অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: উইকিপিডিয়ার মতেÑ নগদ বাংলাদেশ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ফোন ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবা। এই ডাক বিভাগকে সামনে রেখে ডাক বিভাগের কোনোরূপ মালিকানা ছাড়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া ‘নগদ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এতোদিন সকলের নাকের ডগায় চললো। কেউ কিছু বললো না। সুলায়মান সুখন নামে এক এমবিএ ডিগ্রিধারী ধুমাইয়া এর প্রচার প্রসারে লেগে গেলেন এবং অনেকটা সফলও হলেন। এতোদিন যে তাহলে সরকারের একটি প্রতিষ্ঠানকে মিথ্যা মালিক বানিয়ে ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা লাভ করলো এই টাকাগুলো কার পকেটে গেলো? কারা এর পেছনে? নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, সরকারের অতি কাছের অতি প্রভাবশালী নিশ্চয়ই-এর পেছনের কারিগর যারা সবকিছুকে ধোঁকা দিয়ে টাকা কামিয়ে নিলো। এই পেছনের মানুষ, এবং সুলায়মান সুখনকে ধরা উচিত। তাহলেই সব বের হয়ে আসবে।
তেমনিভাবে কিছুদিন ‘ইভ্যালি’ নামের একটি কোম্পানি ইকমার্স ব্যবসার মাধ্যমে গ্রাহকদের হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটির পেছনেও ছিলো কিছু এমবিএ গ্রাজুয়েট। গ্রাহকদেরকে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন, মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে দেশের সেলিব্রিটিদের ব্যবহার আস্থা অর্জনের চেষ্টা করে বিপুল আশার আলো জ্বালিয়ে দপ করে নিভে গেলো। তেমনি ঘটনা ঘটেছে ই-অরেঞ্জের ক্ষেত্রে। একজন পুলিশ অফিসার কীভাবে এতোদিন ধরে ইকমার্স-এ যুক্ত হয়ে হাজার কোটি টাকা বানিয়ে ফেললো। আবার সে নিজ দেশের সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চলেও যেতে পারলো। ভারতে ধরা না পরলেতো সেও পি কে হালদারের মতো বেগম পাড়ায় চলে যেতে পারতো। অথচ দেশে ১৮ কোটি মানুষের বিশাল মার্কেট। ই-কমার্স সফল হওয়ার পারফেক্ট জায়গা।
শুধু ইকমার্স কেন। সকল ব্যবসার মধ্যেই আমি অসততা দেখি। চারিদিকে কেবল অসৎ আর চোর বাটপার। কোন ভালো কাজ দেখি না। দেখুননা ইভ্যালি, নগদ ইত্যাদি সবকিছুর পেছনেই কিছু এমবিএ। তারা এমবিএ করেই দ্রুত টাকা পয়সার পেছনে ছুটে। বিশ্বজুড়েই একটা মোরাল ডিগ্রেডেশন চলছে।No offence mean but I feel that যেদিন থেকে বিবিএ এবং এমবিএ নামক সাবজেক্ট জনপ্রিয় হতে লাগলো সেইদিন থেকেই এই ডিগ্রেডেশনও শুরু। কেবল লাভ, লোকসান আর ট্রিকস শেখা নিয়ে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে সাবজেক্ট হয় বুঝি না। লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মতামত লিখুন :