মিলটন আনোয়ার: বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করা ওই চ্যানেলগুলোর এ দেশীয় পরিবেশক ও কেবল অপারেটরদের বদমাইশির চ‚ড়ান্ত প্রকাশ। বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর দাবি বিদেশি বিজ্ঞাপনবিহীন বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার করা। কিন্তু কেবল অপারেটর ও চ্যানেলগুলোর এ দেশীয় এজেন্টরা সেটি করবেন না। বিদেশি চ্যানেলে যে পরিমাণ বিজ্ঞাপন প্রচার হয় টাকার মূল্যমানে তা কয়েক হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এর থেকে পাওনা কর বাবদ সরকারের প্রাপ্তি শূন্য।
দ্বিতীয়ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করে বলে এখন আর এই দেশের চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন দেয় না। গেলো কবছরে দেশি চ্যানেলে বহুজাতিক কোম্পানির বিজ্ঞাপন কমেছে অর্ধেকেরও বেশি। শুধু তাই নয় বিদেশি কোম্পানিগুলো এখন আর এদেশের শিল্পীদের দিয়ে বিজ্ঞাপনও বানায় না। কারিনা-দীপিকা দিয়ে কাজ সারে। আমাদের লাক্স সুন্দরী গতজন্মের বিষয় হয়ে গিয়েছে। বিনোদন দুনিয়ার জ্বালানি বিজ্ঞাপন, সেটিতে ক্রমেই টানাটানি বাড়ছে। আর এটাও জানা ভালো আমাদের দেশের চ্যানেলগুলো দেখার জন্য দর্শক কার্যত একটি পয়সাও খরচ করে না। কিন্তু স্টার প্লাস দেখার জন্য পয়সা দেয়।
ফলে বিজ্ঞাপন ছাড়া এই দেশের চ্যানেলের কোনো আয় নেই। যারা চ্যানেলগুলোকে ‘গদিমিডিয়া’ বলে টিপ্পনী কাটেন তারাও এদেশীয় চ্যানেল দেখার জন্য একপয়সাও ব্যয় করেন না। অথচ দেশের চার কোটি গ্রাহক মাসে এক টাকা করে দিলে চ্যানেলগুলো বেঁচে যায়। এ কারণেই বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন বন্ধের দাবি সম্প্রচারকর্মী, এদেশের নির্মাতা ও শিল্পীদের। বদমাশ ক্যাবল অপারেটররা সেটি না করে পুরো চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে। এর সঙ্গে মতপ্রকাশে বাধার কোনো সম্পর্ক নেই। নিজের দেশের গণমাধ্যমের বারোটা বাজিয়ে আকাশ খুলে দেয়ার নীতি থেকে সরে আসা না গেলে এদেশে কোনো টিভি চ্যানেলই টিকবে না। তাছাড়া, এ নিয়ে ১৫ বছর আগেই আইন হয়েছে। এখন কেবল তার প্রয়োগ হচ্ছে। তাই কিছুদিন চ্যানেল বন্ধ রেখে হলেও এর সুরাহা হওয়া জরুরি।
লেখক : গণমাধ্যমকর্মী। সূত্র : বিজেসি
আপনার মতামত লিখুন :