নিপু সৈয়দ নুরুলহুদা, ফেসবুক থেকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ’তালেবান আফগানিস্তানে সভ্য আচরণ করবে, যাতে বিশ্বসম্প্রদায় কাবুলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে।’
পুতিন বলেন, তালেবান যত তাড়াতাড়ি সভ্য মানুষের পরিবারে প্রবেশ করবে, তত সহজে সংযোগ, যোগাযোগ, প্রভাবিতকরণ ও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যাবে।
যাক, শেষ পর্যন্ত মিস্টার পুতিন- অসভ্য জঙ্গি তালেবান সম্পর্কে আশাবাদী হয়েছেন। দেখা যাক- কুকুরের ল্যাজ পুতিনের কথায় সোজা হয় কিনা।
এদিকে ৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন- পশ্চিমাদের নারী অধিকার নিয়ে ’নাক’ না গলানোর আহ্বান জানান। পশ্চিমা সংস্কৃতি তাদের উপর চাপিয়ে না দিতে আহবান জানান।
কিন্তু তালেবান পৃথিবীর অন্যদের প্রতি ’নাক’ গলাবে! গত শুক্রবার ৩ সেপ্টেম্বর তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন বিবিসিকে বলেন, ‘একজন মুসলিম হিসেবে ভারতের কাশ্মীর ও অন্য যেকোনো দেশের মুসলিমদের পক্ষে কথা বলার অধিকার তালেবানের রয়েছে। কাশ্মীরের মুসলিমদের পক্ষে আওয়াজ তুলবে তালেবান।’ এই যে দ্বিচারিতা, অসুস্থ স্ববিরোধী কথা বার্তা ল্যাজে গোবরে অবস্থা- দিন দিন বাড়বে।
একদিকে তারা বলছে, আফগানে নারী অধিকার নিয়ে নাক না গলাতে আবার একই সঙ্গে তারা আফগানিস্তানের সাধারণ জনগণের ব্যক্তিস্বাধীনতায় নাক গলাচ্ছে, হস্তক্ষেপ করছে। মানুষের উপর তাদের অন্ধবিশ্বাস কুপমুন্ডকতা বোরকা হিজাব চাপিয়ে দিয়ে তাদের সংস্কৃতি পরিবর্তন করছে। আফগানি মানুষের অধিকার ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে কথা বললে বলে, আমাদের বিষয়ে ’নাক’ গলাবেন না। আবার অন্য দেশের বিষয়েও সে ইতিমধ্যে ’নাক’ গলাচ্ছে। কে কি বলবে, কে কি পরবে, কি করবে সবই তারা ঠিক করে দিচ্ছে। তারা কাশ্মীরের মুসলিমদের নিয়েও ’নাক’ গলাবে বলেছে। কিন্তু তারা চীনের উইঘুর মুসলিমদের ব্যাপারে ’নাক’ গলানো তো দূরের কথা চীনে যে মুসলমান থাকে সেটাও জানে না। চীনা কমিউনিস্টদের প্রতি জঙ্গি মৌলবাদের অদ্ভূত মধুর ভালবাসা, এমন ভালবাসা একদিন মার্কিনিদের প্রতিও এই জঙ্গিদের ছিলো। নীতিহীনে জঙ্গির খুনির স্বার্থকেন্দ্রীক ভালবাসা বেশিদিন টেকে না। স্বার্থপুরালে একে অন্যকে লাথি মেরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ইতালির একটি সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। তিনি বলেছেন, ‘চীন আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী।’ তারা বিনিয়োগ করতে চায় এবং আমাদের দেশকে পুনর্গঠনে সহায়তা করবে। তিনি আরো বলেছেন, ‘তামার খনিগুলো আবারো সচল করা হবে। আর চীনের মাধ্যমে তা পাঠানো হবে বিশ্ব বাজারে।’ চীনের 'ওয়ান বেল্ট' প্রকল্পকেও সমর্থন দিয়েছে তালেবান। চীনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী মনে করছে তালেবান।
‘এদিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছেন, তালেবানের সঙ্গে সব দেশের যোগাযোগ করা উচিত। তাদের রাস্তা দেখানো দরকার।’ নারী বিদ্বেষি জঙ্গি তালেবান আপনাদের ডুবাবে নাকি আপনারা তালেবানকে ভাসাবেন- তা সময়েই ঠিক করে দেবে!
ধর্মীয় মৌলবাদ হলো, পুঁজিবাদের পদলেহনকারী পরজীবি সম্প্রদায়। এরা পুঁজিবাদের টিস্যু পেপার।পুঁজিবাদই এদের স্রষ্ঠা পুঁজিবাদই এদের রক্ষা কর্তা। মার্কিন সৃষ্ট ও ব্যবহৃত সেই টিস্যু পেপার এখন চীন রাশিয়া ব্যবহার করবে। এই ভাবে দুই পরাশক্তির অসুস্থ প্রতিযোগিতায় মৌলবাদ ধর্মান্ধতা জঙ্গিবাদ আবার প্রাণ পেয়ে গেলো...
এদিকে গতকাল খবরে প্রকাশ, কাবুলের রাস্তায় ট্যাক্সিতে করে যাওয়া নারীদের আটক করছে তালেবানের চেকপোস্টে। তারপর প্রশ্ন করা হয়, একা কেন ঘর থেকে বেরিয়েছেন? আপনার পুরুষ অভিভাবক কোথায়?
কি গাঁড়লের খপ্পরে পড়েছে আফগান সাধারণ মানুষ! সব পরিবারে পুরুষ সদস্য নাও থাকতে পারে, কিংবা পুরুষ সদস্য অসুস্থ হতে পারে, কাজে যেতে পারে- এইভাবে একটা রাষ্ট্র চালাবে জঙ্গিরা?
কাঁধে অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে তালেবান এরকম এক নারীকে বলে, আপনার স্বামীকে ডাকুন। তখন ওই নারী জানান, তার কাছে মোবাইল নেই। এরপর একজন ট্যাক্সি চালককে ওই নারী বলেন, আপনি আমার বাড়ি গিয়ে আমার স্বামীকে এখানে নিয়ে আসুন। সে মোতাবেক ওই নারীর স্বামীকে চেকপোস্টে নিয়ে আসা হয়। তারপর অই নারীকে ছাড়া হয়। আহা তালেবানি ইসলাম নারীকে দিয়েছে ‘অসীম অধিকার ও সন্মান!’
আপনার মতামত লিখুন :