সুজিৎ নন্দী: [২] রিহ্যাব নেতৃবৃন্দ বলেছেন, প্রস্তাবিত ড্যাপ (২০১৬-৩৫) এবং সংশ্লিষ্ট খসড়া ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০২১ বাস্তবায়িত হলে ভবনের আয়তন বর্তমানে যা অনুমোদন হচ্ছে তা থেকে কমপক্ষে ৩৩-৫৩ ভাগ আয়তন হ্রাস পাবে। ফলে ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে যাবে। অদৃশ্যই থেকে যাবে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের স্বপ্ন।
[৩] বক্তারা বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ হবেন সাধারণ ক্রেতা ও জমির মালিকসহ আবাসন ব্যবসায়িরা। যা নাগরিকদের মাঝে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।
[৪] রোববার সোনারগাঁও হোটেলে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই মতামত তুলে ধরেন রিহ্যাব নেতৃবৃন্দ।
[৫] লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল)। আরো আলোচনা করেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা, ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম (দুলাল), ভাইস প্রেসিডেন্ট লায়ন শরীফ আলী খানসহ বিভিন্ন পরিচালকরা।
[৬] রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, নির্মিতব্য ভবনের জন্য কমন ফ্যাসিলিটি, দাপ্তরিক ও অন্যান্য প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যয় সমূহ একই থাকার কারণে ফ্ল্যাট সমূহের মূল্য নুন্যতম ৫০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে যার ফলশ্রুতিতে ক্রেতাগণের ক্রয় ক্ষমতা যৌক্তিকভাবে কমে যাবে এবং আবাসন সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা ব্যহত হবে।
[৭] আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল আরো বলেন, ব্যাপকভাবে ভবনের আয়তন হ্রাসের ফলে সিরামিক, টাইলস, ইলেকট্রিক কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ, রড ইন্ডাস্ট্রিজ, সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, পাথর, বালি, পেইন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ সহ অন্যান্য ২৬৯ টি লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিজ সমূহ গভীর সংকটে নিমজ্জিত হবে।
[৮] রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, পূর্বে ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ মোতাবেক ২০ফিট রাস্তা সংলগ্ন ৫ কাঠা জমিতে সর্বনিন্ম গ্রাউন্ডফ্লোর সহ ৮ তলা ফ্লোর বিশিষ্ট ভবনে মোট ১৩ হাজার ৫শ’ বর্গফুট নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যেত, প্রস্তাবিত বিধিমালা মোতাবেক ৫ তলা ফ্লোর বিশিষ্ট মোট ৯ হাজার বর্গফুট ভবন নির্মাণ এর অনুমতি পাওয়া যাবে।
[৯] রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, ২০ ফুট এর চেয়ে ছোট রাস্তার ক্ষেত্রে নির্মিতব্য ভবনের উচ্চতা ৩ থেকে ৪ তলার বেশী হবে না এবং আয়তন উদ্বেগজনক ভাবে হ্রাস পায়। এরূপ চিত্র প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই। প্রস্তাবিত বিধির নির্দেশনার কারণে জমির মালিকগণের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেবে।
[১০] আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, নির্মাণ যোগ্য ফ্ল্যাট সংখ্যা সমূহ কমে আসার কারণে বাসা ভাড়া সীমাহীন ভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং বিভিন্ন স্থানে সাবলেট সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে যা নগরীতে একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি করবে। অন্যান্য নগরীতে ৫০ থেকে ৫৩ ভাগ ভবনের আয়তন হ্রাস করার কারণে আবাসনের চাহিদা মেটাতে ফসলী জমিতে ভবন তথা বাসাবাড়ীর নির্মাণের একটি প্রবনতা সৃষ্টি হবে।
[১১] তিনি আরো বলেন, এর কারণে কারণে সরকারের খাদ্য নিরাপত্তার সংকট দেখা দিবে, যা হবে জাতির জন্য একটি বিরাট বিপর্যয়।
[১২] রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ড্যাপ চূড়ান্ত অনুমোদন করা হবে বলে আমরা জেনেছি। স্টেক হোল্ডারদের পাশ কাটিয়ে, ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান এর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম কতটুকু সাফল্য আনবে তা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
[১৩] আলমগীর শামসুল আলামিন আরো বলেন, ঢাকা শহরে জনঘনত্ব কমিয়ে ঢাকাকে বসবাস যোগ্য নগরীতে রূপান্তর করতে আমরাও উৎসাহি কিন্তু জীবিকার জন্য, উর্পাজনের জন্য, চিকিৎসার জন্য, উন্নত শিক্ষার জন্য, বিচার সালিশের জন্য এ দেশের জনগণের কেন্দ্রীয় ঢাকাই এখনও পর্যন্ত একমাত্র কেন্দ্রস্থল। এই সুব্যবস্থা গুলো যতক্ষণ পর্যন্ত অন্যত্র তৈরি করা না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত ঢাকা শহরের জন্যসংখ্যা কমানো যাবে না।