হাসান মোরশেদ: মানুষের কতো ধরনের ‘প্যারানয়া’ থাকে। ইচ্ছে করে মিথ্যে বলে অন্যদের বিভ্রান্ত/প্রভাবিত করা, নিজে কোনো মিথ্যাকে গভীরভাবে বিশ্বাস করা, নিজের চিন্তা জোর করে অপরের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার মতো অস্বাভাবিক আচরণ মানুষদের। কাজী ইব্রাহিম নামের লোকটা প্রচুর মিথ্যা বলতো। পুলিশ যখন তাকে গ্রেপ্তার করতে গেছে লাইভে সে বলছিলো ভারতীয় ‘র’ এর এজেন্টরা তাকে ঘিরে ফেলেছে। এরকম প্যারানয়েড ছিলেন বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ মওলানা ভাসানী। মুক্তিযুদ্ধের পর রাজশাহী অঞ্চলের মাওবাদীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বীকার না করে সশস্ত্র তৎপরতা চালাতে থাকলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সেখানে চিরুনি অভিযান চালায়।
এই অভিযানের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল শাফায়েত জামিল। কিন্তু ভাসানী তার পত্রিকা ‘হক কথা’য় বিশাল শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপানÑ‘ভারতীয় সৈন্য ছেয়ে গেছে রাজশাহী অঞ্চল’। প্রায় শতভাগ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের তিনি ভাবতেন ভারতীয় সৈনিক। জোর করে ছাত্রদের চুল কেটে দেন যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তিনিও প্যারানয়েড। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ছাত্ররা এই অস্বাভাবিক আচরণ মেনে নিয়েছে, তারা ভুগছে পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে। ধর্মজীবী, রাজনীতিজীবী, শিক্ষক, ছাত্রÑ আপামর জনতার জন্যই মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা একটি জরুরি বিষয়। লেখক ও গবেষক
আপনার মতামত লিখুন :