আমিরুল ইসলাম : [২] করোনা মহামারির কারণে একদিকে মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে, অনেকে তাদের কর্ম হারিয়েছেন। অন্যদিকে নিত্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়তই বাড়ছে। কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের দামে। একশ্রেণির সুযোগ-সন্ধানী ব্যবসায়ী একটু সুযোগ পেলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। যার কারণে দেশের নি¤œ-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ আরও বেশি দূরবস্থার মধ্যে পড়েছে।
[৩] এই অবস্থায় বাজারে নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য করণীয় কী জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিশেন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফা লাভের প্রবণতা। অক্টোবর মাসে প্রতিবছরই পণ্যদ্রব্যের দাম কিছুটা চওড়া থাকে, বিশেষ করে কাঁচাবাজার। তবে এবার এর সঙ্গে যোগ হয়েছে চিনি, ভোজ্যতেল, মসুরডালসহ প্রায় সব পণ্য, যেগুলো আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার ফলে এমনটা হচ্ছে। আদতে আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুপণ্যের দাম হয়তো বাড়ছে অল্প-স্বল্প। ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা করার প্রবণতা থেকেই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সরকার বেশ কিছু পণ্যের দাম বেধে দিয়েছে- যেমন; চিনি, ভোজ্যতেল। কিন্তু এই দামে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে না।
[৪] এ প্রতিবেদর সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, আমরা যারা ভোক্তা তারা তো না খেয়ে থাকতে পারবো না। ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে ভোক্তারা জিম্মি। সরকার পণ্যদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। কিন্তু মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে শুধু দর বেধে দিয়ে আর বাজার মনিটরিংয়ের নামে কিছু অর্থ জরিমানা করে পণ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয়। তাই সরকারকে এমন উদ্যোগ নিতে হবে, টিসিবির মাধ্যমে হোক বা অন্য কোনো মাধ্যমে হোক, যাতে করে সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হয়। চালের ক্ষেত্রে প্রাইভেট সেক্টরে কর কমিয়ে আমদানি করতে দেওয়ায় চালের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল এবং নি¤œমুখী হয়েছে। অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
[৫] তিনি বলেন, দেশে উৎপাদনের ঘাটতি আছে। চাহিদার চেয়ে কম উৎপাদন হয় বলেই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। উৎপাদন ঘাটতি অবশ্যই পণ্যদ্রব্যের দাম বাড়ার একটি অন্যতম কারণ। দেশে উৎপাদন বাড়ানো একদিনে সম্ভব নয়। সরকার চার বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা করে, সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হতে পারে। উৎপাদন বাড়িয়ে অথবা আমদানি বাড়িয়ে সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। এবং যুক্তিসংগত ন্যায্যমূল্যে এই পণ্য ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :