এ এইচ সবুজ: [২] আমার ৫ বছরের সঞ্চয় দেড় লাখ টাকা চোখের সামনে আগুনে খাইলো। পুড়ে যাওয়া ঘরের কয়লা হাতে নিয়ে এভাবেই বিলাপ করছেন সালেহা খাতুন। তিনি স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ৫ বছরে দেড় লাখ টাকা সঞ্চয় করেছিলেন। কিন্তু আগুনে পুড়েছে তার শেষ সঞ্চয়টুকু।
[৩] সালেহার মতো আরও পাঁচ শতাধিক মানুষ বাস করতেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর মৌচাক এলাকার তেলিরচালার চারটি কলোনিতে। সোমবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিলেন্ডারের আগুনে পুড়ে যায় চারটি কলোনির দেড় শতাধিক ঘর। শত শত মানুষের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে পুড়ে যাওয়া চারটি কলোনির পরিবেশ।
কলোনির মালিক মোখলেছুর রহমান ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, একটি রুমের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সাথে সাথে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের আরও ৩টি কলোনিতে। দেড় শতাধিক ঘর ছিল সেখানে। প্রতিটি ঘরেই ছিল সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল। জীবনের নিরাপত্তার কারণে কেউ ঘর থেকে কিছু বের করতে পারেনি। এইসব কলোনিতে যারা ভাড়া থাকতেন তারা সবাই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তাদের সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে।
[৪] সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বাড়ি হাফিজা খাতুনের। এখানে একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। তিনি বলেন, ডিউটি করছিলাম। হঠাৎ ছোট মেয়ে ফোন করে বললো, মা আমাদের সব পুড়ে গেছে। অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল একটা ফ্রিজ কিনবো। কিনেও ছিলাম ২ মাস আগে, কিন্তু আগুনে ফ্রিজসহ ঘরের সবই পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।
[৫] কলোনিতে ফার্মেসির দোকান ছিল আফসার আলীর। তিনি বলেন, আগুন যখন লাগে তখনও দোকান খোলা ছিল। আগুন এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে বুঝে ওঠার আগেই ২ লাখ টাকার ঔষধ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সরকার থেকে যেন আমাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে দেয়। না হলে আমাদের চলার কোনো উপায় নেই।
[৬] এ বিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ বলেন, কলোনির সবাই বিভিন্ন জেলা থেকে এসে পোশাক কারখানার কাজ করেন। আগুনে পুড়েছে তাদের সবকিছু। আমি ব্যক্তিগতভাবে ও উপজেলার পক্ষ থেকে রাতেই তাদের কিছু কম্বল ও বাচ্চাদের পোশাকের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। অনেককেই নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু আমার বাসার পাশেই কলোনি, মানবিকতার দিক থেকে তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছি।