ইফতেখায়ের আলম: [২] রাজশাহী নগরীর উপকন্ঠ বায়া বাজার জামে মসজিদের সামনে কিছু নিরীহ ব্যক্তির পৈত্রিক সম্মত্তির একটি আধাপাকা মার্কেট স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি মসজিদের নাম ভাঙ্গিয়ে দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মসজিদের পাশে এক ব্যাটারী ব্যবসায়ীর অর্থের বিনিময়ে কিছু প্রভাবশালী অসাধু ব্যক্তি এ জমি দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন জমির মালিকের ওয়ারিশান সন্তানরা।
[৩] এ ব্যাপারে তারা ন্যায় বিচারের স্বার্থে প্রভাবশালীরা যাতে বেআইনীভাবে তাদের সম্পত্তিতে জোরপূর্বক দখল নিতে না পারে বা দোকান ঘর ভাঙ্গচুর করতে না পারে সেই মর্মে ব্যাটারী ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলামসহ ১০জনকে বিবাদী করে রাজশাহী জেলা সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেছেন।
[৪] মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক বিবাদীগণকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। আগামী ২ জানুয়ারী আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
[৫] এরপরও বিবাদিগণ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদান ও মানববন্ধনের নামে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি প্রদান অব্যাহত রাখে। এতে বাদি পক্ষ পুণরায় ১৩ অক্টোবর রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেন।
[৬] আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলার এয়ারপোর্ট থানার বায়া বাজারের নালিশী সম্পত্তির এস.এ ১০৮ নম্বর খতিয়ানের রেকর্ডীয় প্রজা ছিলেন কাচু বেওয়া। তিনি তাহার সম্পত্তি ভোগ দখলে থাকা অবস্থায় ১৯৬৪ সনের ১৫ সেপ্টেম্বর ১৩১১৯ নম্বর বিক্রয় কবলা দলিল মূলে নালিশী .০৩৩০ একর সম্পত্তি কিয়ামত উল্লাহ নামের এক ব্যক্তির নিকট বিক্রয় করে দেন। কিয়ামত উল্লাহ তাহার খরিদ করা সম্পত্তি ভোগ দখলে থাকা অবস্থায় ১৯৬৫ সনের ১৪ ডিসেম্বর ১৯৮৯৯ নম্বর দলিল মূল্যে ০৩৩০একর সম্পত্তি মুন্সি আব্দুল বারীর নিকট বিক্রয় করিয়া দেয়।
[৭] পরবর্তীতে ১৯৬৬ সনের ১৪ অক্টোবর ২০১১৩ নম্বর বন্টন নামা দলিলে নালিশী সম্পত্তি মুন্সি আব্দুল বারী তাহার চার পুত্র আব্দুল আলীম, আব্দুর রউফ, আব্দুল হক এবং আব্দুল মান্নানকে প্রদান করেন। বিগত আর. এস জরীপে আর.এস ৩৫ নম্বর খতিয়ানে উক্ত চার ভ্রাতার নামে রেকর্ড হয় কিন্তু তাহাদের খরিদ সম্পত্তি .০৩৩০ একরের স্থলে ভুলভাবে .০২ একর হিসেবে আর.এস ১নং দাগ উল্লেখে বিক্রেতা কাচু বিবির অন্যান্য রের্কড হয়। তথাপি উক্ত চার ভ্রাতা তাহাদের সম্পত্তি ভোগ দখল করতে থাকেন।
[৮] পরবর্তীতে চার ভাই আর.এস খতিয়ানের বিষয় সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর বাদী হয়ে অত্র আদালতে ৩৪৮/৯৩ অঃ প্রঃ মোকদ্দমা করেন। যা দোতরফা সূত্রে ১৯৯৯ সনের ৫মে .০৩৩০ একর সম্পত্তি বাবদ ডিক্রী হয়। বর্তমানে বাদিগণ নালিশী .০৩৩০ একর সম্পত্তি ওয়ারিশ, খরিদ এবং বন্টননামা মতে মালিক হয়ে তাদের পূর্বপুরুষের খরিদকাল হতে দোকান ঘর নির্মান করে অদ্যবধি বিবাদীগণসহ সকলের জ্ঞান ও জ্ঞাতসারে প্রায় ৬০ বছর যাবৎ ধারাবাহিকভাবে ভোগ-দখল করে আছে। এ অবস্থায় বিবাদীগণ গত চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখে নালিশি সম্পত্তির আসে-পাশে উপস্থিত হয়ে মাপজোক করতে থাকেন এবং নালিশি সম্পত্তিতে তাদের সম্পত্তি প্রাপ্ত হবেন বলে দখল নেয়ার প্রকাশ্য হুমকি প্রাদন করেন।
[৯] কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতির কারণে বিবাদীগণ সম্পত্তি জোর পূর্বক দখল নিতে পারেনি। বিবাদীগণের অব্যাহত হুমকি থাকার কারণে বাদীগণ বাধ্য হয়ে নালিশি সম্পত্তি বাবদ চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার ডিক্রীর প্রার্থনায় অত্র মোকদ্দমা করেছেন। এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইন্তাজ আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।