শিরোনাম
◈ ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের পাঁচজন ◈ স্থায়ী জামিন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছি ড. ইউনূসের আইনজীবী ◈ উপজেলার ভোটে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছে: ওবায়দুল কাদের  ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘন: ড. ইউনূসসহ ৪ জনের জামিন ২৩ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি ◈ ময়মনসিংহে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২৬ ◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ১৩  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান ◈ সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘনের সাজাপ্রাপ্ত মামলায় স্থায়ী জামিন চাইবেন ড. ইউনূস ◈ স্বাস্থ্যখাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী 

প্রকাশিত : ০৬ অক্টোবর, ২০২১, ০১:২৬ রাত
আপডেট : ০৬ অক্টোবর, ২০২১, ০১:২৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রভাষ আমিন: ক্লিন ফিড সম্প্রচারের সিদ্ধান্তে যেন সরকার অটল থাকে

প্রভাষ আমিন: বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনের বড় একটা বাজার দখল করে নিয়েছিলো ভারতের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল। বিজ্ঞাপনদাতাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। তারা যেখানে দর্শক বেশি, সেখানেই পণ্যের বিজ্ঞাপন দেবেন। বাংলাদেশে ভারতের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের একটা বড় দর্শক শ্রেণি আছে। এখানে দায়িত্ব হলো সরকারের। সরকার দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোর স্বার্থ সুরক্ষায় নীতি সহায়তা দেবে, এটাই প্রত্যাশিত। উন্মুক্ত আকাশ, মুক্তবাজার অর্থনীতি ইত্যাদি অজুহাতে বরাবরই বঞ্চিত হচ্ছিলো দেশীয় টিভি স্টেশনগুলো। আর বাংলাদেশের স্যাটেলাইট টিভিগুলো জিম্মি হয়েছিলো কেবল অপারেটরদের কাছে। কোনো কারণে বনিবনা না হলেই অপারেটররা কোনো একটি স্টেশনকে পেছনে ফেলে রাখতো, যাতে দর্শকরা দেখতে না পায়। বর্তমান সরকার এই বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এখন বাংলাদেশি চ্যানেলগুলো তাদের প্রতিষ্ঠার তারিখ অনুযায়ী সম্প্রচারিত হয়।

পত্রিকাগুলোর তবু বিক্রি করে কিছু টাকা আসে। কিন্তু টেলিভিশনগুলোর আয়ের একমাত্র উৎস বিজ্ঞাপন। কেবল অপারেটররা দর্শকদের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে টাকা নিলেও তার কোনো ভাগ টিভি চ্যানেলগুলো পায় না। তার ওপর দেশের বিজ্ঞাপনের বড় একটা বাজার পাশের দেশের বিভিন্ন চ্যানেলে চলে যাওয়ায় দেশের চ্যানেলগুলো অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছিলো। এই সমস্যা সমাধানে সরকার ২০১৬ সালে সম্প্রচার আইনে বিদেশি চ্যানেলগুলোর ক্লিন ফিড মানে বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচারের বিধান করে। কিন্তু এতোদিন সে বিধান কার্যকর ছিলো না। ১ অক্টোবর থেকে ক্লিন ফিড সম্প্রচারের বিধানটি কার্যকর করে। টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকোসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনও সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে পহেলা অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ রেখেছে। কারণ তাদের হাতে ক্লিন ফিড নেই। তাতে সাধারণে ধারণা হয়েছে, সরকার বুঝি বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু আদতে সরকার তেমন কিছু করেনি। সরকার শুধু বিদেশি চ্যানেলের ক্লিন ফিড সম্প্রচার বাধ্যতামূলক করেছে। আর ক্লিন ফিডের ধারণা কিন্তু নতুন নয়। ইউরোপ-আমেরিকায় কিন্তু বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর ক্লিন ফিডই সম্প্রচারিত হয়। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপালেও বিদেশি চ্যানেলের ক্লিন ফিড সম্প্রচারিত হয়।

বাংলাদেশ বরং অনেক দেরিতে এই বিধান কার্যকর করছে। তবে কেবল অপারেটরা বিদেশি চ্যানেল বন্ধ রেখে সরকারের ওপর একধরনের চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে। একদম সাধারণ দর্শকরাও বিদেশি টিভি চ্যানেল দেখতে না পেয়ে বঞ্চিত হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো, বিদেশি চ্যানেলের ক্লিন ফিড নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার? চাইলে বিদেশি চ্যানেলগুলো বাংলাদেশের অপারেটরদের ক্লিন ফিড সরবরাহ করতে পারে। তারা যদি না দেয়, তাহলে বাংলাদেশের অপারেটরদের দায়িত্ব বিদেশি চ্যানেলের অনুষ্ঠান ডাউনলোড করে বিজ্ঞাপনমুক্ত করে তা সম্প্রচার করা। এর জন্য বাড়তি ব্যয় হবে, এই অজুহাতে কেবল অপারেটররা তা করতে রাজি নয়। তারা বরং বিদেশি চ্যানেল বন্ধ রেখে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চায়। যদিও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, কোনো চাপের কাছেই নতি স্বীকার করবে না সরকার। বাংলাদেশের কেবল অপারেটররা এতোদিন প্রায় মুফত ব্যবসা করছিলো।

এখন ব্যবসা করতে হলে কিছু বিনিয়োগও করতে হবে। সেটা নিয়ে তারা সরকারের সঙ্গে কথা বলতে পারে, প্রণোদনা চাইতে পারে। কিন্তু বিদেশি চ্যানেল বন্ধ রাখা কোনো সমাধান নয়। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জানিয়েছেন, বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচারের ফলে এই খাতে সরকার ২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো দাবি করেছে বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচারের ফলে বাংলাদেশের টিভি স্টেশনগুলো ১২০০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন থেকে বঞ্চিত হয়। বিজ্ঞাপন পাচার বন্ধ হলে দেশি স্টেশনগুলো নতুন নতুন বিনিয়োগ করতে পারবে, তাদের আয় বাড়বে, কন্টেন্টের কোয়ালিটি বাড়বে। সরকার বা টিভি স্টেশন নয়, শেষ বিচারে লাভবান হবে দর্শকরাই। সম্প্রচারকর্মী হিসেবে আমাদের দাবি, ক্লিন ফিড সম্প্রচারের সিদ্ধান্তে যেন সরকার অটল থাকে। এখন কেবল অপারেটরদেরই ক্লিন ফিড নিশ্চিত করতে হবে। এই ক্লিন ফিডেই যেন ক্লিন হয়ে যায় বাংলাদেশের স্যাটেলাইট চ্যানেলের সব বঞ্চনা। লেখক: হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়