শিরোনাম
◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর, ২০২১, ১০:৩৯ রাত
আপডেট : ৩১ অক্টোবর, ২০২১, ১০:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রসঙ্গ শিক্ষা: পরিবর্তন খারাপ কিছু না, তা নীতিতে নয়, কাজে দরকার

ড. মঞ্জুরে খোদা: শিক্ষাপদ্ধতিতে আবারো পরিবর্তন। পত্রিকার শিরোনামের ভাষা দেখে মনে হয়- শিক্ষার পরিবর্তন বুঝি খারাপ কোন কিছু। কিন্তু শিক্ষার সংস্কার-পরিবর্তন খারাপ কিছু নয়, এটা একটা চলমান বিষয় ও প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। শিক্ষার মৌলিক বিষয় বাদে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব বাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে তাকে গ্রহন-বর্জনের মাধ্যমে অগ্রসর হতে হয়। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি গ্রহন করছি এবং কি বর্জন করছি। তারসাথে শিক্ষার গুন-মান-উন্নতির সম্পর্ক কতটুকু সে আলাপ গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তনগুলো যদি এমন হয় যে, তারসাথে শিক্ষার মানের-উন্নতির যুক্তিসঙ্গত কোন সম্পর্ক-সংযোগ নেই, তাহলে সে পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, তার সমালোচনা হবেই।

আমি মনে করি শিক্ষাবিদ, শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে শিক্ষাপদ্ধতি-ব্যবস্থার পরিবর্তন-সংস্কারের জন্য একটি স্থায়ী কমিশন থাকা দরকার, যারা সময় সময় এর পরিবর্তন ঘটবে। জাপানসহ অনেক দেশেই এমন ব্যবস্থা আছে। যাদের কাজ হবে ১০ বছর পরপর শিক্ষার নানা বিষয়ের পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমে পূর্ণমূল্যায়ন করে তার সংশোধন-সংস্কার করা।

পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার একটি বড় কারণ হচ্ছে, যাকে বর্জন করে নতুন একটি পদ্ধতি গ্রহন করা হলো- সেটার খারাপ ও অসংঙ্গতি নিয়ে কোন কথা বলা হয় না। কেন সে পদ্ধতি ব্যর্থ বা অকার্যকর হলো সেটার কোন গবেষণা-জরিপ নেই। আবার নতুন যে পদ্ধতি যে চালু করা হলো সেটাও যে শিক্ষার জন্য ভাল হবে সে বিষয়ে কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বক্তব্য নেই। এই অসঙ্গতি ও অতীত অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে এর বিরোধীতা-সমালোচনা হয়।

এবার মূল আলাপে আসি। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, প্রায় ১০ বছর আগে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল। ১০ বছর একটি দীর্ঘ সময়। এই দীর্ঘ সময়ে অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এখন সময় এসেছে শিক্ষানীতি সংশোধন করা, পরিমার্জন ও সংযোজন করার। তাই সরকার শিক্ষানীতি সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের আয়োজনে 'এডুকেশন টেকনোলজি হ্যান্ড এগ্রিকালচার ট্রান্সফর্মেশন' শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

কি ধরণের সংশোধন করা হবে পত্রিকায় এ নিয়ে ৬টি বিষয়ের কথা জেনেছি।
(১) শিক্ষার গুণগত মান অর্জন। সব পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
(২) একটি সমন্বিত শিক্ষা আইন প্রণয়ন চূড়ান্ত করা
(৩) সাইন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং আর্টস এন্ড ম্যাথসের দিকে গুরুত্ব দেয়া।
(৪) শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরি করার পাশাপাশি প্রকৃত মানুষ তৈরি করা।
(৫) এজন্য সরকার সততা, নৈতিকতা, দেশপ্রেম, কমিউনিকেশন স্কিল, টিম বিল্ডিং, ক্রিটিক্যাল থিংকিং প্রবলেম সলভিংসহ বিভিন্ন সফট স্কিলের ওপর গুরুত্বারোপ করছে।'
(৬) অনলাইন শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে শিখতে পারে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় সে সুযোগ রাখতে হবে।'

শিক্ষার মাধ্যমে কি অর্জন করতে চাই এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি জানলাম। কিভাবে অর্জন করতে চাই, কতদিনে, কোন প্রক্রিয়া ও পরিবেশে অর্জন করতে চাই সে প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে তাদের প্রস্তাবনা-সিদ্ধান্ত কি সেটা দেখা যাক। সেটা ধরেই কথা বলি।

১। প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকবে না। শিক্ষাকালীন সময়েই তাদের মূল্যায়ন করা হবে।
২। নবম ও দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক কিংবা বাণিজ্যের মতো বিভাগ থাকবে না।
৩। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রধান বিষয় সমুহে শিক্ষাকালীন ৬০ শতাংশ এবং বাৎসরিক মূল্যায়ন হবে ৪০ শতাংশ। এছাড়া অন্যান্য বিষয় সমুহে শিক্ষাকালীন শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে।
৪। নবম ও দশম শ্রেণিতে প্রধান পাঠ্য বিষয়সমুহে ৫০ শতাংশ বছরব্যাপী মূল্যায়ন এবং ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া অন্যান্য বিষয়ে শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে। এবং দশম শ্রেণি শেষে একটি পাবলিক পরীক্ষা হবে।
৫। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে আবশ্যিক বিষয়ে শিক্ষাকালীন মূল্যায়ন ৩০ শতাংশ এবং সামষ্টিক মূল্যায়ন ৭০ শতাংশ। নৈর্বাচনিক/বিশেষায়িত বিষয় অনুযায়ী সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি প্রকল্পভিত্তিক, ব্যবহারিক ও অন্যান্য উপায়ে শিক্ষাকালীন মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে। প্রয়োগিক বিষয়ের মূল্যায়ন হবে শতভাগ। এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে বছর শেষে একটি করে পরীক্ষা হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয়ে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারিত হবে।

পরিবর্তনের ঘোষণায় মন্ত্রী বলেছেন, এর মাধ্যমে শিক্ষাকে সহজ, প্রাণবন্ত, ব্যবহারিক ধারায় আনা হবে। মুখস্ত নির্ভরতার বদলে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এ শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষেই যেন অধিকাংশ পাঠ গ্রহণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ২০২৫ সাল থেকে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখার এই পদ্ধতি চালু করা হবে।

শিক্ষার মূল্যায়নকে বছরান্তের বিষয় না রেখে তাকে সারাবছর বা প্রতিদিনের শিক্ষার সাথে জুড়ে দেয়ার কথা অনেক দিন ধরেই বলছি। শিক্ষা শুধু পরীক্ষার বিষয় না। পরীক্ষা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অবস্থার মূল্যায়ন। কিন্তু কি শিখবে, কিভাবে শিক্ষবে, কে শেখাবে, কোন পরিবেশে শিখবে সেটা ততোধিক গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষার প্রধানত চারটা দিক ১। শেখানো (টিচিং) ২।শেখা (লারনিং) ৩। কি শেখা (কনটেন্ট/সিলেবাস) ও ৪। মূল্যায়ন (ইভ্যালুয়েশন/এসেসমেন্ট)। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখছে সেটাই মূল্যায়নের মাধ্যমে জানা যায়। মূল্যায়নেরও ২টা পদ্ধতি আছে একটি বছর ধরে ধারাবাহিক মূল্যায়ন অন্যটি বাৎসরিক বা সামষ্টিক মূল্যায়ন। বাংলাদেশে শুধু শিক্ষাবর্ষের শেষে পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতিকে অনুসরণ করা হতো। তবে উন্নত বিশ্বে কুইজ, অ্যাসাইনমেন্ট, ক্লাস পারফরমেন্স, প্রকল্প, উপস্থাপনা, মধ্যবর্তী পরীক্ষা প্রভৃতির মাধ্যমে বছরব্যাপী শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হয়।

শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা-পরীক্ষাপদ্ধতির যে পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন তা উন্নত বিশ্বে চালু থাকা পদ্ধতিরই অনুসরণ। প্রশ্ন হচ্ছে এ পদ্ধতি চালুকরার জন্য যে ধরণের প্রস্ততির প্রয়োজন তা কি নেয়া হয়েছে? মন্ত্রীর ঘোষণায় সেটা জানা গেল না। শিক্ষার ৪টি দিকের গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হচ্ছে শেখানো বা টিচিং। প্রাথমিক-মাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন ধারার শিক্ষা দেবার মত করে শিক্ষকদের ও শিক্ষার পরিবেশ কি তৈরী করা হয়েছে? শিক্ষকের উপযুক্ত শিক্ষা, সক্ষমতা, দক্ষতা ও সৃজনশীলতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

