অপূর্ব চৌধুরী: [২] পুরান ঢাকার ধূপখোলায় অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে সরব শিক্ষার্থীরা। মাঠ রক্ষার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। রোববার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জাহিন।
[৩] এসময় তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর একমাত্র খেলার মাঠটিও দখল হওয়ার পথে। আজকের এই পরিস্থিতির পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতাই দায়ী বলে আমরা মনে করি। ১৯৮২ সালে এই মাঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ হলেও এখন পর্যন্ত তা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এবং সুরক্ষার জন্যও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এতদিনেও বরাদ্দকৃত সম্পত্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেটের আওতাভুক্ত করতে না পারার দায় অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ।
[৪] এরপর বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে মাঠ রক্ষা আন্দোলনের আহবায়ক আসাদুজ্জামান রাজুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া সোমা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভলিবল প্রমিলা দলের খেলোয়াড় আনতাজ হেনা আঁখি, ফুটবল দলের খেলোয়াড় গাজি মোঃ শামসুল হুদা, একাউন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ফয়সাল, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী কিশোয়ার সাম্য, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস শাকিল সহ আরো অনেকে।
[৫] এসময় বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ববিদ্যালয় রাখার জন্য হলেও মাঠ পুনরুদ্ধার করতে হবে। মাঠ না থাকলে শিক্ষার্থীরা মাদকের দিকে ঝুঁকবে। যতদিন পর্যন্ত আমরা কেরানীগঞ্জের ক্যাম্পাসে না যাব ততদিন পর্যন্ত আমরা ধূপখোলার মাঠ ব্যবহার করতে চাই।
[৬] এ সময় শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, লুটপাট করার জন্য আপনাদের অনেক জায়গা রয়েছে। মশা মারার ঔষধের টাকাও আপনারা লুটপাট করেন। শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ দখল করে বাণিজ্য করার অশুভ চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। শিক্ষার্থীরা তাদের মাঠের কর্তৃত্ব রক্ষায় সমুচিত জবাব দিবে।
[৭] মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। মিছিলটি পরবর্তীতে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক,লক্ষ্মীবাজার ও কাঠেরপুল হয়ে ধূপখোলা মাঠে প্রবেশ করে। সেখানে সিটি করপোরেশনের চলমান কাজ বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
[৮] শিক্ষার্থীরা ধূপখোলা মাঠে অবস্থানকালে গেন্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাজু মিয়া পরিদর্শনে আসেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা টহলরত অবস্থায় ছিলাম, খবর পেয়ে এখানে আসি। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছে।
[৯] বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য নিজস্ব কোনো মাঠ না থাকায় ধূপখোলা খেলার মাঠটি তিন ভাগ করে এক ভাগ তৎকালীন সরকারি জগন্নাথ কলেজকে ব্যবহার করার জন্য মৌখিকভাবে অনুমতি দেন। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি খেলার মাঠ হিসেবে ধূপখোলা মাঠটিকে ব্যবহার করছে। এই মাঠেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :