শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৬ অক্টোবর, ২০২১, ০২:৫৬ রাত
আপডেট : ১৬ অক্টোবর, ২০২১, ০২:৫৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

লেলিন চৌধুরী: ‘সাম্প্রদায়িকতা দমন কমিশন’ চাই

লেলিন চৌধুরী: দেশে প্রতিবছর বিভিন্ন অজুহাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করা হয়। নানা ছুঁতায় সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে সংঘাতের উসকানি দেয় একদল ধর্মান্ধ স্বার্থান্ধ মানুষ। তারা ধর্মরক্ষার নামে সংখ্যালঘুদের সম্পদ, সম্ভ্রম ও জীবন ধ্বংস ও লুট করে। যে/যারা এই ঘৃণ্য কাজটি করে তাদের কোনো ধর্মপরিচয় থাকতে পারে না। তারা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বা অন্য কোনো ধর্মের অনুসারী নন। আমরা জানি ধর্মবোধ এবং হিংসা কারও হৃদয়ে সহাবস্থান করতে পারে না। ওইসব মানুষরূপী বর্বরদের একটাই পরিচয় তারা দুষ্কৃতকারী, তারা আঁধারবাসী অশুভ প্রেত। তাদের কাজে মনুষ্যত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মানবতা লাঞ্ছিত হয়। তাদের দমন করা হচ্ছে সভ্যতার প্রথম শর্ত।

গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার একটি পূজাপে পবিত্র কোরআন রেখে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনাটির বিষবাষ্পীয় প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নানা জায়গায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানের পূজামপে ভাঙচুর হয়েছে, মানুষের বসতবাড়িতে হামলা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে নানা ধরনের গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই গর্হিত কাজটির হোতা অশুভ চক্রটিকে অতিদ্রত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। বছরের পর বছর ধরে সাম্প্রদায়িকতাকে বিভিন্ন গোষ্ঠী নানা কৌশলে লালন করে আসছে। সম্প্রীতিবিনাশী কোনো ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরই কেবল প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সক্রিয় হয়, কর্তাব্যক্তিদের টনক নড়ে। এতে সে ঘটনাটিকে সামাল দেওয়া যায় মাত্র। কিন্তু তাতে স্বজন ও সম্পদ হারানো মানুষের কিছু যায় আসে কি? সাম্প্রদায়িকতাকে দমন করতে প্রতিক্রিয়ামূলক নয় প্রতিরোধী কার্যক্রম সারাবছর জারি রাখতে হবে। সেটিই আমাদের বিদ্যমান দেশীয় বাস্তবতা।

সবকিছু বিবেচনা করে দেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের আদলে একটি ‘সাম্প্রদায়িকতা দমন কমিশন’ স্থাপন করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এই কমিশনের মূল দায়িত্ব হবে- [১] দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ জারি রাখা। সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার ন্যূনতম সম্ভাবনা তৈরি হলে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ২. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রেক্ষাপট ও কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো দূর করার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা। [৩] সংঘটিত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রত বিচারের মুখোমুখি করা। [৪] জনসাধারণের দায়ের করা অভিযোগের যৌক্তিক সময়ের মধ্যে তদন্ত করা। ‘সাম্প্রদায়িকতা দমন কমিশন’ গঠন করা অত্যন্ত জরুরি একটি প্রয়োজন। বিষয়টি দেশের অগ্রগতি, উন্নয়ন এবং দেশবাসীর মানবাধিকার রক্ষার সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে।
লেখক : শিশু অধিকার, স্বাস্থ্য ও পরিবেশকর্মী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়