বাবুল আক্তার: [২] যশোরের চৌগাছার পাইকারি ও খুচরা বাজারে কমে গেছে আলুর দাম। এতে আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। অনেকে ভাড়া পরিশোধ করার ভয়ে হিমাগারে আলু নিতেই যাচ্ছেন না বলে জানাগেছে।
[৩] এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে ব্যবসায়ীরা ন্যায্য দামে আলু বিক্রির পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হবে। আর এর প্রভাব পড়বে আলু চাষের উপরে।
[৪] গেলো মৌসুমে ব্যবসায়ীদের হিমাগারে আলু রাখতে খরচ হয়েছে প্রতিকেজিতে ১৭ থেকে ১৮ টাকা। কিন্তু এখন সেই আলু হিমাগার থেকে বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকায়। এতে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। এখন ভাড়া পরিশোধের ভয়ে অনেকেই আলু বিক্রি করছেন না। আর এ কারণে আলু পচে যাচ্ছে। হিমাগারে তৈরি করছে নতুন সমস্যা।
[৫] হিমাগারের এক কর্মকর্তা জানান, হিমাগারে রাখা আলু না নেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হিমাগার মালিক পক্ষ। হিমাগার মালিকরা জানান, সামনে আলুর মৌসুম। এখন হিমাগার ফাঁকা না হলে নতুন আলু রাখা সম্ভব হবে না।
[৬] উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস জানান, গেল মৌসুমে উপজেলায় ডাইমন, কাডিনাল ও দেশী জাতের আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২’শ ২৫ হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছিল ৩’শ ৯৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১’শ ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আলুর চাষ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আলুর বাম্পার ফলন হওয়ায় মৌসুমের শুরুতে দাম কম থাকায় চাষি ও ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় আলু কোল্ডস্টোরে রেখেছিলো।
[৭] চৌগাছা ডিভাইন কোল্ডস্টোরের ম্যানেজার এ এস এম হাদিউজ্জামান সাগর জানান, ডিভাইন গ্রুপের ২টি হিমাগারে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭’শ ২২ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৫৪ কেজি) আলু সংরক্ষিত করে। এ পর্যন্ত মজুদ আলুর মাত্র ৩১ হাজার বস্তা আলু বিক্রি হয়েছে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এসব আলু হিমাগার থেকে তুলে নিতে হবে ব্যবসায়ীদের।
[৮] আলু ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম, আমানত আলী, সিরাজুল ইসলামসহ আরো অনেকে জানান, তারা আলু কিনে স্টোরজাত করে দাম বাড়লে বিক্রি করে ব্যাপক লাভবান হয়। কিন্তু এ বছর দাম না থাকায় মহাবিপাকে পড়েছেন তারা।
[৯] মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে চোখে পড়ে আলু বাঁছাই কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিকরা স্টোরের সামনে বসে বেকার সময় পার করছে। এ সময় নারী শ্রমিক রাবেয়া বেগম, সুবিতা রানী, গৌরীবালা জানান, স্টোর থেকে আলু না তুলায় বেকার হয়ে পড়েছে এখানকার শতশত নারী ও পুরুষ শ্রমিক। কাজ না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে এ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের পরিবারগুলো। সম্পাদনা: সঞ্চয় বিশ্বাস