আসাদুজ্জামান সম্রাট, গ্লাসগো (স্কটল্যান্ড) থেকে: [২] করোনা বিধি নিষেধের কারনে এবারের গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনে গরীব দেশগুলোর অংশগ্রহণ খুবই কম। অথচ ১২০টি দেশ অংশ নিয়েছে সম্মলনে। ৪০ হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি যোগ দিয়েছে।
[৩] সম্মেলনের শুরুতেই বিশ্বনেতারা যেভাবেই হোক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখার বিষয় সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় গরীব দেশগুলোর অংশগ্রহণ খুবই নগন্য। অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলির সেই অর্থে প্রতিনিধিত্ব নেই এই সম্মেলনে। অধিকাংশ দেশের পরিবেশবিদরাই সম্মেলনে এসে পৌঁছাতে পারেননি। কারণ, করোনাবিধি মেনে তাদের পক্ষে এসে পৌঁছানো সম্ভবই হয়নি। এর দায় কার এ নিয়েই চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
[৪] সম্মেলনে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেকটা কমিয়ে ফেলার শপথ নেওয়া হয়েছে। মিথেন গ্যাস নিঃসরণ কমানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
[৫] পরিবেশবিদদের বক্তব্য, এর কোনোটাই সম্ভব নয়, যদি গরিব দেশগুলিকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা না যায়। এবং তাদের সঙ্গে পেতে গেলে তাদের অর্থনৈতিক বুনিয়াদের দিকে নজর দিতেই হবে।
[৬] সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের দাবি, গতবছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি পরিবেশবিদ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। সবমিলিয়ে সংখ্যাটি প্রায় ৪০ হাজার। রাষ্ট্রনেতারা ছাড়া অধিকাংশ পরিবেশবিদই অপেক্ষাকৃত উন্নতদেশের বাসিন্দা। যারা ভ্যাকসিন পেয়ে গেছেন। যাদের দেশ থেকে আসার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য কোনোরকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি।
[৭] গরিব দেশগুলি, বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলির ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। করোনা ঠেকাতেই ওই সমস্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে বহু পরিবেশবিদ আসতেই পারেননি সেখান থেকে। ১০ বা ১৪ দিনের কোয়ারান্টিনের খরচ তুলতে পারেননি বলে অনেকে আসতে পারেননি।
[৮] আবার যারা এসেছেন, তাদের অনেকেই গ্লাসগোয় জায়গা পাননি। পার্শ্ববর্তী শহর এডিনবরায় তাদের থাকতে হচ্ছে। নিয়মিত সম্মেলনে যোগ দিতে পারছেন না তারা।
[৯] কপ-২৬ সম্মেলন ধনী গরীবের এই ব্যাবধানটিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। ধনী রাষ্ট্রগুলো একের পর এক সিদ্ধান্ত নিলেও গরবী রাষ্ট্রগুলোকে সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা না গেলে এটি একটি উপহাস হয়েই থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :