সুজিৎ নন্দী: [২] ঢাকার চারপাশে ৬৫ কিলোমিটার আধুনিক চক্রাকার সড়ক নির্মাণের সম্ভব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সড়ক ভবনে জমা পড়েছে। এরপর যাচাই বাছাই শেষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশনে চ’ড়ান্ত করা হবে।
[৩] প্রকল্প বাস্তবায়নে ১২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ৫৫ দশমিক ৮ মিটার প্রস্থোর অত্যাধুনিক এই সড়কে দ্রুতগতির যান চলাচলের জন্য চারটি লেন থাকবে। দুই পাশে দুটি করে সার্ভিস লেন ছাড়াও মেট্রোরেলের জন্য ১০ মিটার করে জায়গা রাখা হবে।
[৪] সওজ এর ঢাকা ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী শামিম-আল-মামুন বলেন, চক্রাকার সড়কটি বৈদেশিক অর্থায়নে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা আছে। ইতিমধ্যেই এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এটি নিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে।
[৫] সওজ সূত্র জানায়, সড়কটি শুরু হবে আবদুল্লাহপুর থেকে। বিরুলিয়া, গাবতলী, চুনকুটিয়া, পোস্তগোলা, নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া ও শিমরাইল হয়ে ঢাকার ডেমরায় গিয়ে শেষ হবে। ভবিষ্যতে যাতে সড়কটি ধরে মেট্রোরেল করা যায়, সে জন্য ১০ মিটার করে জায়গা রাখা হবে।
[৬] গত বছরের ডিসেম্বরে চক্রাকার সড়ক নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হবার কথা। কিন্তু করোনার কারণে প্রায় ৬ মাসের বেশি পিছিয়ে গেছে। জানা গেছে, দুই পাশে সংযোগের জন্য তৈরি করা হবে ‘টানেল’। প্রকল্পের মোট খরচের অর্ধেকই ব্যয় হবে জমি অধিগ্রহণ করতে।
[৭] প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ৬১ দশমিক ৮ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। চক্রাকার সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৬৫ কিলোমিটার। ঢাকা সার্কুলার রুট, পার্ট-২ নামের প্রকল্পের আওতায় ৪৭ দশমিক ১৫ কিলোমিটার অংশের কাজ করবে সওজ। বাকি অংশ পৃথক তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে সওজ ও সেতু কর্তৃপক্ষ।
[৮] ইতোমধ্যেই জমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।
[৯] জানা যায়, আব্দুল্লাহপুর থেকে বিরুলিয়া-গাবতলী হয়ে বাবুবাজার সেতু পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সড়ককে কেন্দ্র করে নির্মাণ করা হবে এই সড়ক। ঢাকা শহরকে বন্যামুক্ত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্মাণ করা বাঁধের ওপর সড়কটি করা হয়েছে। সড়কটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)।
[১০] এখন বেড়িবাঁধ সড়ক আধুনিক ও চওড়া করে প্রায় ৩০ কিলোমিটার যুক্ত করে চক্রাকার সড়ক নির্মাণের এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে একাধিক সার্ভিস লেন থাকবে। সড়কের পাশ ধীরগতির যানবাহন চলাচল করবে।
[১১] চক্রাকার সড়কটি করা হলে বিপুল মানুষ এর সুবিধা পাবে বলে মনে করছেন সওজের ঢাকা জোনে উদ্ধতন কর্মকর্তারা। তারা জানান, এখন সদরঘাট থেকে মানিকগঞ্জ বা গাজীপুরে যেতে হলে মিরপুর রোড বা বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে যেতে হয়। শহরের ভেতর দিয়ে যাতায়াতে প্রচুর সময় ব্যয় হয়।
[১২] চক্রাকার সড়ক বাস্তবায়িত হলে সদরঘাট থেকে গাজীপুর বা মানিকগঞ্জ যেতে ঢাকা শহরে আর ঢুকতে হবে না। পরিবহন ব্যয়ও কমবে। তা ছাড়া, এই সড়কের আশপাশের এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থাার পরিবর্তন হবে।