শিরোনাম
◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে  ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী ◈ দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েল ফসফসরাস বোমা হামলা ◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি

প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর, ২০২১, ০৫:০৫ সকাল
আপডেট : ২০ অক্টোবর, ২০২১, ০৫:০৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ন্যায্যমূল্য ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে পেশা ছাড়ছেন দেশি লবণ চাষিরা

নিউজ ডেস্ক: সারা দেশের মানুষের লবণের চাহিদা পূরণে লবণ উত্পাদনে কাজ করেন কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ৫৫ হাজার উত্পাদক। কক্সবাজারের ৯ উপজেলার সাতটি ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর কিছু অংশ নিয়ে প্রায় সাড়ে ৫৭ হাজার একর জমিতে লবণ চাষ হয়। সাগরের লবণাক্ত পানিকে মাঠে তুলে সূর্যের আলো ব্যবহার করে বিশেষ কায়দায় এসব লবণ উত্পাদন করা হয়। এ লবণ সংগ্রহ ও মেশিনে আয়োডাইজ করার পর সরবরাহ হয় সারা দেশে। ন্যায্যমূল্য ও সরকারের মূল্যায়ন না পেয়ে এ শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকেই লবণ উত্পাদন পেশা ছেড়ে ভিন্ন পেশায় যুক্ত হচ্ছেন। ইত্তেফাক

প্রতি বছরই চাহিদামতো বা চাহিদার অতিরিক্ত উত্পাদন হওয়ায় লবণ একটি স্বয়ংসম্পন্ন শিল্পপণ্যে পরিণত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে প্রতি কেজি তিন থেকে পাঁচ টাকায় কিনে প্রক্রিয়াজাতের পর বাজারে প্যাকেটজাত লবণ কেজি ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হলেও তৃণমূল চাষিরা ন্যায্যমূল্য পান না বলে অভিযোগ চাষিদের। তার ওপর একটি মুনাফালোভী শিল্পপ্রতিষ্ঠান গ্রুপের চক্র মিথ্যা তথ্যে সরকারের অনুমতি নিয়ে বিদেশ থেকে লবণ আমদানি করায় মার খাচ্ছে দেশীয় লবণচাষিরা।

কক্সবাজারের ঈদগাও উপজেলার উপকূলীয় গোমাতলীর লবণচাষি রিদুয়ানুল হক (২৯) বলেন, অন্যদের মতো ব্রিটিশ আমল থেকে আমাদের পরিবার লবণ উত্পাদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পূর্বপুরুষের পেশা বংশপরম্পরায় এখন আমরা করছি। এক একর ২০ শতক জমিতে লবণ চাষ করে ৯০০ মণ লবণ উত্পাদন হয়। বর্তমান বাজার দরে এক বস্তা (৮০ কেজি) লবণের দাম ৫৭০-৫৮০ টাকা করে পাওয়া যায় ২ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা। প্রায় ৯০ হাজার টাকা চলে যায় পরিবহন ও ঘাট বা গুদি খরচে। সে হিসেবে উত্পাদিত লবণ বিক্রি করে পাওয়া টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু লবণ উত্পাদনে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ পড়লে আয়-ব্যয়ে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা ঘাটতি থাকছে। আরেক লবণ ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিন বলেন, আগে উপকূলের ৮০ শতাংশ মানুষ লবণের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে আসলেও ক্রমাগত ক্ষতির দেনার মুখে পড়ে অনেকে পুরোনো পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ লবণচাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, মাঠ থেকে লবণ কেনায় যারা জড়িত সে ব্যবসায়ীরা একীভূত হয়ে লবণের দাম নির্ধারণ করেন। সরকারি নির্দেশনায় উত্পাদিত লবণ বিক্রি করতে না পেরে ক্ষতির মুখেই পতিত হন প্রান্তিক চাষি বা লবণ উত্পাদকরা। এছাড়াও, দেশে উত্পাদিত লবণ চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকার পরও অসাধু মিলমালিক ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বিদেশি লবণ আমদানি করেন। ফলে লবণচাষিরা চূড়ান্তভাবে ক্ষতির মুখে পড়েন।

বাংলাদেশ লবণ মিলমালিক সমিতির সহসভাপতি আবদুল কাদের মাস্টার বলেন, ২০২১ সালে দেশে লবণের চাহিদা ছিল ২২ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু উত্পাদন হয়েছে ১৭ লাখ মেট্রিক টন। এ সুযোগে ইন্ডাস্ট্রিয়াল লবণের কথা বলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সোডিয়াম সালফেট এনে তা খাবার লবণ বলে বাজারজাত করছে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কক্সবাজার জেলা ম্যানেজার (ডিএম) জাফর ইকবাল জানান, দেশে ২০২১ সালে লবণের চাহিদা নির্ধারণ হয় ২২ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন। ২০২১ মৌসুমে লবণ উত্পাদন হয়েছে ১৬ লাখ ৫১ হাজার টন। তবে ২০২০ সালে ৩ লাখ ৪৮ লাখ টন লবণ উদ্বৃত্ত ছিল। এ বছর নিয়মিত ব্যবহারের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে সাড়ে ৪ লাখ, মিলকারখানায় দেড় লাখ এবং বিভিন্ন খুচরা মজুতদারের কাছে জমা অন্তত ১ লাখ টন মিলে প্রায় ৭ লাখ টন লবণ মজুত আছে। লবণ আমদানি বন্ধে সোডিয়াম সালফেট বা অন্য লবণ আমদানিতে সরকার আগের তুলনায় তিন গুণ কর বাড়িয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়