আয়াছ রনি : [২] মুহিবুল্লাহ হত্যায় অংশ নিয়েছিল এমন কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে সন্দেহভাজন হিসেবে তিন দিনে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
[৩] কিন্তু কেন, কারা, কী কারণে মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বের করতে পারেননি গোয়েন্দারা।
[৪] তবে হত্যাকারীরা মুহিবুল্লাহর পূর্বপরিচিত বলে ধারণা করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
[৫] তদন্ত সংশ্নিষ্টরা জানান, মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে কাজ করতেন। এ সময় রোহিঙ্গাদের মধ্যে কয়েকটি গ্রুপের বিভাজন ছিলেন, যারা প্রত্যবাসন বিরোধী হিসেবে পরিচিত তারা হত্যা করতে পারে।
[৬] রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারভিত্তিক সশস্ত্র গ্রুপগুলোর নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তারে পথের কাঁটা ছিলেন মুহিবুল্লাহ। সেই গ্রুপগুলোর কোনো একটি একক বা যৌথভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।
[৭] এছাড়া মাস চারেক আগে ক্যাম্পে প্রত্যাবাসন কমিটি গঠনের পর প্রত্যাবাসনবিরোধীরা মুহিবুল্লাহকে নিশানা করে থাকতে পারে।
[৮] আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডে যারা সরাসরি যুক্ত ছিল তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
[৯] জেলা পুলিশ সুত্র, চার বছরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ১২ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ঘটনা স্থান পেয়েছে পুলিশের তালিকায়। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৭০টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। সর্বশেষ হত্যাকান্ডের শিকারে পরিণত হয়েছেন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ।
[১০] গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, মুহিবুল্লাহ হত্যাকান্ডের নেপথ্যে আরসা নামক উগ্র ও চরমপন্থী সংগঠনটির সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা জড়িত থাকার বিষয় প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে । রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লা হত্যাকান্ডে তদন্ত করতে গিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসতেছে’ বলে মনে করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
[১১] হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাই হাবিবুল্লাহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করে। মামলার বাদী প্রথমে এই হত্যার জন্য মিয়ানমারভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন আরসাকে দায়ী করেন। উখিয়া থানার মামলার এজাহারে হত্যা মামলায় কাউকে আসামি না করলেও কয়েকটি গ্রুপের কথা উল্লেখ করে তিনি ।
[১২] কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, মুহিবুল্লাহ হত্যাকান্ডের পর থেকে ক্যাম্পে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এই হত্যাকান্ডে আরসা এবং কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছিলেন মুহিবুল্লাহর পরিবার। সেটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে আরসার পক্ষ থেকে মুহিবুল্লার পরিবারকে হুমকি দেয়া হয়েছে। তাই মুহিবুল্লাহর পরিবারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
[১৩] ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে। এই হত্যাকান্ড নিয়ে অ্যামেরিকা এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা নিন্দা জানিয়েছে। সম্পাদনা : মাজহারুল ইসলাম