শিরোনাম
◈ আবদুল্লাহ জাহাজে খাবার থাকলেও সংকট বিশুদ্ধ পানির ◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র

প্রকাশিত : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৩:৩১ রাত
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৩:৩১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আহসান হাবিব: আমরা এখনো আদিম সমাজের জাদুর ঐতিহ্য থেকে বেরুতে পারিনি

আহসান হাবিব: আমরা এখনো আদিম সমাজের জাদুর ঐতিহ্য থেকে বেরুতে পারিনি। সেই সময়ের যাদুকররা প্রকৃতির শক্তিকে মানুষের কাজে লাগানোর জন্য নানা রকম ছলের আশ্রয় নিতো। তারা প্রকৃতির কাজ করার ধরনকে নকল করতো যাতে তারা যা চাইছে তা হয়, অর্থাৎ প্রকৃতি সেটা তাদের দেয়। যেমন খরার সময় তারা কাঁদতো যেন এই কান্না বৃষ্টি হওয়ার প্রতীক। এমন উদাহরণ অজস্র। এখনো কেউ কাউকে দুঃখ দিলে প্রতিশোধের আশায় প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। বলে- প্রকৃতি এর ঠিক প্রতিশোধ নেবে। কেউ কাউকে ঠকালেও একই কথা বলে। এখানে জাদু থেকে ধর্মেও রূপান্তরিত হয়েছে। কেউ কাউকে আঘাত করলে বলে, আল্লাহ বিচার করবে। আল্লাহ এখানে প্রকৃতির নিয়ন্তা। যাদুকররা প্রকৃতির শক্তির ওপর আস্থা রাখতো, ধর্ম সেখানে রাখে অন্য এক অতিপ্রাকৃত শক্তির ওপর, এখানে আল্লাহ। অর্থাৎ তারা মনে করে যে, যেকোনো অন্যায়ের প্রতিশোধ প্রকৃতি কিংবা তার নিয়ন্ত্রক অদৃশ্য কোনো শক্তি নেবে। কিন্তু প্রকৃতির কী খেয়ে-দেয়ে কাজ যে মানুষের প্রতি মানুষের কোনো অন্যায় কাজের বিচার সে করবে। প্রকৃতি তো বোধহীন, নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় যা করার তা করে। মানুষ যদি তার ওপর কোনো অন্যায় করে, তখন সে প্রতিশোধ নেয়। আসলে সে তার টিকে থাকার প্রয়োজনে যা করার, তা করবে, নিজেকে বদলে নেবে। কিন্তু একজন মানুষ আর একজনকে দুঃখ দিল কিংবা ঠকালো এই বিচার করার দায়িত্ব নেয় না। সে আপন মনে চলে। তবে কেন মানুষ এসবে বিশ্বাস করে?

অনেক ঘটনা মিলে যায়, যদিও এসব কাকতালীয়। যেমন একজন মাছ ব্যবসায়ী পঁচা মাছ দিলো এক আইনজীবীকে। পঁচা মাছ খেয়ে আইনজীবীর পেটের পীড়া হলে আদালতে তিনি কেস ঠুকে দেন। মাছওয়ালাকে তখন একজন আইনজীবী ধরতে হয় এবং তাকে প্রচুর ফি দিতে হয়। এই ফি পঁচা মাছ থেকে পাওয়া মুনাফার চেয়ে কয়েকশ গুণ বেশি। এই ঘটনা থেকে মানুষ তখন বলতে থাকে আল্লাহ ঠিক বিচার করেছে। অথচ আইনজীবী যে মাছওয়ালার কাছ থেকে বেশি বেশি ফি নিয়ে তাকে ঠকালো আপাত সে বিষয়ে কিছু বলে না। এমন উদাহরণ অজস্র। সবথেকে বেশি শুনি প্রেমিক প্রেমিকাদের মুখে। ব্রেকাপ হলেই একজন বলে ‘তুমিও আমার মতো ঠিকই দু:খ পাবে’। পায়ও, কারণ এটাই প্রেমের ধর্ম। এসব প্রকৃতি বা অতিপ্রাকৃত কোনো শক্তি করে না, এসব মানুষের কৃতকর্মের কার্যকারণ ফলাফল। আগেও হতো, এখনো হয়। তবে মানুষ নিজের অক্ষমতা, ধূর্ততা, অনাস্থা এবং সর্বোপরি প্রকৃতিকে না বোঝার ফল হিসেবে এসব যাদু ও ধর্মের আশ্রয় নেয়। মানুষ এখনো আদিম রয়ে গেছে, শুধু তার সামনে সভ্যতা নামের একটি পাতলা রঙিন পর্দা মূলার মতো ঝুলছে, যার নিচে বয়ে চলেছে মূর্খতা ও ধূর্ততার কলাকৌশল। লেখক : ঔপন্যাসিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়