উপযুক্ত শিক্ষক পেতে হলে এ পেশাকে আকর্ষনীয়, সম্মানজনক ও সামাজিকভাবে মর্যাদার করতে হবে। জাপানে শিক্ষক খুব জনপ্রিয় একটি পেশা। সেখানে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের সংখ্যাও প্রচুর, শিক্ষকদের বেতন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের তুলনায় অধিক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে শিক্ষকের সংকট দেখা দিলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, শিক্ষকরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের চেয়ে ৩০ শতাংশ অধিক বেতন পাবেন। যদিও গত পঞ্চাশ বছরে শিক্ষকের সংখ্যা পর্যাপ্ত হবার পর এই বাড়তি সুবিধা কিছুটা কমেছে কিন্তু তারপরও আইনের মাধ্যমেই শিক্ষকের বেতন এখনও প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীদের চেয়ে অধিক রাখা হয়েছে।

শিক্ষকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষন প্রয়োজন। বর্তমান যে প্রশিক্ষন ব্যবস্থা আছে তার ব্যাপক উন্নতি-পরিবর্তন দরকার। প্রয়োজনে একই সাথে শিক্ষা বিষয়ক পুর্ণাঙ্গ আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় চালু করা। যেখানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চতর পর্যায়ে শিক্ষার নানা বিষয়ের স্তরভিত্তিক ব্যাপক শিক্ষা-গবেষণা-প্রশিক্ষন হবে। শিক্ষার আন্তর্জাতিক মান তৈরীতে যে প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বর্তমান শিক্ষা সংস্কারের দু’টা গুরুত্বপূর্ণ দিক ১. পরীক্ষাপদ্ধতি ২. মাধ্যমিকে বিভাগ উঠিয়ে দেয়া। পরিবর্তনটা ইতিবাচক। পরীক্ষাপদ্ধতিতে যে ধারা চালু হবে, তাকে কার্যকর করতে, সেখান থেকে ভাল ফল পেতে, সমগ্র শিক্ষাকাঠামোকে প্রস্তত না করলে ফল মোটেই আশানুরুপ হবে না। পূর্বে বলেছি লেখাপড়ার যে চারটি প্রধান দিকে আছে, সেখানে হাত দিতে হবে। বিষয়টা এমন না যে, প্রচলিত পরীক্ষাপদ্ধতি ও মাধ্যমিকে বিভাজনের কারণেই শিক্ষার মান নেমে যাচ্ছে, প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। মাধ্যমিকে বিভাগ উঠিয়ে দিয়ে- শিক্ষার্থীদের কিছুটা স্বাধীনতা দেয়া হলেও’ লেখাপড়ার বিষয়সমুহকে সেই ছকের মধ্যেই রেখে দেয়া হলো। অবশ্য পাঠ্যের বাইরে- শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার বিষয়সমুহ চাপিয়ে না দিয়ে- তা নির্বাচনের স্বাধীনতা দিতে হবে। এতে ভাল-মন্দ দুই দিকই আছে। শিক্ষার্থীরা হয়তো পরীক্ষায় পাশের জন্য সহজ বিষয়সমুহ নিতে আগ্রহী হবে। সে বিষয় পর্যবেক্ষনে রাখতে হবে। শিক্ষাকে অধিক নাম্বার ও ভাল ফলের জায়গায় না রেখে, তাকে মানবিক মূল্যবোধ, ব্যবহারিক দক্ষতা ও পেশাভিত্তিক যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে পরিণত করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের কি পড়া উচিত, কতটা পড়া উচিত, সেটা নিয়ে বিতর্ক লক্ষ্য করছি। সেক্ষেত্রে আমার মত, সেটা নির্ধারণ হওয়া উচিত আমাদের দেশের শিক্ষার উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যত আর্থ-সামাজিক প্রবনতা ও গতি-প্রকৃতির সাথে সঙ্গতি রেখে। বিশ্বের কোন দেশে কি পড়ানো হয় সেটার অভিজ্ঞতা-তুলনা আসতে পারে কিন্তু তাকে সরাসরি অনুকরণ-অনুসরণ করা ঠিক হবে না। সবচেয়ে বড় বিষয় দেশে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কমছে। নতুন ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে বিজ্ঞান শিক্ষার্থী ও শিক্ষার মান কিভাবে বাড়বে সে আলাপ আবশ্যক। শিক্ষার উন্নত মান ও বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ব্যতিরেকে বর্তমান প্রতিযোগিতায় কোনভাবেই টিকে থাকা সম্ভব নয়।

লেখক- শিক্ষাউন্নয়নগবেষক, রাজনৈতিকবিশ্লেষক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়