শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর, ২০২১, ০১:০৪ রাত
আপডেট : ১১ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৪২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মোজাফ্ফর হোসেন: পাকিস্তান সাহিত্য সংসদের সভাপতি কাজী মোতাহার হোসেনই ১৯৫৪ সালের এপ্রিল মাসে সংবাদপত্রে বিবৃতি দিয়েছিলো

মোজাফফ্র হোসেন: ‘বিজ্ঞান ও যুক্তির সঙ্গে সংঘর্ষে ধর্মের আনুষঙ্গিক বিশ্বাসগুলোর যদি একটু পরিবর্তন হয়, তবে তা দূষণীয় নয় বরং সেইটিই প্রয়োজন’ [ধর্ম ও সমাজ : সঞ্চরণ] কথাটি বলেছেন বাংলাদেশের প্রথম পরিসংখ্যানবিদ, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, দাবাড়–, বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ক লেখক, সাহিত্যিক, সমাজচিন্তক এবং শখের গায়ক ও অনুবাদক কাজী মোতাহার হোসেন। মোতাহার হোসেন বিশ্বাসী মানুষ ছিলেন। ধর্মাচরণে শৈথিল্য না আসলেও ধর্মান্ধ তিনি ছিলেন না। তিনি ধর্মকে উপলব্ধির বিষয় ও অন্তরের সম্পদ বিবেচনা করতেন। তাই ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারকে তিনি কখনো অনুমোদন করেননি।

তাকে আমরা বলতে শুনি : ‘সচরাচর আমাদের ধর্ম মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে স্বার্থসিদ্ধির ব্যাপারে অজ্ঞদিগের ধর্মোন্মত্ততা সৃষ্টি করে তার সুযোগ মতলব হাসিল করে নেওয়ার জন্য ভোট সংগ্রহ বা পার্টি গঠন দ্বারা প্রভুত্ব ও প্রতিপত্তি লাভ করার উদ্দেশ্যে। আজকাল তাই দেখা যায়, ধর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনীতির একটি প্রধান অস্ত্র। কিন্তু প্রকৃত ধর্ম যে এর থেকে স্বতন্ত্র বস্তু এ কথা যেন আজকাল আমরা বুঝেও বুঝতে চাচ্ছিনে’ [বাংলা ভাষার নতুন বিন্যাস : কাজী মোতাহার হোসেন]।

সংস্কৃতিসচেতন একজন আদর্শ বাঙালি ছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন। পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা না দেওয়াতে ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘রাষ্ট্রভাষা ও পূর্ব পাকিস্তানের ভাষাসমস্যা’ প্রবন্ধে তিনি লিখেছিলেন ‘... ধূমায়িত অসন্তোষ বেশি দিন চাপা থাকতে পারে না। শীঘ্রই তাহলে পূর্ব-পশ্চিমের সম্বন্ধের অবসান হবার আশঙ্কা আছে।’ ১৯৬১ সালে প্রতিক‚ল পরিবেশের মধ্যেও তিনি রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকী পালনে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেন। ১৯৬৭ সালে বেতার ও টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তান সাহিত্য সংসদের সভাপতি হিসেবে তিনিই প্রথম বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পহেলা বৈশাখকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণার দাবি জানিয়ে ১৯৫৪ সালের এপ্রিল মাসে সংবাদপত্রে বিবৃতি প্রদান করেন।

কলকাতায় শরৎন্দ্রের সঙ্গে দাবা খেলার এক ফাঁকে তিনি মন্তব্য করেছিলেন ‘শরৎসাহিত্যে মুসলিম সমাজচিত্র একেবারেই অনুপস্থিত যদিও মুসলমানরা এ দেশের বিরাট একটা অংশজুড়ে হিন্দুদের পাশাপাশি অবস্থান করে আসছে।’ এরপর শরৎচন্দ্র লিখলেন তার একমাত্র মুসলিম সমাজচিত্র, বিখ্যাত ছোটগল্প ‘মহেশ’। সাহিত্যকে হিন্দুকরণ বা ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে কাজী মোতাহার হোসেন বলেছিলেন, ‘...জলকে পানি বলে উল্লেখ করলে সাহিত্যের জাত যাবে না জাত যাবে যদি জলচৌকিকে পানিচৌকি, পানিপথকে জলপথ, জলযোগকে পানিযোগ, জলপানিকে পানিপানি বা পাণিপ্রার্থীকে যদি জলপ্রার্থী করা হয়।’ ১৯৮১ সালের ৯ অক্টোবর মারা যান তিনি। লেখক: কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়