অঞ্জন রায়: বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে খালাস দিয়ে আদালত যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, ‘এরপর থেকে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর যদি কেউ মামলা করতে যায়, তা না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।’ আদালতের এ ধরনের পর্যবেক্ষণ নারীর প্রতি সংহিসতা বন্ধ করতে নয়, টাকাওয়ালা ক্ষমতাবানদের নারীর প্রতি সহিংসতার পর ৭২ ঘণ্টা কোনোমতে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার প্রবণতাকে উৎসাহিত করবে।
একই সঙ্গে রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, ‘মামলার দুই ভিকটিম বিশ্বাসযোগ্য নন। ভিকটিম দুজনই আগে থেকেই সেক্সুয়াল কাজে অভ্যস্ত, হাসপাতাল রিপোর্ট তাই বলে। অহেতুক তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন। এতে আদালতের ৯৪ কার্যদিবস নষ্ট হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশকে এ বিষয় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।’ ‘সেক্সুয়াল কাজে অভ্যস্ত’ কথাটি নারীর প্রতি অসম্মানজনক, পুরুষতন্ত্রের পুরোনো রেটরিক। সেক্সুয়াল কাজে অভ্যস্ত বলা কি ভিকটিমদের অসম্মান করা নয়? আর ‘অহেতুক তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়েছেন’Ñ এই পর্যবেক্ষণ আগামীতে এ ধরনের মামলার চার্জশিট বিষয়ে পুলিশকে কিছুটা হলেও ভাবনায় ফেলবে। আমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, দিলদার আহমেদের সেই মিডিয়ার সামনে ছেলের অপকর্মের পক্ষে দাম্ভিক সাফাই? সেই দম্ভটাই আজ সত্যি মনে হচ্ছে। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :