লিহান লিমা: [২] আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল মঙ্গলবার প্রকাশিত আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে এশিয়ার জন্য এই বছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করেছে। আইএফএফ এর সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, কোভিডের নতুন ঢেউ, পণ্য সরবরাহ শৃঙ্খলা ব্যাহত হওয়া এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ অর্থনীতিতে নেতিবাচক ঝুঁকি তৈরি করেছে। রয়টার্স
[৩]আইএফএফ বলেছে, চলতি বছর চীনের অর্থনীতি ৮ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৫.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু এই উত্তরণ হবে ‘ভারসাম্যহীন’। সেই সঙ্গে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের কোনো ধরণের ভুল বা অসময়ে গৃহীত নীতি এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতিতে মূলধন বহির্ভূত এবং উচ্চতর ঋণের বোঝা সৃষ্টি করবে।
[৪] আঞ্চলিক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এশিয়ার চলতি বছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এপ্রিল মাসের প্রক্ষেপণ থেকে ১.১ শতাংশ কমিয়ে ৬.৫ শতাংশ করেছে। টিকাদানের অগ্রগতির কারণে ২০২২ সালে এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এপ্রিলে দেয়া ৫.৩ শতাংশ থেকে ৫.৭ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
[৫]প্রতিবেদনে বলা হয়, এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক অঞ্চল হলেও এশিয়ার উন্নত অর্থনীতি, উদীয়মান বাজার অর্থনীতি এবং উন্নয়শীল অর্থনৈতিক দেশগুলোর মধ্যে পার্থক্য আরো গভীর হচ্ছে। মহামারী নিয়ে অনিশ্চয়তা, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যহত এবং মার্কিন নীতির স্বাভাবিকরণ থেকে সম্ভাব্য ছিটকে পড়ার আশঙ্কার কারণে ঝুঁকিগুলো আরো নেতিবাচক হচ্ছে। গত এক বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর গতিতে যাচ্ছে। রিয়েল এস্টেট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পুনরুদ্ধারের এই সময় নীতিনির্ধারকদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
[৬]ভারতের অর্থনীতি এই বছর ৯.৫ শতাংশ সম্প্রসারিত হবে বলে জানানো হয়েছে। উচ্চ প্রযুক্তি এবং পণ্য বৃদ্ধির ফলে অস্ট্রেলিয়া,দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং তাইওয়ানের মতো উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোও উপকৃত হবে বলে জানানো হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড ভাইরাসের বৃদ্ধি এবং পরিসেবা খাতের দুর্বলতার কারণে গুরুতর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। আইএমএফ বলেছে, আগামী মাসগুলোতে নতুন সংক্রমণের ঝুঁকি এখনো বড় উদ্বেগ হিসেবে রয়ে গিয়েছে।
[৭] আইএমএফ বলছে, আফগানিস্তানের অর্থনীতি এই বছর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হতে পারে। যাতে লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে পড়বে আর মানবিক সংকটের কারণ হবে। বড় ধরণের শরণার্থী ঢল আশ্রয়দাতা দেশগুলোর সরকারি সম্পদ ও শ্রম বাজারে চাপ তৈরি করতে পারে। সংস্থাটি বলছে, এই সংকট প্রতিবেশি দেশগুলোর পাশাপাশি তুরস্ক ও ইউরোপে প্রভাব ফেলতে পারে।
[৮]এশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি সুসংহত থাকার প্রত্যাশা করা হলেও বিশ্বব্যাপী মূল্য শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত, পণ্যের উচ্চ মূল্য এবং শিপিং খরচ মুদ্রাস্ফীতির উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। আইএমএফ বলেছে, এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশগুলোর স্থায়ী পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে আর্থিক সহায়তা বজায় রাখতে হবে। এবং যদি পুনরুদ্ধার প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুতগতি ঘটে বা মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেড়ে যায় সে পরিস্থিতিতে দ্রুত কাজ করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :