জাফর ওয়াজেদ: জেনারেল জিয়া হত্যার কথিত অভিযোগে অভিযুক্ত
১২ জন মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারের
মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের দিন।
১৯৮১ সালের ৩০শে মে চট্রগ্রাম সার্কিট হাউজে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমানকে হত্যার কথিত অভিযোগে সামরিক আদালত গোপন ও সংক্ষিপ্ত বিচারের মাধ্যমে যে ১৩ জন সামরিক অফিসারকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করে-তাঁদের মধ্যে ১২ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিল দেশের বিভিন্ন কারাগারে ১৯৮১ সালেরই ২৩ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতের পর ।
মৃত্যু দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ১৩ জনের মধ্যে একজন লেঃ কর্নেল শাহ্ মোহাম্মদ ফজলে হোসেন ঐ দিনের ঘটনায় গুরুতর আহত থাকায়- তিনি পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হওয়ার পর ১৯৮৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মেজর জেনারেল আবদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত সামরিক আদালতের ১৮ কার্য দিবসের বিচার কাজে যে ১৩ জন সামরিক কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছিল,তাঁদের অধিকাংশই ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। চট্রগ্রাম জেলের অভ্যন্তরে স্থাপিত এই সামরিক আদালতে বিচার কাজ শুরু হয় ১৯৮১ সালের ১০ জুলাই এবং শেষ হয় ২৮ জুলাই। দণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয় ১৯৮১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মধ্য রাতের পর।
ফাঁসির মাধ্যমে কার্যকর করা দণ্ডাদেশের সর্ব কনিষ্ঠ অফিসার লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ রফিকুল হাসান খানের বয়স ছিল তখন মাত্র ২৩ বছর!!
।।মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ১৩ সামরিক অফিসার হলেনঃ
১। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মহসীন উদ্দিন আহমেদ
২। কর্ণেল নওয়াজেস উদ্দিন
৩। কর্ণেল এম আবদুর রশীদ
৪। লেঃ কর্ণেল এ ওয়াইএম মাহফুজুর রহমান
৫। লেঃ কর্ণেল এম দেলওয়ার হোসেন
৬। লেঃ কর্ণেলশাহ্ মোহাম্মদ ফজলে হোসেন ( অসুস্থতাজনিত কারণে ১৯৮৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়)
৭। মেজর এ জেড গিয়াসুদ্দিন আহমেদ
৮। মেজর রওশন ইয়াজদানী ভূঁইয়া
৯। মেজর কাজী মমিনুল হক
১০। মেজর এম মজিবুর রহমান
১১। ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার
১২। ক্যাপ্টেন জামিল হক
১৩। লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ রফিকুল হাসান খান৷
১৯৮২ সালের ২৪ শে মার্চ জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করার পর, মেজর জেনারেল আবদুর রহমান ‘ক’ অঞ্চলের (ঢাকা) সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হয়। ৮৩'র শেষ দিকে অথবা ৮৪'র প্রথম ভাগে নারায়নগঞ্জ থেকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন শেষে ঢাকা ফেরার পথে মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয় মেজর জেনারেল আবদুর রহমান। সে যাত্রায় বেঁচে যায়, কিন্তু তাঁর এডিসি তরুণ সামরিক কর্মকর্তা মেজর কামাল ( দৈনিক ইত্তেফাকের তৎকালীন বার্তা সম্পাদক আসাফউদ্দৌলার মেয়ের জামাই) নিহত হয়।
পরবর্তীতে সম্ভবত ৮৫ সালের শেষ দিকে জেনারেল এরশাদ, মেজর জেনারেল আবদুর রহমানের চাকুরী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যাস্ত করে তাকে ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে এবং সেখানে যোগদানের কিছুদিন পর ৮৮/৮৯ সালের কোন একসময়ে ফ্রান্সেই তাঁর রহস্যজনক মৃত্যু হয়,তাঁর মৃত্যুর সঠিক কোন কারণ জানা যায়নি।
সূত্র : ফেসবুক থেকে নেওয়া
আপনার মতামত লিখুন :