মহসীন কবির: [২] ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত খবরে গত ১৫ দিনে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনা ঘটে। এ সংষর্ঘ হয়েছে ৮ জেলায়।
[৩] নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার ও ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন দুই জন। এছাড়াও এ ঘটনায় নারীসহ আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের রায়পুরা ও ভৈরব উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ২৬ অক্টোবর বুধবার রাতে উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের কাচারিকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- একই এলাকার হিরণ মিয়া (৪৮), সাজিব (২০)।
[৪] রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে সজিবুর রহমান নামে এক ইউপি (ইউনিয়ন পরিষদ) সদস্য নিহত হয়েছেন। ২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে কাপ্তাই নতুনবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া ১৭ অক্টোবর এই উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্রতিবেশী চিৎমরম ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যা করে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। ওই ঘটনার পর এই ইউনিয়নের নির্বাচন পিছিয়ে ২৮ নভেম্বর নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
[৫] ফরিদপুরের সালথায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে মারিজ সিকদার (৩৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ২৩ অক্টোবর দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
[৬] সিলেট শহরতলীর জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে আলা উদ্দিন ওরফে আলা (৪৫) নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহ ইসহাকের সমর্থক ছিলেন। ২৩ অক্টোবর দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
[৭] মাগুরা সদর উপজেলায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দলাদলির ঘটনায় প্রতিপক্ষের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। ১৫ অক্টোবর শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে উপজেলার জগদল ইউনিয়নের দক্ষিণ জগদল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের সাহাবাজ মোল্যার ছেলে সবুর মোল্যা, কবির হোসেন, চাচাতো ভাই রহমান মোল্যা এবং ইমরান। ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্খিত ও ন্যাক্কারজনক’ বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
[৮] এছাড়া অনেক এলাকায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সাতক্ষীরার সদর উপজেলার বৈকারী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১২ জন আহত হয়েছে। ২৭ অক্টোবর বিকেলে সদর উপজেলার ঘোনার কোয়ারপাড়ায় সংঘর্ষ হয়। আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
[৯] ২৪ অক্টোবর যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, এ ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর তার সমর্থকরা আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তবিবর রহমানের সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
[১০] তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) এবং ১০টি পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে আগামী ২৮ নভেম্বর। প্রথম ধাপে গত ২১ জুন ২০৪টি ইউপি ও ২০ সেপ্টেম্বর ১৬০টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৮টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ নভেম্বর।
আপনার মতামত লিখুন :