শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর, ২০২১, ০১:১২ দুপুর
আপডেট : ১৬ নভেম্বর, ২০২১, ০১:১৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] টিকটক রাজের ফাঁদে শতাধিক নারী

মাসুদ আলম : [২] মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূয়া পরিচয়ে টিকটক ব্যবহার করে প্রতারণা, নারীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, ব্ল্যাকমেইল এবং অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে টিকটক রাজ ওরফে আব্দুর রাকিব ওরফে খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় ১টি মোবাইল, ৭ টি সীমকার্ড, মেমোরী কার্ড, র‌্যাব ইউনিফর্ম ও স্কাপ, ভূয়া আইডি কার্ড, চেইন সহ বাঁশি, বুট ইত্যাদি।

[৩]তিনি আরও বলেন,রাজ দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যথাক্রমে টিকটক, ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার ইত্যাদির মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূয়া পরিচয় দিয়ে আসছিল। সে গত দুই বছর যাবৎ অনলাইন প্লাটফর্মে এহেন অপরাধের সাথে যুক্ত রয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়। তার নির্মিত ও প্রচারিত মুখরোচক ভিডিও’র মাধ্যমে টিকটকে ইতিমধ্যে ২ মিলিয়নের অধিক ভিউ এবং ফলোয়ার অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এই প্রতারক। সে অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে বিভিন্ন নারীদের প্রলুব্ধ ও প্রতারিত করে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন এবং পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করত।

[৪] মঈন বলেন, রাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যায় চুল কাটাসহ পোষাক পরিচ্ছদ পরিধান করত। সে বিভিন্ন বাহিনীর ড্রেস পরিহিত অবস্থায় ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিত। সে বিভিন্ন বাহিনীর প্রচারমূলক ভিডিও সমূহ সুবিধাজনকভাবে এডিট করে সেখানে নিজের অবস্থান দেখিয়ে প্রচার করত।

[৫] তিনি আরও বলেন, ফটোশপ করে বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকান্ডে তার উপস্থিতি প্রচার করত। এছাড়া বাহিনীর প্রাত্যাহিক জীবন এর ভূয়া ভিডিও তৈরি করত। সে নিজেকে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান হিসেবে পরিচিতি পেতে অন্যের বাড়ি ও আমবাগানসমূহ নিজের বলে চালিয়ে দিত। এছাড়া বিভিন্ন ইমোশনাল ভিডিও তৈরি করত যাতে তাকে ঠকবাজ না মনে হয়। সে ঠকবাজি করে বা প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের নারীদেরকে প্রলুব্ধ করে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিত। সে টিকটকে বিভিন্ন মেয়েদের মধ্য থেকে যারা দামী অলংকার পরিধান করত বা অবস্থা সম্পন্ন মনে হত তাদেরকে টার্গেট করত। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রলোভনে প্রলুব্ধ করে তাদের সাথে ঠকবাজি বা প্রতারণার মাধ্যমে তাদের গলার হারসহ অন্যান্য অলংকার ও অর্থ আত্মসাৎ করত।

[৬] তিনি বলেন, রাজ টিকটকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে বিজিবি’র একজন ল্যান্স নায়েক পদবীর সদস্য বলে পরিচয় দিত। বিজিবি থেকে র‌্যাব এ তার পদায়নের ফলে সে র‌্যাব-১২ তে কর্মরত বলে মিথ্যা পরিচয় দিত। র‌্যাব-১২ থেকে তার র‌্যাব-৫ এ পোষ্টিং হয় এবং পরবর্তীতে র‌্যাব-৫ হতে ঢাকায় র‌্যাবে পোষ্টিং হয় বলে তার অনুসারীদের জানাত।
রাজ এসএসসি পাশ।

[৭] তিনি আরও বলেন, রাজ আগে একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করত বলে জানা যায়। বর্তমানে বগুড়ায় একটি আবাসিক হোটেলের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত রয়েছে। সে টিকটকের মাধ্যমে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সে ৪টি বিবাহ করেছে। এছাড়াও শতাধিক নারীকে সে বিভিন্নভাবে প্রতারিত করেছে। সে কৌশলে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন নারীর সাথে আপত্তিকর চিত্র (ছবি) ধারণ করে মোবাইলে সংরক্ষণ করত এবং ফেসবুক ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেইল ও অর্থ আদায় করত।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়