বাবুল আক্তার : কঠোর লকডাউনের পরে জীবন যাত্রায় ফিরে এসেছে কিছুটা স্বাভাবিক গতি। ফলে উপজেলার পাইকারি সবজি বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ছিলো অন্যান্য সময়ের তুলনায় চোখে পড়ার মতো। বাজারে সবজির ঘাটতি না থাকলেও এখনো খুব একটা নিয়ন্ত্রণে আসেনি সবজির দাম। সেমাবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা কমলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েনি।
বাজারে পর্যপ্ত সবজি থাকলেও বৃষ্টির কারনে সরবরাহের সমস্যার অজুহাত দেখিয়ে কম দামে কিনছেন পাইকারি ক্রেতারা। অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ক্রেতার সংখ্যা ও চাহিদা বেড়েছে। তারা বলছেন বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম। তাই দাম বেড়ে গেছে। বাজার ঘুরে পাইকারি ও খুচরা বাজারের মূল্যতালিকায় বিস্তর পার্থক্য দেখা গেছে।
পাইকারি বাজারে ঘুরে দেখা যায় প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকায়। প্রতিটি লাউ ১৫ টাকা, মুখি কচু ১৩ টাকা, বরবটি ২০ টাকা, পটল ১৮ টাকা, পেঁপেঁ ৮ টাকা, কলা ১৮ টাকা, পুঁইশাক প্রতি আটি ৮ টাকা, মুলা ২৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫ টাকা, করলা, চিচিঙ্গা,কচুর লতি ২০ টাকা, ওল ৩৫ টাকা, শশা ২৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৭০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, শিম ৯০ টাকা।
অবশ্য পাশের খুচরা বাজারেই প্রতি কেজি মরিচ ১২০ টাকা, পটোল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ও শিম ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কলা ৩৫ টাকা, মুখি কচু ৩০ টাকা, কচুর লতি ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিচ ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ফরিদপুরের পাইকারি ক্রেতা আনন্দ মোহন বলেন, বৃষ্টির কারনে সবজি বহনের সময় পচে নষ্ট হয়। তাছাড়া ফেরিঘাটে জ্যাম হলে সেদিন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় তাদের। যে কারনে ক্ষতি পুশিয়ে নিতে একটু কম দামে কিনতে সবজি কিনছেন তিনি।
একদশক ধরে চৌগাছা বাজারে খুচরা ব্যবসা করেন তারেক হোসেন তিনি বলেন, সবজির ক্রয় মূল্যের সাথে আমাদের আরো খরচ আছে যেমন আড়ৎ খরচ, ঘরভাড়া, লিবার, সবজি বহনের ভ্যানভাড়া, খাজনা ইত্যাদি সবমিলিয়ে খুচরা বাজারে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।
ক্রেতাদের অভিযোগ বাজার দররের তুলনায় বেশি দাম দিয়ে পণ্য কিনতে হচ্ছে তাদের। ক্রেতারা আরো বলেন, বাজার মনিটারিং অব্যবস্থাপনার কারনে যে কৃষক রাত দিন পরিশ্রম করে সবজি উৎপাদন করছেন তিনি বিক্রি করতে গিয়ে ঠকছেন। আর আমরা ভোক্তা একই সবজি বেশি দরে কিনছি। মাঝখানে অন্যকেউ মুনাফা লুটে নিচ্ছেন। বাজার মনিটারিং ব্যবস্থা ভালো হলে এ অস্থার সৃষ্টি হতো না বলে তাদের মন্তব্য।
বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসা চাষী মাঠচাকলা গ্রামের রবিউল, দিঘড়ী গ্রামের কচু চাষী আলা উদ্দীন, আব্দুল খালেক, পটল চাষী জামাল উদ্দীন, বাবলুর রহমান জানান, এবছর তাদের প্রত্যেকের সবজি চাষ করে ক্ষতি হয়েছে। বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের বর্গা চাষী বাবলুর রহমান বলেন, ‘আমি একবিঘা জমিতে পটল চাষ করেছি। এবছর আমার কম পক্ষে ২০ হাজার টাকা লোকসান হবে’।
চৌগাছা বাজার কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী সেলিম রেজা বলেন, ‘সবজির দাম কিছুটা কমতির দিকে। তিনি বলেন পাইকারি ক্রেতা যেদিন কম আসে সেদিন আসে সেদিন সবজির দাম একটু কম হয়। তবে খুচরা বাজারে কী অবস্থা, আমার জানা নেই।’
মুল্যতালিকা টানানোর কথা থাকলেও পাইকারি ও খুচরা বাজারে কোথাও টানানো ছিলোনা মূল্যতালিকা।