সুজন কৈরী: [২] ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের চেলেরঘাট এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পলাতক থাকা বাস চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তার চালকের নাম আনসার আলী (৩৬)। তিনি শেরপুরের ঝিনাইগাতীর প্রতাব নগরের মৃত লাল মামুনের ছেলে।
[৩] সোমবার সকালে সিআইডির এলআইসির একাধিক টিম নরসিংদীর মনোহরদীর গোতাশিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্যাপার এম. এ রহিম নামের ওই বাসটির (ঢাকা মেট্রো ব-১১-০১৪৮) চালককে গ্রেপ্তার করে।
[৪] এ বিষয়ে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার এলআইসির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা বিকল ট্রাকে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই পাঁচ জন মারা যান। গুরুতর আহত ১০/১২ জনকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে দুই জন শিশু, দুই জন নারী ও তিন জন পুরুষ। এর মধ্যে একই পরিবারের চার জন। তারা হলেন- আজমল মন্ডল ওরফে ফজু (৩৫), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৫), তাদের ছেলে আমানুল্লাহ (৫), মেয়ে মারিয়া আক্তার ওরফে আজমিনা (৮)। এছাড়া ফজলুল হকের শ্বশুর নজরুল ইসলাম (৫৫) এবং সিরাজ (৩৫) ও হেলেনা (৪০) মারা যান।
[৫] ওই ঘটনায় বাস ও বিকল ট্রাকের অজ্ঞাতনামা চালকদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানায় মামলা (নং-১১/৩০৯) হয়। সড়ক পরিবহন আইনে দায়ের হওয়া মামলার প্রেক্ষিতে সিআইডি ঘটনাটির ছায়া তদন্ত ঘাতক বাস চালককে গ্রেপ্তার করা হয়।
[৬] জিজ্ঞাসাবাদে বাস চালক জানান, গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা মহাখালী টার্মিনাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৪২জন যাত্রী নিয়ে শেরপুরের ঝিনাইগাতী বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয় স্যাপার এম. এ রহিম বাসটি। একই সময়ে একই স্থান থেকে সৌখিন পরিবহনের একটি বাস প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হয়। প্রায় পুরো রাস্তাতেই তারা প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালাতে থাকেন।
[৭] ত্রিশালের চেলেরঘাট এলাকায় পৌঁছালে সৌখিন পরিবহন ও স্যাপার এম. এ রহিম বাসের মধ্যে প্রতিযোগিতার একপর্যায়ে স্যাপার এম. এ রহিম পরিবহনের বাসটি দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ওভারটেক করতে গিয়ে রাস্তায় পার্কিংরত বিকল ট্রাকে জোরে ধাক্কা দিলে মুহূর্তেই বাসটি ধুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পরই ঘাতক বাস চালক আনসার আলী পালিয়ে যান।
আপনার মতামত লিখুন :