬৮টি। এ ছাড়া ব্যক্তিমালিকানাধীন ৮২টি, চিড়িয়াখানায় তিনটি ও দেশের দুটি সাফারি পার্কে ১১টি হাতি রয়েছে। এর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে কিছু হাতির প্রজনন হয়েছে বলে মনে করেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। এমন প্রেক্ষাপটে রাইজিংবিডিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে হাতির করিডোর রক্ষায় রোববার হাইকোর্টে এ রিটটি করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি শেরপুরে পর পর দুটো হাতি মারা গেছে। দুটো হাতিই বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেলেও একটি বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে রেঞ্জ অফিসার স্বীকার করলেও এরপরই আরও একটি হাতি মারা যায়। অতিরিক্ত ধান খেয়ে শেরপুরের পানিহাতায় বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে বন বিভাগের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ওয়াউল্ড ফটোগ্রাফার নাজিম আহমেদ বলেন, এ মাসের ৫ তারিখে আমরা কয়েকজন ফটোগ্রাফার হাতির সংবাদ পেয়ে ঝিনাইগাতি গিয়েছিলাম। সেখানে কিভাবে নিরীহ হাতির উপর স্থানীয় ভূমিদস্যুরা অত্যাচার করে তার প্রমান পেয়েছি। বেশ কয়েকটি বনে দেখেছি অবৈধভাবে বন উজার করে সেখানে নানা ধরনের সব্জিচাষ হচ্ছে। আর হাতি চলাচল পথে সব্জিবাগান পুরোটা জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুতায়িত করা হয়েছে। এ ছাড়াও নানা ধরনের অস্ত্র এবং আগুন দিয়ে হাতিদের তাড়া করা হয়।

তিনি বলেন, বহিরাগত মানুষরা যখন থেকে বন সাবাড় করে বসতবাড়ি গড়ে তুলেছে তখন থেকেই হাতিসহ অন্যান্য প্রাণিদের অস্বিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় হাতির চলাচলা নির্বিঘ্ন করার জন্য ১২টি করিডোর সংরক্ষণের জন্য যে রিট করা হয়েছে তা সময়ের দাবি আশা করছি মাননীয় হাইকোর্ট এ বিষয়ে একটি সুচিন্তিত রায় দেবেন। আমরা তার জন্য অপেক্ষা করছি। - রাইজিংবিডি.কম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়