সুজন কৈরী : [২] খাদ্য, প্রসাধনী পণ্য, ওষুধ, মেডিকেল সামগ্রীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী নকল করে উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রয়ের সাথে জড়িত অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অভিযান চালিয়েছে র্যাব।
[৩] বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত র্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়ন একযোগে এই অভিযান চালায়।
[৪] র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়, কিছু মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্য-ওষুধসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নকল করে মানহীন পণ্য উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রি করছে। ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে সাবান, শ্যাম্পু, বডি লোশনসহ নানা রকম নকল দেশি-বিদেশি প্রসাধনী। এসব প্রসাধনী ব্যবহারে এমন কিছু জটিল রোগ হচ্ছে যার চিকিৎসায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ব্যবহারকারীদের মধ্যে বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি।
[৫] নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত রয়েছে বেশ কিছু চক্র। না জেনে এসব নকল ও ভেজাল ওষুধ গ্রহণের ফলে অনেকেই মৃত্যুসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে রয়েছেন। নকল, ভেজাল ও অবৈধ মেডিক্যাল সামগ্রী, খাদ্যদ্রব্য, ক্যাবল, মবিলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িতরা অতিরিক্ত মুনাফার জন্য সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করছে।
[৬] প্যাকেজিং ও লেভেলিং নিখুত হওয়ার জন্য সাধারণ মানুষ এসব কেনে প্রতারিত হচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। এসব বিষয়ে অনেক ভুক্তভোগী বিভিন্ন সময়ে র্যাবের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি র্যাব অনলাইন মিডিয়া সেল এবং ফেসবুক পেইজে অনেকেই এ সংক্রান্ত নেতিবাচক মন্তব্যসহ অভিযোগ করেছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও সাধারণ মানুষের উদ্বেগের প্রেক্ষিতে র্যাব দেশব্যাপী এসব অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
[৭] এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার র্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়ন সারাদেশব্যাপী একযোগে অভিযান চালায়। অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে যে সকল সরকারি দপ্তর বা কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করা প্রয়োজন তাদের সাথে সমন্বয় করা হয়েছে। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, অন্যান্য সংস্থার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে অবৈধ ও নকল পণ্য উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রয়সহ এমন কার্যক্রমে জড়িত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়।
[৮] দেশব্যাপী পরিচালিত ৫৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৩৯ জন অসাধু ব্যবসায়ীকে ৯৮ লাখ ৮৫ হাজার ৩০০ টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়। তার মধ্যে একজন অসাধু ব্যবসায়ীকে জরিমানাসহ কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
[৯] অভিযানকালে বিপুল পরিমান প্রসাধনী, ওষুধ, মেডিকেল সামগ্রীসহ অন্যান্য নকল ও অবৈধ পণ্য এবং নকল করতে ব্যবহৃত ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্যাদি ধ্বংস করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :