সোহেল রহমান: [২] দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণে চলতি পঞ্জিকা বছরে স্পট মার্কেট থেকে আরও চারটি এলএনজি কার্গো আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এর মধ্যে তিনটি এলএনজি কার্গো আমদানির বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত অনুমোদন পাওয়া গেছে।
[৩] চলতি অক্টোবরের মধ্যেই কার্গো তিনটি আমদানি করা হবে। এ ধারাবাহিকতায় সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘গানভর সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড’ থেকে একটি এলএনজি কার্গো আমদানির প্রস্তাব ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র আগামী বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে।
[৪] জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য দৈনিক ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি প্রয়োজন। এর বিপরীতে দেশে এলএনজি সরবরাহের পরিমাণ হচ্ছে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এমতাবস্থায় গ্যাসের চাহিদা পূরণে চলতি পঞ্জিকা বছরে স্পট মার্কেট থেকে ১৮টি এলএনজি কার্গো আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘পেট্রোবাংলা’।
[৫] এতে মোট আমদানিতব্য এলএনজি’র মোট পরিমাণ দাঁড়াবে ৫ কোটি ৮৫ লাখ ৬৪ হাজার ৫৫৬ এমএমবিটিইউ। ইতোমধ্যে স্পট মার্কেট থেকে ১৪টি কার্গো বা ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৮৫ হাজার ১৬৯ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হয়েছে। অবশিষ্ট চারটি কার্গো থেকে আরো ১ কোটি ২৮ লাখ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে।
[৬] জানা যায়, চলতি আমদানিতব্য কার্গোটিতে মোট এলএনজির পরিমাণ ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ। স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির জন্য চুক্তিবদ্ধ কোম্পানিগুলোর মধ্যে দরপত্র আহবান করা হলে দুটি দরপত্র জমা পড়ে।
[৭] এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘গানভর সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড’-কে মনোনীত করা হয়। প্রতি এমএমবিটিইউ’র দর ৩৬ দশমিক ৯৫ মার্কিন ডলার হিসাবে এ কার্গো আমদানিতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ১২ কোটি ৪১ লাখ ৫২ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। চলতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে এ এলএনজি সরবরাহ করতে হবে।
[৮] সূত্রমতে, দরপত্রে অংশ নেয়া অপর প্রতিষ্ঠানটি ছিল সিঙ্গাপুরের ‘ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড’। এ কোম্পানির প্রস্তাবিত দর ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ৪২ দশমিক ৫৪ মার্কিন ডলার।
[৯] জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশে গ্যাসের চাহিদা পূরণে এলএনজি আমদানির জন্য ‘কাতার গ্যাস’ ও ‘ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল’-এর সঙ্গে সরকারের দুটি দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি রয়েছে এবং প্রতিষ্ঠান দুটি থেকে নিয়মিত এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, বছরের কোনো সময়ে গ্যাসের চাহিদা কমে গেলেও চুক্তি অনুযায়ী গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করতে হয়।
[১০] এমতাবস্থায়, এলএনজি আমদানিকারী দেশগুলো তাদের প্রয়োজনের কম-বেশি ২৫ শতাংশ এলএনজি স্পট মার্কেট থেকে ক্রয় করে থাকে। বাংলাদেশও এ পদ্ধতি অনুসরণ করছে। স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ‘মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ এগ্রিমেন্ট চুক্তি’ সই করেছে।
[১১] এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছেÑ জাপানের ‘মিতসুই অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড’, মেরুবেনি কর্পোরেশন, ওসাকা গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড ও জেরা কোং লিমিটেড; সিঙ্গাপুরের ‘ডায়মন্ড গ্যাস ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড, ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড, ট্রাফিগুরা পিটিই লিমিটেড, উডসাইড এনার্জি ট্রেডিং সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড’; ইতালি’র এনি স্পা;
[১২] এছাড়াও যুক্তরাজ্যের চেনিয়ের মার্কেটিং ইন্টারন্রাশনাল এলএলপি; সুইজারল্যাণ্ডের এওটি ট্রেডিং এজি; মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস এলএনজি লিমিটেড; যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলারেট এনার্জি এলপি এবং দেশিয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অব সামিট কর্পোরেশন লিমিটেড অ্যান্ড সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও