শিরোনাম
◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন

প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর, ২০২১, ০৩:০০ রাত
আপডেট : ১৬ নভেম্বর, ২০২১, ০৩:১৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সঞ্চয়পত্র কেনার গাইডলাইন: প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগে কড়াকড়ি আরোপ

নিউজ ডেস্ক: নিয়মবহির্ভূতভাবে সঞ্চয়পত্র খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এখন থেকে রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির (আরজেএসসি) নিবন্ধন ছাড়া কোনো কোম্পানির নামে সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না। একইভাবে চাকরিজীবীদের টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) ছাড়া প্রতিষ্ঠানের প্রভিডেন্ট ফান্ড দিয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা যাবে না। বেসরকারি ফার্মের নামে সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে বিনিয়োগকারীকে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে। আর অটিস্টিকদের শিক্ষা ও সহায়তা প্রতিষ্ঠান খাতে বিনিয়োগ করতে চাইলে তাদের জেলা সমাজ সেবা অফিস এবং স্কুল পরিচালনা পর্ষদের প্রত্যয়নপত্র দিতে হবে।

সম্প্রতি এ ধরনের ২১টি বিধান আরোপ করে সঞ্চয়পত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের গাইডলাইন জারি করেছে জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর। এটি অনুসরণ করতে সংশ্লিষ্ট সব অফিসকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এ তথ্য।

নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠান সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের জন্য আবেদন করলে দাখিলকৃত কাগজপত্র কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর। এতে বিনিয়োগের উপযুক্ত হলেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি ও ফান্ডের অর্থে সঞ্চয়পত্র কেনার অনুমতি দেওয়া হবে।

জানতে চাইলে জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোসাম্মদ মাকছুদা খাতুন বলেন, এসব নির্দেশনা কার্যকর করতে সঞ্চয়পত্রের সবগুলো অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগে কোনো ধরনের অস্বচ্ছতা থাকবে না। সঞ্চয়পত্র খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগে কী ধরনের কাগজপত্র দরকার গাইডলাইনে তা দেওয়া আছে। ফলে চাইলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ করা যাবে না। এর কার্যকারিতার বিষয়ে অধিদপ্তর থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। আশা করছি সঞ্চয়পত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।

এ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান এ খাতে বিনিয়োগ করেছে। দৈনিক বিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডের নামেও বড় অঙ্কের অর্থ এখানে নিয়ে আসছে। কিছু প্রতিষ্ঠান আইনভঙ্গ করেও এ খাতে বিনিয়োগ করছিল। নিয়ম অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠান এ খাতে বিনিয়োগ করতে চাইলে এনবিআরের একটি সার্টিফিকেট লাগে। এই আইনও মানা হচ্ছিল না। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক অর্থ দিয়ে সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধিমালা, ১৯৭৭ যথাযথভাবে অনুসরণ করার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেটি পরিপালন করা হতো না।

সূত্র মতে, সঞ্চয়পত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চার ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে কোম্পানির বিনিয়োগ, ভবিষ্যৎ তহবিল বিনিয়োগ, ফার্ম (মৎস্য, পোলট্রি ও কৃষি) নামে এবং অটিস্টিকদের শিক্ষা ও সহায়তার জন্য গঠিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র ক্রয়। প্রতিটি ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পৃথক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কোম্পানির বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গাইডলাইনে বলা হয়েছে, তাদের যে প্রভিডেন্ট ফান্ড আছে তাতে কর কমিশনের স্বীকৃতি থাকতে হবে। কমিশন দ্য ইনকাম ট্যাক্স রুলস-১৯৮৪ (অংশ-২)-এর বিধি ৪৯ এবং দ্য ইনকাম ট্যাক্স অর্ডিনেন্স (১৯৮৪) দ্য ফাস্ট শিডিউল পার্ট বি-এর সেকশন ২(১) অনুযায়ী তিনি স্বীকৃতি দেবেন। এছাড়া ভবিষ্যৎ তহবিলের নামে করদাতার শনাক্ত (টিআইএন) নম্বর থাকতে হবে। কোম্পানি টাকায় সঞ্চয়পত্র কিনতে আরও জমা দিতে হবে ভবিষ্যৎ তহবিলের সংরক্ষিত হিসাব এবং ব্যাংক হিসাবের বিবরণ। তবে ৫ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভার কার্যবিবরণী দাখিল করতে হবে।

দ্বিতীয় ক্যাটাগরি অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ তহবিলের অর্থ দিয়ে সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৫টি বিধান পরিপালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড সংরক্ষণের বিষয়ে সরকারি আদেশ এবং পে-রোলের কপি জমা দিতে হবে। প্রভিডেন্ট ফান্ডের নামে ব্যাংক হিসাব বিবরণী এবং এমআইসিআর চেকের ফটোকপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থে ৫ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদ সভার কার্যবিবরণী দাখিল করতে হবে।

বিভিন্ন ফার্মের নামে সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে ৫টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সঞ্চয়পত্র বিধিমালা-১৯৭৭ এর বিধি ৫(৬)-তে মৎস্য, পোলট্রি ও কৃষি ফার্মের অর্থ দিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনার বিধান রয়েছে। তবে এখন থেকে এসব ফার্মের আয়কর অফিসের দাখিলকৃত আয়ের বিবরণী, ফার্মের করদাতা শনাক্ত নম্বর (টিআইএন), ব্যাংক হিসাব বিবরণী এবং ফার্মের মালিকের এনআইডি দাখিল করতে হবে।

সর্বশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে অটিস্টিকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টাকায় সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে। প্রতিষ্ঠানটি যে অটিস্টিকদের শিক্ষা ও সহায়তার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই মর্মে জেলা সমাজ সেবা অফিস এবং পরিচালনা পর্ষদ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে। এছাড়া সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকৃত অর্থের মুনাফা অটিস্টিকদের সহায়তায় ব্যয় করা হবে মর্মে সংশ্লিষ্ট জেলা সমাজ সেবা অফিসের প্রত্যয়নপত্র এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব বিবরণী জমা দিতে হবে।

প্রসঙ্গত চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) ঘাটতি বাজেট অর্থায়নে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) নিট ঋণ নেওয়া হয় ১১ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। এটি প্রথম প্রান্তিকের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা বেশি। মূলত ব্যাংক থেকে সুদ হার বেশি থাকায় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীরা এখন সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকছেন। - যুগান্তর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়