শিরোনাম
◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১০ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে ◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির ◈ কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, আইনের শাসনে জীবনযাপন করি: ড. ইউনূস ◈ মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে ঢাকা ফিরছিলেন রফিক, পথে প্রাণ গেল সবার ◈ স্থায়ী জামিন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছি: ড. ইউনূসের আইনজীবী

প্রকাশিত : ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৩:৩৫ রাত
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৩:৩৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: শিক্ষা ও গবেষণাকে সরকার অবজ্ঞা ও অবহেলা করে

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: ‘দীর্ঘতম সময় স্কুল বন্ধ রাখার রেকর্ড বাংলাদেশের’, ‘করোনার টিকা দেওয়ায় এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ কেবল আফগানিস্তানের ওপরে’। ‘এশিয়ার উদ্ভাবনী দেশের তালিকায় তলানিতে বাংলাদেশ’, ‘বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় তলানিতে ঢাকা’, ‘শিক্ষার মানে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশে শিক্ষকদের বেতন দক্ষিণ এশিয়ার সর্বনিম্নে’Ñএটাই হলো বর্তমান বাংলাদেশের চিত্র।

শিক্ষা ও গবেষণাকে বাংলাদেশের সরকারেরা কতোটা অবহেলা ও অবজ্ঞা করে ওপরের শিরোনামগুলো তারই প্রতিফলন। বাংলাদেশে চুরি চামারি দুর্নীতি, ঘুষ অর্থপাচার ইত্যাদি সকল সমস্যার মূলে শিক্ষার মান। এখানে গুরুত্ব না দেওয়ার অর্থই হলো সরকার চায় না দেশটা সভ্য স্বাভাবিক সুন্দর হোক। শিক্ষায় সরকারের বরাদ্দ, শিক্ষায় কাদের মন্ত্রী বানায় এসব দেখলেও স্পষ্ট হয়ে যায় শিক্ষার উন্নতি আমাদের সরকারেরা চায় না। একজন ডাক্তার এবং একজন ব্যারিস্টার হলো শিক্ষামন্ত্রী যাদের শিক্ষাবিদ হিসাবে পরিচিতি শূন্য। তারা যদি জাতি গঠনে শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতেন তাহলে দেশ এমন হতো না।

[২] একজন এমপি বেকার সমস্যার নতুন তত্ত্ব দিয়েছেন। আবার একজন আমলা দেশের ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধের নতুন তত্ত্ব দিয়েছেন। এমপি বলেছেন, চাকরিজীবী ছেলেরা যেন চাকরিজীবী নারীদের এবং চাকরিজীবী নারী চাকরীবী ছেলেদের বিয়ে করতে না পারে এর জন্য আইন করতে আইনমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন। তার বক্তব্য অনুসারে দেশে নাকি ৪ কোটি বেকার আছে এবং তার মডেল মানলে দেশের বেকার সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তাছাড়া গৃহকর্মীদের দ্বারা শিশু নির্যাতন বন্ধে এই আইন সুফল বয়ে আনবে বলে মনে করেন এই আইন প্রণেতা। মাথার মধ্যে কী থাকলে পরে এ ধরনের উদ্ভট আইডিয়া আসে? কী বলবো!
জনগণকেও দোষ দিতে পারছি না। কারণ নিশ্চিত না তিনি জনগণের ভোটে এমপি হয়েছেন কিনা। ওদিকে মন্ত্রিপরিষদ দেশের ঘুষ দুর্নীতি বন্ধের নতুন তত্ত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ধর্মে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, হারাম খেলে নামাজ হবে না। শুধু তাই নয়, হারাম টাকায় কেনা কোনো পোশাক যদি অন্য পোশাক স্পর্শ করে তবে নাপাক হয়ে যাবে। প্রতিদিন আয়নার সামনে দাঁড়ান সারাদিন কী কাজ করলেন।’ এই একবিংশ শতাব্দীতে পরকালের ভয় দেখিয়ে কি সৎ বানানো যাবে? যদি যেতো সারা পৃথিবী এই পথই বেছে নিতো। যারা ঘুষ খায়, দুর্নীতি করে তারা বরং অন্যায়কে আড়াল করার জন্য আরও বেশি করে ধর্মীয় বিধিবিধান পালন করে। এরা এসব ধর্মীয় বিধিবিধান ভালো করেই জানে। এ ধরনের ধর্মীয় নীতিবাক্য ও ফতোয়া দিয়ে কি এই একবিংশ শতাব্দীতে কোনো রাষ্ট্র চলতে পারে?

একজন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মুখে কি এসব কথা মানায়? এসব কথা শুক্রবারের খুতবায় ঠিক আছে। তাহলে বুঝুন দেশ চালানোর দায়িত্ব কেমন মানুষদের হাতে! ওই এমপি এর আগে একবার বলেছিলেন, ধর্ষণের জন্য নারীদের ড্রেসই দায়ী। এই এমপির এমপি হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতাও নেই। তিনি দেশের সংবিধান পড়ে দেখেননি। কে কাকে বিয়ে করবে সেটা আইন দিয়ে ঠিক করা যায় না। এসবই প্রমাণ করে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দুরবস্থা। তারপরেও সরকার শিক্ষায় কোনো মেগা প্রকল্প বা বিশেষ নজর দিচ্ছে না।
লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়