শিরোনাম
◈ অবশেষে মার্কিন সিনেটে সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ পাস ◈ কক্সবাজারে ঈদ স্পেশাল ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল চলাচল বন্ধ ◈ ইউক্রেনকে এবার ব্রিটেননের ৬১৭ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা ◈ থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ◈ জিবুতি উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবিতে ৩৩ জনের মৃত্যু ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ এফডিসিতে মারামারির ঘটনায় ডিপজল-মিশার দুঃখ প্রকাশ ◈ প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ◈ প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাত চেয়ারম্যানসহ ২৬ জন নির্বাচিত ◈ বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত : ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৪:১০ দুপুর
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৯:১১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী: খালেদা জিয়া- তারেক রহমানদের লজ্জাজনক পরিণতির জন্য তারা নিজেরাই দায়ী

দীপক চৌধুরী: গোটাদুনিয়ার রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করলে দেখা যায়, গণমানুষের রাজনীতি আর ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র এক জিনিস নয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, এদেশে প্রকৃত রাজনীতিবিদেরা বাঙালিদের মনের কথা জানতে চান আগে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটি জানতেন। বাঙালিরা কী চায়, তাদের উদ্দেশ্য কী এটা আগে জানার চেষ্টা করতে হবে, এটাই মনে করেন রাজনীতিরা। অথচ দেখলাম, ৭৫-এর আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করতে দেওয়া হয়নি। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজানো যাবে না, টিভি- বেতারে নাম নেওয়া যাবে না এটা কেমন দেশ? বিস্ময়ের সঙ্গে এই প্রশ্নও তুলেছেন বিদেশি সাংবাদিক লেখকরা! কিন্তু লজ্জা থাকলে তো। আজ খালেদা জিয়া- তারেক রহমানের লজ্জাজনক পরিণতি দেখে কেবলই মনে হয়, এটাই ইতিহাসের প্রতিশোধ।

বিএনপিসহ সমমনা কিছু দলের আচার-আচরণ বক্তব্যে মনে হয়, সরকার পতনের আন্দোলন শেষ পর্যায়ে এসে গেছে। অচিরেই সরকার ডুবে যাবে আর ক্ষমতা দখলের পর হাতের কাছে পাওয়া প্রতিপক্ষ দলটির নেতাদের কুপিয়ে মারা হবে, একইসঙ্গে পানিতে চুবিয়ে মারা হবে আওয়ামীপন্থী বুদ্ধিজীবীদের। সম্ভবত দিবাস্বপ্ন দেখছে একশ্রেণির নেতা। কী রকম হাস্যকর! বাস্তবতা যে ভীষণ কঠিন! সবকিছু এতো সহজ নয়। মামির হাতে বানানো মামার বাড়ির মোয়া নাকি? নাকি জেদ করে পুতুল ভেঙ্গে ফেলার মতো শিশুদের ‘পুতুল খেলা’। তোমার পুতুলের সঙ্গে আমার পুতুলের বিয়ে না দিলে ভেঙ্গে ফেলবো। অনেকেই বলে তৃপ্তি পান, এদেশে তো শক্তিশালী বিরোধীদল নেই। থাকলে আওয়ামী লীগ বুঝতে পারতো। অথচ ‘নেই কেনো’ এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলে উঁচুগলার লোকটি চুপ। বিএনপি নামের দলটির জোট রাজনীতি এখন তলানিতে। মাঝেমধ্যে মাঠ গরম করা কথা বলবার চেষ্টা করেন তারা। শুধু এটুকুই, কাগুজে বাঘের হুঙ্কার। শোনা যায়, ভিতরের অবস্থা এতোটাই দুর্বল যা ভাবতেও অবাক লাগে। ২০ দল মিলে জোট হওয়া এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ঘনিষ্টতা রাখার জন্য চেষ্টার ত্রুটি না থাকলেও দুই জোটের শরিক দলগুলোর নেতাদের অনেকেই এখন নাকি বিএনপিকে এড়িয়ে চলছেন। ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার কথাবার্তা শোনার পর মনে হবে, পরশুদিনই এ সরকারের পতন ঘটে যাচ্ছে। এরপর বিএনপির নেতৃত্বাধীন সরকার গঠন হবে আর তারাই দেশটি চালাবে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে উল্টো কথা। মানুষের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ হাসিনা যে পদ্ধতিতে রাজনীতিকে মানুষের দরোজায় নিয়ে গেছেন এতে বিএনপির ভবিষ্যৎ রাতের দুঃস্বপ্নেই পরিণতি হবে। জোটবদ্ধ বড় আন্দোলন কোনোদিনই হবে না- যারা এখন পাখা নেড়ে বাতাস দিচ্ছে বিএনপিকে তারাও চুপ হয়ে যাবেন ভবিষ্যতে। অতীতের দৃশ্যগুলো ভুলবার নয়। সংখ্যালঘু নির্যাতন, লুটপাট আর দুর্নীতি মানুষের অসহ্য হয়ে উঠেছিল। বাণিজ্য আর রাজনীতি এক জিনিস নয়। এটাই আসল সত্য যে, এদেশের রাজনীতিকে কলুষিত, ঘৃণিত ও দলিত করার কৌশলে শ্রেষ্ঠ বিএনপি নিক্ষিপ্ত হয়েছে ইতিহাসের প্রতিশোধে। বিএনপি দলটি দীর্ঘ সময় দেশে ক্ষমতায় থাকলেও গরিব মানুষের জন্য কিছু করে দেওয়ার চিন্তাও করেনি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নিকৃষ্টভাবে দল গঠন করার কীর্তি আছে জিয়াউর রহমান আর স্বৈরাচারী এরশাদের।

অনেকেরই মনে আছে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের কথা। গণভবনের বৈঠকের কথা। গণভবনে বিএনপি জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের চায়ের দাওয়াতের আমন্ত্রণ ছিলো সেদিন। রাজনীতি নিয়ে একথা সে কথার পর সিনিয়র এক বিএনপি নেতা তার গুলশানের বাড়ির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশপূর্বক শেখ হাসিনার ঔদার্য কামনা করেন তখন। আরেক নেতা নিজের দলের নেতাদের মামলা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে নিজের ব্যক্তিগত মামলাগুলোর থেকে রেহাই পেতে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। লজ্জা থাকলে কী এটা হতো! বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতার চরিত্র কী এমন হওয়ার কথা। এটা তো রাজনৈতিক দাবি নয়, ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া! ২০১৮-এর নির্বাচনের আগে বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। সেই ঐক্যফ্রন্টের নাম এখন আর শোনা যায় কী? রাজনীতি করা যদি মানুষের জনকল্যাণের লক্ষ্যে হয় তাহলে প্রথমেই আন্দোলনের ইস্যু করতে গণচাহিদাকে সামনে আনা দরকার। করোনা মহামারির মধ্যে তো বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নিষ্ক্রিয় হয়েই আছে। এ ছাড়া রাজপথের আন্দোলনে বিএনপি, ইসলামী সমমনাদল, ঐক্যজোট পুরোপুরি অনাগ্রহী। রাজপথের আন্দোলন করার জন্য যেরূপ দিকনির্দেশনা ও কর্মী থাকা প্রয়োজন এর ছিটেফোটাও নেই এসব দলে বা সংগঠনে, যা আওয়ামী লীগের আছে। যদিও দেখা যায়, হাইব্রীডের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের ত্যাগী কর্মী-নেতারা মনের দুঃখে বলছেন, ভবিষ্যতে দুঃসময়ে কখনো আর আমরা আন্দোলনে যাবো না। অথচ এটাই বাস্তবতা যে, যদি কখনো কোনো ভুলের কারণে আওয়ামী লীগের দুর্দিন আসে তখন দেখা যাবে এখনকার চরম ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ কর্মীটিই সবার আগে আন্দোলনের মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়বে। অধিকার আদায়ের দাবিতে মাঠ থাকবেন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরাই। তারা মৃত্যুকে ভয় পান না। আমি মাঠের সাংবাদিক বলেই অভিজ্ঞতা থেকে কথাগুলো বলছি। কারণ, এটাই বাস্তবতা।

লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়