আজিজুল ইসলাম: [২] যশোরের বাঘারপাড়ায় এবার আখ চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। অল্প বিনিয়োগে অধিক লাভজনক হওয়ায় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় কৃষক দিন দিন আখ চাষে ঝুঁকছেন। আখ চাষের সঙ্গে অন্যান্য সবজি জাতীয় ফসল বোনার সুযোগ থাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আখ চাষ। পাইকারি বাজারে বা নিজেই খুচরা বিক্রি করে চালায় চাষীদের সংসার।
[৩] উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, সারি সারি লাল-সবুজের চোখ ধাঁধানো আখের জমি। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আখের লম্বা সবুজ পাতায় দুলছে চাষীর ভাগ্য বদলের স্বপ্ন।
[৪] উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে উপজেলায় বিভিন্ন জাতের আখ চাষ হয়েছে ৮৫ হেক্টর জমিতে । গতবারের চেয়ে এবার আখের চাষ বেশি হয়েছে। তাছাড়া ফলনও এবার বেশি।
[৫] উপজেলার মহিরান এলাকার আখ চাষী জিহাদ হোসেন জানান, গত বছর বিবিন্ন রোগে আখ নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। গতবার লোকসান হলেও এবার আখের বাম্পার ফলন হয়েছে তার। এবার ১৩ শতাংশ জমিতে আখ চাষে প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এপর্যন্ত ৭১ হাজার টাকার আখ বিক্রি করেছেন। আখ চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রায় ৫ বছর ধরে চাষ করে যাচ্ছেন সু-মিষ্ট বিভিন্ন জাতের আখ।
[৬] তিনি বলেন, এক ছেলে-এক মেয়ে নিয়ে ছোট্ট সংসার আমার। আখ চাষের সঙ্গে অন্যান্য সবজি বোনা যায়। ফলে আখ চাষে যা খরচ হয় তা আখের জমির ভেতরে আবাদ করা সাথী ফসল বিক্রি করেই খরচ উঠে যায়। কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের পরামর্শ মতে চাষ করায় এবার আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাইকেরি দরে ক্ষেত থেকেই আখ বিক্রি করেন তিনি। আখ বিক্রির বাড়তি আয় দিয়েই পরিবারের আর্থিক সমস্যার সমাধান করে আজ তিনি স্বাবলম্বী।
[৭] উপজেলার নারিকেল বাড়িয়ার পুনিহার এলাকায় আরেক চাষী ফারুক হোসেন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আখের ফলন ভালো। করোনাভাইরাসে লকডাউনে সব কিছু লোকসানের দিকে গেলেও আখ সহজে পচে নষ্ট হয় না। ফলে এবার আখ চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পাবো। পরিবারের আর্থিক চাহিদা মিটিয়ে ভালোভাবে সংসার চালাতে পারবে বলেও জানান তিনি।
[৮] আখ চাষে সফলতা ও ভালো ফলনের জন্য সু-পরামর্শ হিসেবে কৃষি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আঃ করিম বলেন, আখের চারা জমিতে লাগানোর আগে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাক নাশক দিয়ে বীজ শোধন করলে বিভিন্ন প্রকার রোগবালাই কম হয় এবং ওই জমিতে বোরন প্রয়োগ করলে ফলন বাম্পার হবে।
[৯] উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রুহুল আমীন জানান, আখ খুব লাভজনক এবং এবার ফলন খুবই ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুযায়ী আখের লাল পচা এবং মাঝরা পোকা রোগ ছাড়া তেমন কোনো জটিল রোগ নেই। উপজেলার আখ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন উপ-সহকারী কৃষিবিদগন। চাষীদের জন্য সকল প্রকার পরামর্শ ও সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে ।
[১০] তিনি আরো জানান, আখের দাম এবার ভালো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লকডাউন না থাকায় আখ পরিবহনে কোনো বাধা থাকছে না। কাজেই এবছর আখ চাষীরা লাভবান হবেন বলে আশা করছি। সম্পাদনা: হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :