বিপ্লব বিশ্বাস : [২]দীর্ঘ সাড়ে ১৬ বছর পর বাগমারায় মাথাচাড়া দিচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) লাল পতাকার সদস্যরা। পোস্টার সাঁটানোর মাধ্যমে আবারো তারা বাগমারায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

[৩]তবে এ বিষয়ে বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তৎপর রয়েছে। যারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের পোস্টার লাগিয়েছে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান। এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, কথিত সর্বহারারা এমন কর্মকাণ্ড চালালেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তেমন কোনো তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না। ভয়ে মুখ খুলছেন না কেউ। এ সময়ে শান্ত জনপদ বাগমারাকে শান্তির বাগমারা থেকে আবারও অশান্তির বাগমারায় পরিণত করতে চাচ্ছে চরমপন্থি দলের সদস্যরা।

[৪]এলাকাবাসী জানায়, গত ১৫ আগস্ট রাতের কোনো এক সময়ে উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের একতারা বাজারের বিভিন্ন দোকানের দেয়ালে পোস্টারগুলো সাঁটা হয়। দেয়াল ছাড়াও দড়ির সঙ্গে পোস্টার ঝোলানো হয়েছে অনেক এলাকায়। পোস্টারগুলো এলাকাবাসীকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলেছে। কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নন।

[৫] ২০০৪ সালে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় তৎকালীন চার দলীয় জোট বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন মন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর ভাতিজা পাখি ও গামা দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি দলের সদস্যদের হাতে খুন হন।

[৭] সে সময় মন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু তার ভাতিজাদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে চার দলীয় জোটের শীর্ষ সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের হাত করে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চরমপন্থি দমনের নামে রাজশাহী, নওগাঁ ও নাটোর জেলায় শায়খ আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইয়ের নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) সদস্যদের লেলিয়ে দেন।
[৫]চরমপন্থি দমনের নামে তারা তাদের বাহিনীর লোকজন দিয়ে এলাকার নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে। চরমপন্থি দমনের নামে তারা এলাকায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। তারা সর্বহারা নিধনের নামে তৎকালীন বিরোধী দলীয় আ’লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি তাদের হত্যা ও গুম করা শুরু করে।

[৮]এক পর্যায়ে তারা উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি আ’লীগের সভাপতি মকবুল হোসেন মৃধার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে জখম করে। ওই হামলায় অংশগ্রহণকারী জঙ্গি সংগঠনের তিন নেতা জনতার গণধোলাইয়ে নিহত হয়। তবে এবার নিষিদ্ধ ঘোষিত সর্বহারাদের পোস্টার সাঁটানোর পর থেকেই এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা লক্ষ করা যাচ্ছে। যে কোনো সময় আবারও এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।