ডেস্ক নিউজ: দুই গ্রামের একটি কবরস্থান। এক গ্রামের মানুষ ১০ শতক বেশি জমি দিয়েছে, অন্য গ্রাম কম এ নিয়েই বিরোধ। সেই বিরোধের জেরে কবরস্থানে তালা ঝোলানোর নির্দেশ দেন কবরস্থান কমিটির সভাপতি। এমন অবস্থায় মারা যাওয়া নবজাতককে কবর দিতে এসে বিপাকে পড়েন এক বাবা। শেষ পর্যন্ত জরুরি জাতীয় সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় দাফন সম্পন্ন হয়। প্রথম আলো
গতকাল রোববার রাতে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভেড়ামারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কবরস্থান কমিটির সভাপতি ও ভেড়ামারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সামাদ খাঁর বিরুদ্ধে কবরস্থানে তালা দিয়ে নবজাতকের দাফন বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় লোকজন জানায় ইউনিয়নের ভেড়ামারা ও চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের মরদেহ দাফনের জন্য ভেড়ামারা গ্রামে যৌথ একটি কবরস্থান রয়েছে। কবরস্থানটিতে চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা ১০ শতক জমি কম দেওয়ায় দুই গ্রামের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই গতকাল সন্ধ্যায় চরপাড়া গ্রামের মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির নবজাতকের মৃত্যু হয়। মনিরুল ইসলাম ও গ্রামের বাসিন্দারা গতকাল রাতে কবরস্থানে শিশুটিকে দাফন করতে গিয়ে তালাবদ্ধ পান।
পরে তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন কবরস্থান কমিটির সভাপতি আবদুস সামাদ খাঁর নির্দেশে তালা দেওয়া হয়েছে। জমির বিরোধ মীমাংসা না হলে চরপাড়া গ্রামের কাউকে এই কবরস্থানে কবর দিতে দেওয়া হবে না। এতে নবজাতকের দাফন নিয়ে বিপাকে পড়েন চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। পরে তাঁরা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতায় কবরস্থানের তালা খুলে নবজাতকটির দাফন সম্পন্ন করেন।
জানতে চাইলে কবরস্থান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সামাদ খাঁ বলেন, কবরস্থানের সঙ্গে একটি এতিমখানা রয়েছে। সেখানে ১০ শতক জমি নিয়ে চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে ভেড়ামারা গ্রামের বাসিন্দাদের বিরোধ রয়েছে। তাই গ্রামবাসীর অভিযোগেই দাফনে বাধা দেওয়া হয়েছিল। থানা–পুলিশের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সাময়িকভাবে সমাধান হয়েছে। জমির সমস্যা সমাধান হলে স্থায়ী সমাধান হবে।
ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক বলেন, যত দূর শুনেছেন জমির বিরোধ নিয়ে ভেড়ামারা গ্রামের উচ্ছৃঙ্খল কিছু যুবক কবরস্থানে তালা দিয়ে দাফনে বাধা দিয়েছিলেন। পরে সমস্যাটির সমাধান হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, গ্রামবাসী ৯৯৯ নম্বরে দেওয়ার পরই তাঁরা বিষয়টি অবগত হন। এরপর তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে নবজাতকের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এমন না হয়, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।