রিয়াদ ইসলাম: [২] ঈশ্বরদী উপজেলার ৭ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার মাইকের শব্দে মানুষের কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। এতে কানের রোগীসহ এসএসসি ও এইচএসসির পরীক্ষার্থীরা বেশি বিপাকে পড়েছে।
[৩] উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদীর ৭টি ইউপিতে ২৮ নভেম্বর ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ২৫৩ জন সাধারণ সদস্য ও ৬৫ জন সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তাঁরা মাইকে প্রচার চালাচ্ছেন।
[৪] নিয়ম অনুযায়ী একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩টি মাইক ব্যবহার করলে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ২৭টি ব্যবহার করছেন এবং সংরক্ষিত ও সাধারণ সদস্য পদের প্রার্থীরা ১টি করে ব্যবহার করলে ৩১৮ জন প্রার্থী ৩১৮টি মাইক ব্যবহার করছেন। এ হিসাবে ১২ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা একাধারে ৩৪৫টির অধিক মাইক দিয়ে প্রার্থীদের প্রচার চালানো হচ্ছে।
[৫] বেলা ২টার আগে থেকেই প্রার্থীদের সমর্থকেরা মাইকে প্রচারের প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন। অনেক সময় ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থীদের একই সড়কে অটোরিকশায় ১০ থেকে ১৫টি প্রচার মাইক চলে। যদিও জনসাধারণ, শিক্ষার্থীরা শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে ওই সময়টুকু দুই হাত দিয়ে কান চেপে ধরতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এসব কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
[৬] এসএসসি পরীক্ষার্থী মাশফিক ও রুপক বলেন, ‘আমাদের ছোট্ট এই গ্রামে ১৪-১৫টি মাইক কখনো একসঙ্গে, আবার কখনো একটির পর একটি আসতেই থাকে। এতে কান ঝালাপালা হয়ে যায়। মাইকের যন্ত্রণাদায়ক শব্দে পড়াশোনা করতে ইচ্ছে করে না। মাইকিংটাকে সীমিত করে দেওয়া উচিত।’
[৭] পাকশী ইউনিয়নের ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীদের মাইকিং-প্রচারণার পাশাপাশি শহরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে বাজারে থাকা দায় হয়ে পড়েছে।
[৮] একাধিক প্রার্থী বলেন, নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই, তাই তাঁরা প্রতিদিনই মাইকিং করাচ্ছেন। জনগণের কথা চিন্তা করে নির্বাচন কমিশন মাইকিংয়ের বিষয়ে কোনো নীতিমালা করলে তাঁরা মেনে নেবেন।
[৯] উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসমা খান বলেন, সহনীয় মাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত শব্দ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণে শ্রবণশক্তি (বিশেষ করে শিশুদের) লোপসহ উচ্চরক্তচাপ, মাথাধরা, খিটখিটে মেজাজ, বিরক্তিসহ নানা মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
[১০] উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, ‘একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রতিদিন নির্বাচনী এলাকায় তিনটি ও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত প্রার্থীদের একটি করে মাইক ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। তবে নির্বাচনে কত ডেসিবেল শব্দে মাইক বাজানো যাবে এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা না থাকায় প্রার্থীদের আমরা মৌখিকভাবে উচ্চশব্দে মাইক না বাজানোর নির্দেশনা দিয়েছি।’
আপনার মতামত লিখুন :