রহিদুল খান: [২] চালের দাম নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ কাটতে যাচ্ছে যশোরের মানুষের। বাজার দর স্বাভাবিক রাখতে যশোরে চার লাখ ৬৪ হাজার মেট্রিকটন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নন বাসমতি সিদ্ধ চাল ৪ লাখ ৪৪ হাজার এবং আতপ চাল ২২ হাজার মেট্রিকটন। ইতোমধ্যে যশোরের বাজারে চাল এসেছে ২ হাজার ৫’শ মেট্রিকটন। আমদানির জন্যে এক লাখ ৫৪ হাজার ৫’শ ৫৮ মেট্রিকটনের এলসি খোলা হয়েছে।
[৩] যশোরে গত বোরোর ভরা মৌসুমে হঠাৎ করে চালের মূল্য বৃদ্ধি পায়। অবস্থা স্বাভাবিক করতে ৬২ শতাংশ শুল্কে চাল আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা চাল আমদানিতে তেমন একটা সাড়া দেননি। হাতেগোনা কিছু ব্যবসায়ী ওই সময় চাল আমদানি করেন। এরমধ্যে চালের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
[৪] এ অবস্থায় সরকার চালের বাজার ফের নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মোতাবেক শুল্কের পরিমাণ ২৫ শতাংশ হ্রাস করে। পরিবর্তিত ৩৭ শতাংশ শুল্কে নতুন করে চাল আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নতুন এই শুল্কহারে যশোরের বাজারে চাল আমদানির সুযোগ পেয়েছেন একশ ১২ জন ব্যবসায়ী। ইতিমধ্যে নয়জন ব্যবসায়ী চাল আমদানি করেছেন। যার পরিমাণ দুই হাজার পাঁচশ ৪২ মেট্রিকটন।
[৫] এদের মধ্যে নওয়াপাড়ার মেসার্স সুকান্ত কৃষ্ণ রায় ৬৬ মেট্রিকটন, বেনাপোলের মেসার্স হাজি মোছা করিম এন্ড সন্স তিনশ’ ৪৬ মেট্রিকটন, যশোর শহরের পূর্ববারান্দিপাড়ার মেসার্স মাহবুব আলম ফুড প্রোডাক্ট ৭১ মেট্রিকটন, বেনাপোলের সজল ট্রেডার্স একশ ৩৫ মেট্রিকটন, যশোর শহরের নাজির শংকরপুরের মেসার্স ইমপ্লেক্স ইন্টারন্যাশনাল এক হাজার চারশ চার মেট্রিকটন, ঝিকরগাছার মেসার্স মো. ইসমাইল হোসেন মিলন একশ এক মেট্রিকটন, নাভারণ পুরাতন বাজারের মেসার্স ইসলাম রাইস মিল একশ ৬৯ মেট্রিকটন, ঝিকরগাছার রাজাপট্টির মেসার্স দীন ইসলাম ট্রেডার্স একশ পাঁচ মেট্রিকটন ও শার্শার শিকারপুর বাজারের মেসার্স শামীম এন্টারপ্রাইজ একশ তিন মেট্রিকটন চাল আমদানি করেছেন বলে জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুর রহমান জানিয়েছেন। এই নয়জন ব্যবসায়ী এ পর্যন্ত দুই হাজার পাঁচশ মেট্রিকটন চাল আমদানি করেছেন।
[৬] এলসি খুলেছে আরও ৪৫ জন আমদানিকারক। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, নওয়াপাড়ার দি জাকির এন্টারপ্রাইজ সাতশ মেট্রিকটন, মেসার্স সুকান্ত কৃষ্ণ রায় ১৩ হাজার সাতশ ২৮ মেট্রিকটন, মেসার্স পিন্টু দত্ত এক হাজার দুইশ’ মেট্রিকটন, মেসার্স আরএস ট্রেডিং তিন হাজার একশ মেট্রিকটন, মেসার্স লিটন এন্টারপ্রাইজ ২৪ হাজার মেট্রিকটন, মেসার্স গ্লোবাল এন্টারপ্রাইজ ২৫ হাজার মেট্রিকটন, মেসার্স স্বর্ণা এন্টারপ্রাইজ দুই হাজার মেট্রিকটন, মেসার্স দাশ ট্রেডার্স পাঁচশ মেট্রিকটন ও মেসার্স শান্ত এন্টারপ্রাইজ পাঁচশ মেট্রিকটন চাল আমদানির জন্যে এলসি খুলেছে।
[৭] আমদানিকৃত চাল যশোরের বাজারে যাতে বিক্রি হয় তা তদারকি করতে মাঠে নেমেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। সরকারি এই সংস্থার জেলা বাজার কর্মকর্তা ইতিমধ্যে আমদানিকারকদের চিঠি দেওয়া শুরু করেছেন। চিঠিতে তিনি শুল্কহ্রাসে আমদানি করা চাল কোথায় কার কাছে বিক্রি করা হচ্ছে তার মোবাইল ফোন নম্বরসহ সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
[৮] জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বলেন, আমদানি করা চাল যদি কেউ কালোবাজারে বিক্রি করার চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা: সঞ্চয় বিশ্বাস
আপনার মতামত লিখুন :