শিরোনাম
◈ জবির দুইজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে: ডিবি  ◈ খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে ২৫ মার্চের মধ্যে: আইনমন্ত্রী ◈ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লালকার্ড দেখালো জবি শিক্ষার্থীরা ◈ ঈদে যানবাহনে ছাদে, ট্রাক-পিকআপে যাত্রী নেয়া যাবে না: হাইওয়ে পুলিশ প্রধান ◈ নির্যাতন চালিয়ে সরকার অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না: মির্জা ফখরুল ◈ বুটেক্সকে তথ্য প্রযুক্তি ও বিশ্ব পরিস্থিতির বিবেচনায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ◈ স্বর্ণের দাম কমলো ◈ হলমার্ক কেলেঙ্কারির রায় ঘোষণার সময় পালিয়ে গেলেন জামাল উদ্দিন সরকার ◈ ২৯ কৃষি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ বাস্তব বিবর্জিত: দোকান মালিক সমিতি ◈ তিন মাসের মধ্যে সালাম মুর্শেদিকে বাড়ি ছাড়তে হবে: হাইকোর্ট 

প্রকাশিত : ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ০১:৪৯ রাত
আপডেট : ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ০১:৪৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জান্নাতুল মাওয়া আইনান: পুরুষদের নেতৃত্বে করা বিপ্লবে আমার আস্থা নেই!

জান্নাতুল মাওয়া আইনান
পুরুষ যখন সাহিত্য করে, তার চাকরিতে কম বেতনের দুঃখ লেখে, পকেটে সিগারেট কেনার টাকা নেই লেখে, সুন্দরী মেয়ে দেখলে হাঁ হয়ে তাকিয়ে থাকার কথা লেখে, স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার কথা লেখে তখন সেটা মধ্যবিত্তের সাহিত্য। নারীপুরুষ নির্বিশেষে সবাই সেই সাহিত্য পড়ে আর চোখের পানি মুছে। আর নারী যখন সাহিত্য করে, তার চাওয়া আর না পাওয়ার গল্প লেখে তখন সেটা হয়ে যায় ‘নারীবাদি সাহিত্য’। পুরুষরা সেসব পড়ে না, পড়লেও কাউকে বলে না যে পড়েছি। নারীরাও সবাই পড়ে না। ‘নারীবাদি সাহিত্য’ আবার একটা পড়ার জিনিস! কেন পুরুষদের গল্প সার্বজনীন হতে পারলো, আর নারীদের গল্প কেবল নারীদের মাঝেই রয়ে গেলো? কেন পুরুষেরা নারীদের গল্পগুলো জানতেই চায় না? এতো সংকীর্ণতার কারণ কী? কয়েকদিন আগে ‘উইম্যান এন্ড জেন্ডার ইন কুরআন’ কোর্সের আলোচনায় এই বিষয়টা উঠে এসেছিলো। আমরা আলোচনা করছিলাম, কেন মুসলিম নারী তাফসিরকারকদের তাফসিরগুলো কখনো মূলধারার আলোচনায় জায়গা করে নিতে পারেনি। এর অন্যতম একটা কারণ হলো, পুরুষ তাফসিরকারক আর গবেষকদের যেই চেইন বা সার্কেল তৈরি হয়েছে সেখানে নারীদের কোনো জায়গা নেই। গবেষকরা একে অন্যের তাফসির নিয়ে আলোচনা করছেন, সমালোচনা করছেন, যা-ই কিছু করেন না কেন এতে তাফসিরগুলো আলোচনায় থাকছে, মূলধারায় ধীরে ধীরে স্থান করে নিচ্ছে। অন্যদিকে নারীদের প্রশ্ন আর সমস্যাগুলোকে মূলধারার ইসলামি চিন্তবিদ্গণ, এমন কি যারা গবেষক তারাও কখনো গুরুত্ব দিয়ে দেখেননি। এই আলোচনা করতে করতেই মনে আসলো নারীদের লেখা বই পাঠে পুরুষদের অনীহার বিষয়টা।
আমেরিকান লেখক এলিজাবেথ গিলবার্টের বেশ জনপ্রিয় একটা বই ‘ইট প্রে লাভ’। মূলত এটা লেখকের নিজের জীবনের একটা অস্থির সময়ের গল্প। বইটার মূল পাঠক নারীরা। আমার পরিচিত কোনো ছেলে এই বইটা পড়ে নাই, বা পড়ার আগ্রহ দেখায়নি। আমি বলছি না যে ঠিক এই বইটাই একটা রসগোল্লা, অথবা এই বই না পড়লে জীবন বৃথা। এই বইটার কথা শুধু উদাহরণ হিসেবেই আনলাম।

মোটের ওপর নারীদের লেখা আত্মজীবনীগুলো পুরুষরা আগ্রহ নিয়ে পড়ে না। অথচ মেয়েরা পুরুষদের আত্মজীবনী পড়েও কোনো না কোনোভাবে কানেক্ট করতে পারে। এর মানে পুরুষেরা পাঠক হিসেবে সংকীর্ণমনা। তারা একজন নারীর জীবনের গল্প পড়তেও চায় না, পড়লেও কানেক্ট করতে পারে না। যাদের সঙ্গ আর ভালোবাসা তারা প্রার্থনা করে তাদের বিষয়ে জানার আগ্রহ কেন এতো কম? নারীদেরকে জানার জন্যেও তারা পড়ে পুরুষদের লেখা ‘মেয়েরা যেমন হয়’ মার্কা স্থুল টাইপের বইপত্র। সুতরাং, ধর্ম, সাহিত্য, সমাজ, আইন, রাজনীতি ইত্যাদি সকল কিছুতেই নারীরা নিজেদের জায়গা করে নেবার জন্যে যে যুদ্ধটা চালিয়ে যাচ্ছে তার প্রায় পুরোটা তারা একাই করছে। ইতোমধ্যেই এস্টাবলিশড একটা সিস্টেমে নিজের অবস্থান তৈরি করা, অথবা সিস্টেমটা ভেঙে ফেলা, অথবা প্যারালাল আরেকটা সিস্টেম তৈরি করা, এই কাজগুলোর কোনোটাই এতো সহজ নয়। পুরুষদের নেতৃত্বে করা বিপ্লবেও আমার আস্থা নেই। তারা তাদের বিপ্লবে নারীদের কথা বলেও না, ভাবেও না। এই লেখা পড়ে আবার আমাকে পুরুষবিদ্বেষী ভাববেন না। কারণ - ভালোবেসে দেখিয়াছি ছেলেমানুষেরে,/ অবহেলা ক’রে আমি দেখিয়াছি ছেলেমানুষেরে,/ ঘৃণা ক’রে দেখিয়াছি ছেলেমানুষেরে / ... তবু এই ভালোবাসা ধুলো আর কাদা। (কবিতাটা জীবনানন্দের। সে অবশ্য মেয়েমানুষের কথা বলেছে। আমি ছেলেমানুষের কথা কইলাম। বোধটা একই)। Jannatul Maoa Ainan’র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়