আমিরুল ইসলাম: অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, শেয়ারবাজারের বতর্মান অবস্থা ভালো। কিন্তু কিছু শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়েছিলো। সেগুলো এখন কারেকশন হচ্ছে। যেমন বীমা কোম্পানির শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়েছিলো গত মার্চ-মে পর্যন্ত, এখন সেগুলো কারেকশন হয়ে যাচ্ছে। এখন যে অবস্থা আছে, এমন থাকলে বিপর্যয়ের দিকে যাবে না শেয়ারবাজার। তবে বুঝেশুনে শেয়ার ক্রয় করতে হবে। বিনিয়োগকারীরা যদি জুয়াখেলায় মত্ত হয়ে গুজবে কান দেন, তাহলে তারা গুজবের শিকার হবেনই। বিনিয়োগকারীেেদর শেয়ার সম্পর্কে জানতে হবে। ডে-ট্রেডার নয়, তাদের ইনভেস্টমেন্টে যাওয়া উচিত। বর্তমানে ৮০ শতাংশ বিনিয়োগকারীই ডে ট্রেডার। যারা লম্বা সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে চায় তারাই উইন করে। সারা পৃথিবীর শেয়ারবাজারেই এমনটা দেখা গেছে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন তাদের কাজ সঠিকভাবে করে যাচ্ছেন, খেয়ালও রাখছেন। কিন্তু মার্কেট তো মার্কেটের মতো চলে। মার্কেটে যদি জুয়া হয় তাহলে কমিশন এখানে কিছু করতে পারে না। এক্সচেঞ্জ কমিশন তাদের তদারকি করছে। তবে সব তদারকি যে মনঃপুত হবে তা নয়। নতুন বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা নিয়ে তারপর বিনিয়োগ করা উচিত। যে কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করবে তার পেছনের অবস্থা ও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে। একেবারে না জেনে শেয়ার কিনতে এলে ধরা খাবেই। একাউন্ট, ফাইনান্স, ম্যানেজমেন্ট এর একটা বিরাট অংশ ও অর্থনীতির একটি ক্ষুদ্র অংশ শেয়ারবাজার।
কিছু না জেনে শেয়ার ক্রয় করতে আসা লোকের পরিমাণই এখন বেশি। এমন লোক আসলে হবে না। এতো সহজ হলে ওয়াল স্ট্রিট থেকে এতো লোক বের হয়ে আসতো না। সবাই এই কাজটা করতে পারলে পন্ডিতরা এটা নিয়ে এতো মাথা ঘামাতেন না। তরুণ যারা আসছে, তাদের বলবো একটু লেখাপড়া করে আসো। অনেক ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে, বই পুস্তক রয়েছে। তাই একটু পড়াশোনা করে আসা উচিত।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের মূল সমস্যা হচ্ছে ভালো শেয়ারের অভাব। ভালো শেয়ার তালিকাভুক্ত করতে না পারলে বাজারকে বেশি দূরে নেওয়া যাবে না। এর জন্য অর্থমন্ত্রণালয়ের সহায়তা প্রয়োজন। ভালো শেয়ার আনতে গেলে তাদের কিছু প্রণোদনা দিতে হবে। এই প্রণোদনা সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন দিতে পারবে না। এটা দিতে গেলে অর্থমন্ত্রণালয়ের সহায়তা লাগবে। অর্থমন্ত্রণালয় চোখ বুজে থাকলে, সিরিয়াস কোনো পদক্ষেপ না নিলে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন কিছু করতে পারবে না। বাংলাদেশে অনেক ভালো কোম্পানি আছে যেগুলো শেয়ারবাজারে আসেনি। শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি না আসলে মানুষ ক্রয় করবে কী? দেশ থেকে অনেক বিদেশি কোম্পানি চলে যাচ্ছে কিন্তু এগুলো নিয়ে গণমাধ্যমে তেমন আলোচনা হয় না। এসব বিষয়ে ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম করা প্রয়োজন। ইনসেপ্টা, হেলথকেয়ার, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল, নেসলে কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসার জন্য অর্থমন্ত্রী কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কিনা জানতে চাওয়া প্রয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন :