শিরোনাম
◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল

প্রকাশিত : ০৬ নভেম্বর, ২০২১, ০২:৩৩ রাত
আপডেট : ০৬ নভেম্বর, ২০২১, ০২:৩৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: আমাদের মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে হবে

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন উচ্চতর মাদ্রাসায় পরিণত হয়েছে এবং এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আজকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় ৬০ শতাংশের বেশি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। তাদের ইংরেজি ভিত্তি এতো খারাপ, মাদ্রাসায় যে ইংরেজি পড়ে তা ক্লাস ফোরের সমমান। ফলে ইংরেজিতে দক্ষতাবিহীনভাবে তারা এসে ঢাকাসহ অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে এবং একটা গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে টেনে টেনে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসছে।’ -অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, ইতিহাস বিভাগ। বর্তমানে তিনি বেসরকারি প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির উপাচার্য। এটি একটি পুরনো বক্তব্য নতুন করে সামনে এসেছে। বক্তব্য পুরনো হলেও তামাদি হয়ে যায় না। আলোচনা হতেই পারে। এই বক্তব্যের দুটি গুরুতর সমস্যা আছে। [১] এই রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থার একটি স্বীকৃত মাধ্যম হলো মাদ্রাসা শিক্ষা।

সেই স্বীকৃত মাধ্যমকে এমন ঢালাওভাবে ছোট করা গুরুতর অন্যায়। এটা তিনি করতে পারেন না। [২] যদি তার মন্তব্য সত্যি বলে ধরেই নিই তাহলে সমস্যাটা আসলে কার? তার কথার অর্থ দাঁড়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এমন মানের হয় যে চতুর্থ শ্রেণির ইংরেজি জ্ঞান নিয়ে মাদ্রাসার ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে যেতে পারে।

তাহলে সমস্যাতো আসলে আমাদের ভর্তি পরীক্ষার মানের। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের মানে বিরাট সমস্যা আছে। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েটে ভর্তি হতে হলে শিক্ষার্থীদের ঝঅঞ পরীক্ষা দিতে হয়। এটি সারাবছর ধরেই হয়। ঝঅঞ পরীক্ষার প্রশ্নের মানের সঙ্গে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নের মানের তুলনা করলে বোঝা যাবে আমাদের প্রশ্নমান কতো নি¤œমানের। ইউরোপ-আমেরিকার ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির জন্য কেবল ঝঅঞ-ই যথেষ্ট নয়। তাকে একটি রচনা লিখতে হয়, তার এক্সট্রাকাররিকুলার থাকতে হয়, ভালো রেজাল্ট ইত্যাদি অনেক কিছু দেখে। যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের যেই সাবজেক্টে পড়তে চায় সেই সম্বন্ধেও একটি রচনা লিখতে হয়। এগুলো শিক্ষার্থীর নিজেকেই লিখতে হয়। অন্য কেউ লিখলে বা অন্য কারও লেখা কপি করলে ধরে ফেলে। এর মানে তারা ভর্তিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। আমাদের দেশে শিক্ষার বর্তমানে তিনটি মাধ্যম আছে। আমাদের উচিত তিনটি মাধ্যমেরই যেন যথেষ্ট রিপ্রেজেন্টেশন থাকে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় হবে সমাজের সকল শ্রেণির মিশ্রনের স্থান। এটা কেবলই বাংলা মাধ্যম বা কেবলই মাদ্রাসা অথবা কেবলই ইংরেজি মাধ্যমের জন্য হতে পারে না। আমাদের উচিত ভর্তি পরীক্ষাকে আরও যুগোপযোগী করা। পরীক্ষার মান সবসময়ই ধীরে ধীরে উন্নত করতে হবে। পরীক্ষার মানই ছাত্রছাত্রীদের মান নির্ধারণ করবে। আমাদের মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকেও যুগোপযোগী করতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যদি সকল মাধ্যমের মিলনস্থল বানাতে পারি তাহলেই কেবল একটি সুস্থ্য সমাজ তৈরি হবে।

ইদানীং লক্ষ্য করছি অনেকের পুরনো বক্তব্যকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সামনে এনে মামলা পর্যন্ত করছে। যেমন কিছুদিন আগে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর একটি পুরনো লেখাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে একটি মামলা হয়। তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক অধ্যাপক জিয়া রহমানের বিরুদ্ধেও একটি পুরনো বক্তব্যকে কেন্দ্র করে মামলা হয়। সম্প্রতি একটি সংগীত ব্যান্ডের পুরোনো একটি গানকে কেন্দ্র করেও একটি মামলা হয়। এই মামলাগুলোও করছে একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। সরকারের উচিত এই বিষয়ের দিকেও নজর দেওয়া। কেন হঠাৎ করে কোনো একটি পুরোনো বিষয় সামনে চলে আসে। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়