শিরোনাম
◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের সাক্ষর  ◈ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের  ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা  ◈ হিট স্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১৬ অক্টোবর, ২০২১, ০৪:০৯ দুপুর
আপডেট : ১৬ অক্টোবর, ২০২১, ০৭:৪২ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফের বিটকয়েনের দাম ৬০ হাজার ডলার ছুঁয়েছে

রাশিদ রিয়াজ : গত ৬ মাসে প্রথমবারের মতো শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৬০ হাজার ডলার ছুঁয়েছে। এপ্রিল মাসের পর থেকে এটির দাম ৬০ হাজার ডলারের কাছে ঘেঁষতে পারেনি। তবে এবার ৪.৫ শতাংশ দাম বাড়ায় বর্তমান দাম দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ৩০ ডলারে। ইউএস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) আগামী সপ্তাহে প্রথম ইউএস বিটকয়েন ফিউচার ইটিএফ (এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) ট্রেডিং শুরু করার অনুমতি দিতে প্রস্তুত, এমন খবর চাউর হওয়ার পরপরই বিটকয়েনের দর ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। গত ২০ সেপ্টেম্বরের পর থেকেই দামের এই ঊর্ধ্বমুখিতা শুরু হয়। বিটকয়েনের ইতিহাসের এর সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ৬৪ হাজার ৮৯৫ ডলারে। বর্তমানে সেই রেকর্ড ভাঙার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বিটকয়েনের দাম। গত মার্চের মাঝামাঝি বিটকয়েনের মূল্য প্রথমবারের মতো ৬০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। ভার্চুয়াল এই মুদ্রাবাজারের সর্বমোট মূল্য তখন ১ দশমিক ১৪ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। ওই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের করোনা প্যাকেজ পাসের কারণেই রেকর্ড উত্থান ঘটে বিটকয়েনের। বাইডেন প্রশাসন তখন ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলারের করোনা বিল কংগ্রেসে পাস হয়। আরটি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রোশেয়ার, ইনভেস্কো, ভ্যানএক, ভ্যাকইয়ারি,গ্যালাক্সি ডিজিটালের মত স্বনামধন্য বিনিয়োগ কোম্পানিগুলো বিটকয়েনে লেনদেন শুরু করতে যাচ্ছে। এরফলে অন্যান্য ডিজিটাল মুদ্রার বৈধ লেনদেনের সুযোগ বেড়েছে। বিটকয়েন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা কেটে যাবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। ব্রোকারেজ ফার্ম কয়েনবেস ও রবিনহুড বিটকয়েনে লেনদেন শুরু করতে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে বিটকয়েনের মূল্য ৫০ হাজার ডলার উঠে যায়। এরপর জর্জ সরোস বিটকয়েনে বিনিয়োগের ঘোষণা দিলে তা ৫৫ হাজার ডলারে ওঠে। গত বছর প্রায় ৬৫ হাজার ডলার মূল্য থেকে বিটকয়েনের দাম মাত্র ৫ শতাংশ দূরে রয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েল ও এসইসির প্রধান গ্যারি জেন্সলার বলেছেন চীনের মত ক্রিপ্টোকারেন্সির বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। তবে আইএমএফ’র সভায় গত সোমবারও বিটকয়েন সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে।

গত বছরের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত এই ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম বেড়ে তিন গুণ হয়েছে। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিশ্লেষকেরা এটাও বলছেন, অর্থ প্রদানের মাধ্যম হিসেবে বিটকয়েনের গ্রহণযোগ্যতা ব্যাপক বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে এর পেছনে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। মাস্টারকার্ডও নির্দিষ্ট ক্রিপ্টোকারেন্সি অর্থ প্রদানের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করারও পরিকল্পনা করছে। বিশ্বের বৃহত্তম সম্পদ ব্যবস্থাপক ব্ল্যাকরকও ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহারের উপায় খুঁজছে। এ ছাড়া কোভিড-১৯ মহামারিও বিটকয়েনের দাম বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রেখেছে, কারণ ব্যাপকভাবে অনলাইন কেনাকাটা ও অনলাইনে অর্থ প্রদানের দিকে ঝুঁকছে মানুষ।

ক্রিপ্টোকারেন্সি নিউজ সাইট কয়েনডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, বিটকয়েন গত বছর ২৮ হাজার ৯০০ ডলারে লেনদেন শুরু করেছিল। জানুয়ারির শুরুতে দাম ৪০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। পরে আবার কমে ৩০ হাজারে নামে। পরে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার বিনিয়োগের পর আবারও দাম বাড়তে থাকে দাম। ১৬ ফেব্রুয়ারি ৫০ হাজার ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে বিটকয়েন। ২১ ফেব্রুয়ারি ৫৮ হাজার ডলারে পৌঁছায়। এরপর ৬০ হাজারের মাইলফলক পার করে বিটকয়েন।

মার্কিন বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি কোম্পানি টেসলার প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ককে ডিজিটাল মুদ্রার অন্যতম প্রবক্তা বলা হয়। তবে সমালোচকেরা মনে করেন, বিটকয়েন অর্থ হিসেবে কম এবং এটি একধরনের অনুমানমূলক ট্রেডিং সরঞ্জাম, যা দিয়ে বাজারে কারচুপি করা সহজ। ২০০৯ সালে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামের কেউ কিংবা একদল সফটওয়্যার ডেভেলপার নতুন ধরনের ভার্চ্যুয়াল মুদ্রার প্রচলন করে। এ ধরনের মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সি নামে পরিচিতি পায়। নাকামোতোর উদ্ভাবিত সে ক্রিপ্টোকারেন্সির নাম দেওয়া হয় বিটকয়েন। বিটকয়েন লেনদেনে কোনো ব্যাংকিং ব্যবস্থা নেই। ইলেকট্রনিক মাধ্যমে অনলাইনে দুজন ব্যবহারকারীর মধ্যে সরাসরি (পিয়ার-টু-পিয়ার) আদান-প্রদান হয়। লেনদেনের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করা হয় ক্রিপ্টোগ্রাফি নামের পদ্ধতি। প্রচলিত পদ্ধতিতে ২ কোটি ১০ লাখ বিটকয়েনের প্রচলন সম্ভব। অর্থাৎ সরবরাহ সীমিত। সে জন্যই বিটকয়েনকে স্বর্ণের সঙ্গে তুলনা করা হয়। খনি থেকে উত্তোলনের একপর্যায়ে গিয়ে যেমন স্বর্ণের সরবরাহ শেষ হয়ে যাবে। এরপর উত্তোলিত স্বর্ণের বিকিকিনি হতে পারে। তবে নতুন করে উত্তোলনের সুযোগ থাকবে না। বিটকয়েনের ধারণাও তা-ই। অ্যালগরিদমের সমাধানের মাধ্যমে বিটকয়েন ‘উত্তোলন’ করতে হয়, যা বিটকয়েন মাইনিং হিসেবে পরিচিত। আর বর্তমান হারে চলতে থাকলে ২ কোটি ১০ লাখ বিটকয়েন মাইনিং করতে ২১৪০ সাল লেগে যাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়